অধ্যায় – ০৫ ( পুষ্টি )

১। পুষ্টি কাকে বলে  ? 

উত্তরঃ   যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় জীব খাদ্যবস্তু গ্রহণ, পরিপাক, পরিশোধন ও আত্তীকরণের মাধ্যমে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন ও শক্তি উৎপাদিত হয় তাকে পুষ্টি বলে। অর্থ্যাৎ খাদ্য উপাদান যে প্রক্রিয়ায় শরীরের তাপ ও শক্তি জোগায়, দেহের গঠন, বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ করে এবং শরীরকে সবল ও রোগমুক্ত রেখে কর্মক্ষম জীবনযাপনে সহয়তা করে তাই হলো পুষ্টি। আমাদের দেহ বিভিন্ন উপাদান থেকে পুষ্টি পেয়ে থাকে ৷ আর এই উপাদান গুলো ৬ টি ৷ যথা:- আমিষ, শর্করা, স্নেহ পদার্থ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি।

পুষ্টির প্রাকৃতিক উৎস
শর্করাঃ চিনি, মধু, গুড়, মিষ্টি ফল, চাল, আটা, ময়দা, আলু, বিভিন্ন প্রকার সবজি ও ফলের আঁশ।

আমিষঃ ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, ডাল, বীচি, তৈলবীজ, বাদাম ইত্যাদি।

স্নেহ বা চর্বিঃ উদ্ভিজ্জ তেল, ঘি, মাখন, মাছ/মাংসের চর্বি বা তেল ইত্যাদি।

২। খাদ্য কাকে বলে ? 

উত্তরঃ যে পদার্থ খেলে আমাদের শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ থাকে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সকল ধরনের কার্যপ্রক্রিয়া সঠিকভাবে চলমান থাকে মূলত সেটাই হচ্ছে খাদ্য।

ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ কাকে বলে ? 

উত্তরঃ ভিটামিন বলতে আমরা খাদ্যের ঐ সব জৈব রাসায়নিক পদার্থকে বুঝি যা খাদ্যে সামান্য পরিমাণে উপস্থিত থাকে। ভিটামিনসমূহ প্রত্যক্ষভাবে দেহ গঠনে অংশগ্রহণ না করলেও এদের অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধিসাধন বা তাপশক্তি উৎপাদন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রিয়াগুলো সুসম্পন্ন হতে পারে না।

 ভিটামিনের প্রকারভেদ : দ্রবণীয়তার গুণ অনুসারে ভিটামিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১. স্নেহ জাতীয় পদার্থে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন- এ, ডি, ই, এবং কে।

২. পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন- ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং সি।
ভিটামিনের উৎস : গাছের সবুজ পাতা, কচি ডগা, হলুদ ও সবুজ বর্ণের সবজি, ফল ও বীজ ইত্যাদি অংশে ভিটামিন থাকে।

কোন খাদ্যে কোন ভিটামিন থাকে  ? 

উত্তরঃ 

ভিটামিন-এচোখ, চুল এবং ত্বকের জন্য খুবই ভালো।

কোন কোন খাবারে আছে : দুধ, গাজর, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, আম, লালশাক, সব রকমের সবুজ শাকসবজি, কড লিভার অয়েল, যকৃত, পালংশাক, রঙিন শাকসবজি, পনির, ডিম, পেঁপে, মটরশুঁটি।

ভিটামিন-বি
হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।

কোন কোন খাবারে আছে : মাছ, যে কোনো রকমের সি ফুড, মাংস, শস্যদানা, ডিম, ডেইরি প্রডাক্ট এবং সবুজ শাকসবজি।

ভিটামিন-সি
শরীরের বিভিন্ন টিস্যু ভালো রাখতে সাহায্য করে। শরীরের রোগ সেরে ওঠার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

কোন কোন খাবারে আছে : কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, টমেটো, কাঁচামরিচ, ফুলকপি, গাজর, পেঁপে, আনারস, আঙুর, আম, জাম, আলু, তরমুজ, কলা, পেঁয়াজ, চেরিফল, পেয়ারা, কিশমিশ, লেটুসপাতা, বেগুন, ডুমুর।

ভিটামিন-ডি
দাঁত ও হাড় গঠনে জরুরি। দাঁত ও হাড় মজবুত করার জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে।

কোন কোন খাবারে আছে : দুধ, মাছ, ডিমের কুসুম, যকৃত।

ভিটামিন-ই
ফুসফুসকে রক্ষা করে এবং শরীরের টিস্যু গঠনে সহায়তা করে। ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী।

৩। ভিটামিনের অভাবজনিত কিছু রোগের নাম লিখুন। 

উত্তরঃ  

ভিটামিন – এ

রোগের নাম – রাতকানা,  জেরোফথালমিয়া । 

ভিটামিন-বি

রোগের নাম – ভিটামিন বি – এর অভাবে বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে । যেমন – বেরিবেরি, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া ইত্যাদি ।

ভিটামিন – সি 

রোগের নাম – ভিটামিন সি (অ্যাসকরবিক এসিড) – এর অভাবে স্কার্ভি রােগ হয়। তাছাড়া এর অভাবে শিশুদের মাড়ি ফুলে যায়, দেহের ওজন হ্রাস পায়, রক্তশূন্যতা হয়, দুর্বল লাগে এবং ক্ষত সারতে ভাঙা হাড় জোড়া লাগতে দেরি হয়।

ভিটামিন – ডি

রোগের নাম – রিকেটস রোগ হয় । 

ভিটামিন – কে

রোগের নাম – ভিটামিন – কে এর। অভাব হলে নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি, হাড়ের দুর্বলতা, হাড়ে খনিজের স্বল্পতা, হৃদরোগ, অস্টিয়োপোরোসিস, দাঁতের ক্ষয়, রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা ইত্যাদি দেখা দেয়।

৪। ভিটামিন – বি কমপ্লেক্স কী ? 

উত্তরঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স হল পুষ্টি উপাদানগুলির একটি গ্রুপ যা কোষের বিপাক এবং লোহিত রক্তকণিকা সংশ্লেষণের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে আটটি বি ভিটামিন রয়েছে:থায়ামিন (B1)
রিবোফ্লাভিন (বিএক্সএনইউএমএক্স)
নিয়াসিন (বিএক্সএনইউএমএক্স)
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বিএক্সএনইউএমএক্স)
পাইরিডক্সিন (বি 6)
বায়োটিন (বি 7)
ফলিক অ্যাসিড (B9)
কোবালামিন (B12)

৫।  উদ্ভিদ ও পানির সম্পর্ক কী ? 

উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজম জীবদেহের ভৌত ভিত্তি, এই প্রোটোপ্লাজমের শতকরা 90 ভাগই পানি। এ কারণেই পানিকে ফ্লুইড অফ লাইফ বলা হয়ে থাকে। পানির পরিমাণ কমে গেলে প্রোটোপ্লাজম সংকুচিত হয়ে মরে পর্যন্ত যেতে পারে। তাছাড়া উদ্ভিদের দেহে যত বিপাকীয় বিক্রিয়া চলে, পানির অভাব হলে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। উদ্ভিদদেহে পানির প্রয়োজনীয় দিকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
(ক) প্রোটোপ্লাজম সজীব রাখতে পানির বিকল্প নেই। একটি সংকুচিত প্রোটোপ্লাজমযুক্ত কোষকে বাঁচাতে চাইলে দেরি না করে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
(খ) প্রস্বেদন ও সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া চালু রাখতে পরিমাণমতো পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার। এজন্যই শুষ্ক মৌসুমে বড় বড় উদ্ভিদেও পানি সেচ দিতে হয়।
(গ) পানি একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্রাবক। বিপাকীয় অনেক বিক্রিয়ায় পানির গুরুত্ব অপরিসীম।
(ঘ) উদ্ভিদের কোষ বৃদ্ধি ও চলনে পানির ভূমিকা রয়েছে।

উদ্ভিদ প্রধানত মূলের মাধ্যমে মাটি থেকে পানি শোষণ করে। উদ্ভিদে 3টি প্রক্রিয়া সম্মিলিতভাবে শোষণ কাজ সম্পাদন করে। প্রক্রিয়া তিনটি হলো: ইমবাইবিশন, ব্যাপন এবং অভিস্রবণ।

ইমবাইবিশন (Imbibition)
এক খণ্ড শুকনা কাঠের এক প্রান্ত পানিতে ডুবালে ঐ কাঠের খণ্ডটি কিছু পানি টেনে নেবে। আমরা জানি, কলয়েড জাতীয় শুকনা বা আধা শুকনা পদার্থ তরল পদার্থ শুষে নেয়, এজন্যই কাঠের খণ্ডটি পানি টেনে নিয়েছে। এ প্রক্রিয়াকে ইমবাইবিশন বলে। সেলুলোজ, স্টার্চ, জিলাটিন— এগুলো হাইড্রোফিলিক (পানিপ্রিয়) পদার্থ। এরা তরল পদার্থের সংস্পর্শে এলে তা শুষে নেয়, আবার তরল পদার্থের অভাবে সংকুচিত হয়ে যায়। কোষপ্রাচীর ও প্রোটোপ্লাজম কলয়েডধর্মী হওয়ায় ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করে স্ফীত হয়ে ওঠে।

ব্যাপন (Diffusion)
যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো দ্রব্যের অণু বেশি ঘনত্বের এলাকা থেকে কম ঘনত্বের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে তাকে ব্যাপন প্রক্রিয়া বলে। একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থের বেশি ঘনত্ববিশিষ্ট দ্রবণ থেকে কম ঘনত্বের দ্রবণের দিকে দ্রাবকের ব্যাপিত হওয়ার প্রচ্ছন্ন ক্ষমতাকে ব্যাপন চাপ বলে। একই বায়ু চাপে কোনো একটি দ্রবণ ও দ্রাবকের ব্যাপন চাপের পার্থক্যকে ব্যাপন চাপ ঘাটতি (Diffusion pressure deficit) বলে। পাতার মেসোফিল টিস্যুতে এই ব্যাপন চাপ ঘাটতির ফলে পানির ঘাটতি আছে এমন কোষ পাশের কোষ থেকে পানি টেনে নেয়। উদ্ভিদের পানি শোষণে ব্যাপনের গুরুত্ব অপরিসীম।

অভিস্রবণ (Osmosis)
যদি দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ যাদের দ্রব এবং দ্রাবক একই, একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা (Selectively permeable membrane) দিয়ে আলাদা করা হয়, তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই দুটি দ্রবণের ঘনত্ব সমান হয়ে যাবে। একই দ্রব এবং দ্রাবকযুক্ত দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা দিয়ে আলাদা করা হলে, দ্রাবক তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয়। দ্রাবকের বৈষম্যভেদ্য পর্দা ভেদ করে তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হওয়াকে অভিস্রবণ প্রক্রিয়া বলা হয়।

৬। পুষ্টিহীনতা কাকে বলে  ? 

উত্তরঃ  দেহের চাহিদা বা প্রয়োজন সাপেক্ষে এক বা একাধিক পুষ্টি উপাদানের সামগ্রিক বা আংশিক অভাবজনিত শারীরিক লক্ষণকে অপুষ্টি বা পুষ্টিহীনতা বলে।

৭। মাইক্রো ও ম্যাক্রো উপাদান সম্পর্কে লিখুন। 

উত্তরঃ  ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা ম্যাক্রো উপাদান (macro-nutrient বা macro-element): উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান বেশি পরিমাণে দরকার হয়, সেগুলোকে ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা ম্যাক্রো উপাদান বলা হয়। ম্যাক্রো উপাদান 10 টি, যথা: নাইট্রোজেন (N), পটাশিয়াম (K), ফসফরাস (P), ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (O), সালফার (S) এবং লৌহ (Fe)।(মনে রাখার উপায়: MgK CaFe for Nice CHOPS)

মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা মাইক্রো উপাদান (micro-nutrient বা micro-element): উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান অত্যন্ত সামান্য পরিমাণে প্রয়োজন হয় তাদেরকে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা মাইক্রো উপাদান বলে। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট 6 টি, যথা: দস্তা বা জিংক (Zn), ম্যাংগানিজ (Mn), মোলিবডেনাম (Mo), বোরন (B), তামা বা কপার (Cu) এবং ক্লোরিন (Cl)।

৮। পুষ্টি উপাদানের অভাবজনিত লক্ষণ লিখুন। 

উত্তরঃ নাইট্রোজেন (N): নাইট্রোজেনের অভাব হলে ক্লোরোফিল সৃষ্টিতে বিঘ্ন ঘটে। ক্লোরোফিলের অভাবে পাতার সবুজ রং হালকা হতে হতে একসময় হলুদ হয়ে যায়। পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে ‘ক্লোরোসিস’ (chlorosis) বলে। লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ বা দস্তার অভাবেও ক্লোরোসিস হতে পারে কেননা এগুলোও ক্লোরোফিল উৎপাদনের সাথে কোনো না কোনোভাবে জড়িত। ক্লোরোসিসে কোষের বৃদ্ধি এবং বিভাজন হ্রাস পায়, তাই উদ্ভিদের বৃদ্ধি কমে যায়।   ফসফরাস (P): ফসফরাসের অভাব হলে পাতা বেগুনি হয়ে যায়। পাতায় মৃত অঞ্চল সৃষ্টি হয় এমনকি পাতা, ফুল ও ফল ঝরে যেতে পারে। উদ্ভিদের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায় এবং উদ্ভিদ খর্বাকার হয়।    

পটাশিয়াম (k): পটাশিয়ামের অভাবে পাতার শীর্ষ এবং কিনারা হলুদ হয় এবং মৃত অঞ্চল সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে পাতার শিরার মধ্যবর্তী স্থানে ক্লোরোসিস হয়ে হলুদবর্ণ ধারণ করে। পাতার কিনারায় পুড়ে যাওয়া সদৃশ বাদামি রং দেখা যায় এবং পাতা কুঁকড়ে আসে। উদ্ভিদের বৃদ্ধি কম হয় এবং শীর্ষ ও পার্শ্ব মুকুল মরে যায়।    

ক্যালসিয়াম (Ca): কোষের সাইটোসলে ক্যালসিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা, মাইটোকন্ড্রিয়া এবং এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামের স্বাভাবিক কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কিত। মাত্রা কমে গেলে মাইটোকন্ড্রিয়ায় অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়া এবং এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামের প্রোটিন ট্রাফিকিং প্রক্রিয়া বিপর্যস্ত হয়। তাই ক্যালসিয়ামের অভাবে উদ্ভিদের বর্ধনশীল শীর্ষ অঞ্চল, বিশেষ করে ফুল ফোটার সময় উদ্ভিদের কাণ্ড শুকিয়ে যায় এবং উদ্ভিদ হঠাৎ নেতিয়ে পড়ে।    

ম্যাগনেসিয়াম (Mg): ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে ক্লোরোফিল সংশ্লেষিত হয় না বলে সবুজ রং হালকা হয়ে যায় এবং সালোকসংশ্লেষণের হার কমে যায়। পাতার শিরাগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে অধিক হারে ক্লোরোসিস হয়।    
লৌহ (Fe): লৌহের অভাবে প্রথমে কচি পাতার রং হালকা হয়ে যায়, তবে পাতার সরু শিরার মধ্যবর্তী স্থানেই প্রথম হালকা হয় এবং ক্লোরোসিস হয়। কখনো কখনো সম্পূর্ণ পাতা বিবর্ণ হয়ে যায়। কাণ্ড দুর্বল এবং ছোট হয়।    

সালফার (S): সালফার উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রোটিন, হরমোন ও ভিটামিনের গাঠনিক উপাদানই শুধু নয়, একই সাথে এটি কোষে পানির সমতা রক্ষা করে। সালফারের অভাবে পাতা হালকা সবুজ হয় এবং পাতায় লাল ও বেগুনি দাগ দেখা যায়। কচি পাতায় বেশি এবং বয়োবৃদ্ধ পাতায় কম ক্লোরোসিস হয়। সালফারের অভাবে মূল, কাণ্ড এবং পাতার শীর্ষ থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে টিস্যু মারা যেতে থাকে, যাকে ডাইব্যাক (dieback) বলে। কাণ্ডের মধ্যপর্ব ছোট হয় বলে গাছ খর্বাকৃতির হয়।    

বোরন (B): বোরন কোষপ্রাচীরের কাঠামোর মধ্যে অবস্থান করে প্রাচীরটিকে তথা কোষটিকে দৃঢ়তা দেয়। বিপাক ক্রিয়ার বিভিন্ন বিক্রিয়ায় এর নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা রয়েছে। তাই বোরনের অভাবে পর্যাপ্ত দৃঢ়তা না পেয়ে এবং বিপাকে গোলযোগ হওয়ার কারণে উদ্ভিদের বর্ধনশীল অগ্রভাগ মরে যায়। কচি পাতার বৃদ্ধি কমে যায় এবং পাতা বিকৃত হয়, কাণ্ড খসখসে হয়ে ফেটে যায়। ফুলের কুঁড়ির জন্ম ব্যাহত হয়।

৯। BMI ও BMR সম্পর্কে লিখুন। 

উত্তরঃ  বিএমআর (BMR) এবং বিএমআই (BMI) (BMR and BMI)বিএমআর (Basal Metabolic Rate) পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় মানবশরীরে ব্যবহৃত শক্তির পরিমাণ নির্দেশ করে।

বিএমআই (Body Mass Index) মানবদেহের গড়ন ও চর্বির একটি সূচক নির্দেশ করে।

বিএমআর মান নির্ণয় (Calculating BMR)
মেয়েদের বিএমআর = 655 + (9.6× ওজন কেজি) + (1.8 × উচ্চতা সে.মি.) – (4.7 × বয়স বছর)

ছেলেদের বিএমআর =( 66 + (13.7 ওজন কেজি) +(5× উচ্চতা সে.মি.) – (6.8 × বয়স বছর))

ধরা যাক একজন নারীর বয়স 33 বছর, উচ্চতা 165 সে.মি. এবং ওজন 94 কেজি।

সুতরাং তার বিএমআর = 655+ (9.6 × 94)+ (1.8 x 165) (4.7 × 33)

= 655+ 902.4 +297 – 155.1

= 1699.3 ক্যালরি

বিএমআই মান নির্ণয় (Calculating BMI)
বিএমআই (BMI) = দেহের ওজন (কেজি)/ দেহের উচ্চতা (মিটার)2

উদাহরণ হিসেবে 125 সেমি (1.25 মিটার) উচ্চতা এবং 50 কেজি ওজনের একজন ব্যক্তির বিএমআই হচ্ছে 32।

জেনে রাখতে হবে


১ ফুট = ১২ ইঞ্চি
১ মিটার = ১০০ সে.মি
১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সে.মি
আবার ১ ইঞ্চি = ০.২৫৪ মিটার

  ১০। ১ ক্যালরি = কত জুল ? 

উত্তরঃ 4.2 জুল । 

Scroll to Top