জীববিজ্ঞান ভাইভা প্রস্তুতি
নিজের সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর
ভাইবা বোর্ডে যে প্রশ্নগুলো প্রায় ই করা হয়
১. আপনার নাম কি ?
উত্তরঃ জব পাঠশালা
২. আপনার নামের অর্থ কী?
উত্তরঃ নিজের নামের অর্থ জেনে নিবেন ।
৩. এই নামের একজন বিখ্যাত ব্যক্তির নাম বলুন ?
উত্তরঃ জেনে নিবেন ।
৪. আপনার জেলার নাম কী ?
উত্তরঃ নিজের জেলার নাম ।
৫. আপনার জেলার পূর্বনাম এবং জেলাটি বিখ্যাত কেন ?
উত্তরঃ জেনে নিবেন ।
৬. আপনার জেলার একজন বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধার নাম বলুন ?
উত্তরঃ জেনে নিবেন ।
৭. আপনার জেলার একজন বিখ্যাতব্যক্তির নাম বলুন ?
উত্তরঃ জেনে নিবেন ।
৮. আপনার বয়স কত ?
উত্তরঃ নিজের বয়স বলবেন ।
৯. আজ কত তারিখ ?
উত্তরঃ ঐ দিনের বাংলা ও আরবি তারিখ জেনে নিবেন ।
১০. আপনি কি কোনো দৈনিকপত্রিকা পড়েন ?
উত্তরঃ জ্বী পড়ি ( সেই পত্রিকার নাম বলবেন )
১১. পত্রিকাটির সম্পাদকের নাম কি ?
উত্তরঃ সম্পাদকের নাম জেনে যাবেন ।
১২. আপনার নিজের সম্পর্কে ইংরেজিতে বলুন?
উত্তর : I am …………( নিজের নাম ) I completed my SSC and HSC from …… ( জায়গার নাম ) then I got myself admitted into ……… ( বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ) in Islamic History and Culture department and completed my Honours and Masters in this Subject. My father is a school teacher and mother is a housewife. We are one brother and one sister and I am the youngest.
১৫. আপনি কেন শিক্ষক হতে চান ?
উত্তরঃ “আমার নতুন কিছু শিখতে ও শেখাতে বেশি ভালো লাগে। আর শিক্ষকতা এমন একটি পেশা, যেখানে ভালো শিক্ষক হতে ও নিজেকে উন্নত করতে চাইলে সবসময় শেখার মাঝেই থাকতে হয়। তাই, আমি শিখতে ও শেখাতে শিক্ষক হতে চাই।”
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
১। আপনার রেজাল্ট এত ভালো কিন্তু বাংলাদেশে এত চাকরি থাকতে এত কম বেতনে কেন শিক্ষকতা পেশা বেছে নিতে চাচ্ছেন ?
উত্তরঃ আমার রেজাল্ট ভালো হওয়া সত্ত্বেও আমি এমন একটি পেশা বেছে নিতে চেয়েছি যেখানে আমি সরাসরি মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারি। শিক্ষকতা এমন একটি পেশা যেখানে শুধু পেশাগত সাফল্য নয়, মানসিক তৃপ্তি এবং দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক পরিবর্তন আনার সুযোগ রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, একটি জাতির উন্নতির জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই, এবং একজন শিক্ষক হিসেবে আমি সেই উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারি।
বাংলাদেশে অন্য পেশাগুলোতে হয়তো আর্থিক লাভ বেশি, কিন্তু শিক্ষকতার মাধ্যমে আমি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলার যে সুযোগ পাব, সেটি আমার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটা শুধুমাত্র একটি চাকরি নয়, বরং আমার মূল্যবোধ এবং জীবনের লক্ষ্য পূরণের একটি মাধ্যম।“
২। NTRCA কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উত্তরঃ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ আইন (২০০৫ সনের ১ নং আইন) ২০০৫ এর মাধ্যমে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রতিষ্ঠা করা হয়।
৩। NTRCA এর পূর্ণরূপ কি?
উত্তরঃ NTRCA এর পূর্ণরূপ হলো Non Government Teachers Registration and Certification Authority (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ)।
৪। NTRCA এর বর্তমান চেয়ারম্যান কে?
উত্তরঃ NTRCA এর বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন মোহাম্মাদ মফিজুর রহমান।
৫। NTRCA এর আবেদনের বয়স কত?
উত্তরঃ আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য।
৬। শিক্ষক নিবন্ধনের মেয়াদ কত বছর ?
উত্তরঃ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) জানিয়েছে, শিক্ষক নিবন্ধন সনদ ইস্যুর তারিখ থেকে তিন বছরের জন্য কার্যকর থাকবে।
অন্তর্বতীকালীন সরকার
১। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার-২০২৪ কোন আইনে গঠন করা হয়?
উত্তরঃ কোনো আইনে না। Doctrine of Necessity এর আলোকে।
২। ডক্ট্রিন অব নেসেসিটি কী?
উত্তরঃ বিপ্লব; অভ্যুত্থান বা সংকটকালীন প্রয়োজনে সরকার গঠন প্রক্রিয়া। যেমন ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে অবৈধ করার কারণে গঠিত পরবর্তী সরকার ও ১৯৯০ সালে এরশাদ পরবর্তী গঠিত সরকার।
৩। কত তারিখে কার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় ?
উত্তরঃ নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট ২০২৪ সাল রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
৪। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টারা কবে শপথ গ্রহণ করেন?
উত্তরঃ ৮ আগস্ট ২০২৪ সালে।
৫। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কবে উপদেষ্টাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করেন?
উত্তরঃ ৯ আগস্ট ২০২৪ সালে।
৬। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কে ?
উত্তরঃ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ।
৭। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয় এর দায়িত্বে যারা আছেন –
আগস্ট – ২০২৪
১। ৩৬ জুলাই বলতে কী বুঝায় ?
উত্তরঃ ৩৬ জুলাই বলতে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টকে নির্দেশ করে। বৈষম্যবিরোধ ছাত্র আন্দোলনকারীরা ‘দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জুলাই মাস গণনার করার কথা জানান। তারা ১ আগস্টকে ৩২ জুলাই হিসেবে গণ্য করতে থাকেন। ৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই) শেখ হাসিনা পদত্যাগের মাধ্যমে আন্দোলনের সফলতাকে আন্দোলনকারীরা ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ এবং এ দিনটিকে ’৩৬ জুলাই’ হিসেবে অভিহিত করে।
২। Gen Z কী ?
Gen Z একটি শব্দ, যা Generation Z-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। ১৯৯৭-২০১২ সাল এর মধ্যে যারা জন্মগ্রহণ করেন তারা এ প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রজন্মের বর্তমান বয়স ১২-২৭ বছর।
৩। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন কবে ?
উত্তরঃ ৫ আগস্ট ২০২৪
৪। বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ((IGP) কে?
উত্তরঃ মোঃ ময়নুল ইসলাম।
৫। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নরের নাম কী? উত্তরঃ আহসান এইচ মনসুর।
৬। আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশের সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিং কত?উত্তরঃ বি প্লাস (B+)
৭। বাংলাদেশের ২৫ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে কাকে নিয়োগ দেওয়া হয় ?
৮। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গঠিত হয় কবে?
উত্তরঃ ১ জুলাই ২০২৪।
৯। দেশে প্রথম স্পোর্টস ইনস্টিটিউট তৈরি করার ঘোষণা দেওয়া হয় কবে?
উত্তরঃ ১৮ আগস্ট ২০২৪।
১০। কোটা আন্দোলনে প্রথম শহিদ কে ?
উত্তরঃ আবু সাইদ । তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ১৬ জুলাই ২০২৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ – ২০২৪
- সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয় – ৩০ অক্টোবর ২০২৪
- স্বাগতিক দেশ – নেপাল
- ভেন্যু – দশরথ রঙ্গশালা ( কাঠমুন্ডু )
- অংশগ্রহণকৃত দল – ৭ টি
- নেপালকে ২ – ১ গোলে হারিয়ে এটি বাংলাদেশের ২য় বার শিরোপা জয় ।
- চ্যাম্পিয়ন: বাংলাদেশ (দ্বিতীয় শিরোপা)
- রানার্স-আপ: নেপাল (দ্বিতীয়বার রানার্স-আপ)
- ফেয়ার প্লে ট্রফি: ভুটান
- টুর্নামেন্ট সেরা : ঋতুপর্ণা চাকমা (বাংলাদেশ)
- সেরা গোলরক্ষক: রুপনা চাকমা (বাংলাদেশ)
- সর্বোচ্চ গোলদাতা: দেকি লাজোম (ভুটান, ৮ গোল)
ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
জন্ম | ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২৮ জুন, ১৯৪০ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। |
পিতা – মাতা | পিতার নাম হাজী দুলা মিয়া সওদাগর যিনি পেশায় একজন জহুরি ছিলেন এবং মাতার নাম সুফিয়া খাতুন। |
পারিবারিক জীবন | দুই ভাই ও নয় বোনের মধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছিলেন তৃতীয়। মুহাম্মদ ইউনূসের ভাই মুহাম্মদ ইব্রাহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং ছোট ভাই মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর একজন জনপ্রিয় টিভি ব্যক্তিত্ব। মুহাম্মদ ইউনূসের সহধর্মিনীর নাম ড. আফরোজী ইউনুস। দুই কন্যার জনক মুহাম্মদ ইউনূস এর এক মেয়ের নাম মনিকা ইউনূস এবং অন্য জনের নাম দীনা আফরোজ ইউনূস। |
শিক্ষা জীবন | ক) শিক্ষা জীবনের শুরুতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার গ্রামের মহাজন ফকিরের স্কুল নামে একটি বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। খ) ১৯৪৪ সালে তার পরিবার চট্টগ্রাম শহরে চলে আসায় তিনি গ্রামের স্কুল থেকে লামাবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। গ) মাধ্যমিক পর্যায়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ৩৯ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৬ তম স্থান অধিকার করেন। ঘ) ১৯৫৭ সালে মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিএ এবং এমএ সম্পন্ন করেন। |
পেশা | অর্থনীতিবিদ ও উদ্যোক্তা । |
কর্মজীবন
১৯৫৭ সাল | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিএ এবং এমএ সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ব্যুরো অব ইকোনমিক্স-এ যোগ দেন গবেষণা সহকারী হিসাবে যোগদান করেন। |
১৯৬২ সাল | চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। |
১৯৬৫ সাল | ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং পূর্ণ বৃত্তি নিয়ে ভেন্ডারবিন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি লাভ করেন । |
১৯৭১ সাল | বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষে বিদেশে জনমত গড়ে তোলা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা প্রদানের জন্য সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন। |
১৯৭২ সাল | দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। |
১৯৭৫ সাল | অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন |
গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা | ১৯৭৬ সালে ‘গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প’ রূপে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে ‘ক্ষুদ্রঋণ’ নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারনা নিয়ে বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালের ২ অক্টোবর একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক হিসেবে আনুষ্ঠানিক জন্ম হয় গ্রামীণ ব্যাংকের |
নোবেল পুরস্কার | মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন । তিনি শান্তিতে নোবেল জয়ী প্রথম ও একমাত্র বাংলাদেশি (দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয়)। |
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার | ক) ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করা হয় । খ) ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। |
আরও জানুন
১। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষুদ্রঋণের প্রবর্তক । গ্রামীণ ব্যাংকের সূচনাপর্বে চট্টগ্রামের জোবরা গ্রাম থেকে প্রথম ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু হয় এবং প্রথম ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণ করেন গৃহবধূ সুফিয়া বেগম।
২। সামাজিক ব্যবসা (Social Business) ধারণাটির প্রবক্তা ড. মুহাম্মদ ইউনুস । ২০১২ সালে
ইউরোপের দেশ আলবেনিয়ায় তার সামাজিক ব্যবসায় কেন্দ্র স্থাপিত হয়।
৩। ২০০৯ সালের জানুয়ারী মাসে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে ড. মুহাম্মদ ইউনুস সামাজিক ব্যবসার ৭টি মূলনীতি ঘোষণা করেন ।
৪। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল দেয়া হয় ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে। তিনি এই পদক পাওয়া প্রথম বাংলাদেশি ও মুসলিম ।
৫।১৯৮৪ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনুস র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পান। গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের ক্ষমতায়নে তাঁর ক্ষুদ্রঋণ মডেলের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার পান তিনি। ২০২৪ সালে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত ১১তম বিশ্ব বাকু ফোরামে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কোর ‘ট্রি অব পিস’ পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়।
৬।ড. ইউনূস সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা এবং আজাদী পত্রিকায় কলাম লেখার কাজে যুক্ত ছিলেন ।
৭। ২০১৬ রিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষ ধাপে মশাল বহন করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
৮। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে (২০২১ সালে অনুষ্ঠিত) ড. ইউনূসকে লরেল অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয় ।
৯। ২০২৩ সালে ক্রীড়াজগতে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আজীবন কৃতিত্ব ও অর্জনের জন্য ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিটের ( ডাব্লিউএফএস) আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান মুহাম্মদ ইউনূস।
১০। মুহাম্মদ ইউনূসের ‘তিন শূন্য’ খ্যাত শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণকে- ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিকের মূল বার্তা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
জীববিজ্ঞান অধ্যায় ভিত্তিক ভাইভা প্রশ্ন ও উত্তর
১ম অধ্যায় – কোষ, কোষ বিভাগ এবং টিস্যু (Cell, Cell Division and Tissue)
১। প্রাণিবিজ্ঞানের জনক কে ?
উত্তরঃ এরিস্টটল ।
২। উদ্ভিদ বিজ্ঞানের জনক কে ?
উত্তরঃ থিওফ্রাস্টাস ।
৩। বিবর্তনবাদের জনক কে?
উত্তরঃ চার্লস ডারউইন৷
৪। জেনেটিক্সের বা বংশগতিবিদ্যার জনক কে ?
উত্তরঃ গ্রেগর জোহান মেন্ডেল ।
৫। ট্যাক্সোনমির বা শ্রেণিবিন্যাসের জনক কে?
উত্তরঃ ক্যারোলাস লিনিয়াস।
৬। কোষ কাকে বলে ?
উত্তরঃ Jean Brachet (1961) এর মতে – ‘কোষ(Cell) হলো জীবের গঠনগত মৌলিক একক’।
Loewy and Siekevitz (1969) এর মতে – ‘কোষ হলো জৈবিক ক্রিয়াকলাপের একক যা একটি অর্ধভেদ্য ঝিল্লি দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে এবং যা অন্য কোনো সজীব মাধ্যম ছাড়াই আত্ম-জননে সক্ষম’।
De Roberties (1979) এর মতে – ‘কোষ হলো জীবের মৌলিক গঠনগত ও কার্যগত একক।
৬। কোষ কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ শারীরবৃত্তীয় কাজের ভিত্তিতে কোষের প্রকারভেদ –
ক) দেহকোষ ( মাইটোসিস বিভাজন হয় )
খ) জননকোষ ( মায়োসিস বিভাজন হয় )
নিউক্লিয়াসের গঠনের ভিত্তিতে কোষের প্রকারভেদ –
ক) আদিকোষ – উদাহরণ : মাইকোপ্লাজমা, ব্যাকটেরিয়া, ও সায়ানোব্যাকটেরিয়া।
খ) প্রকৃতকোষ – জড় কোষপ্রাচীর বিশিষ্ট প্রকৃত কোষই প্রকৃত উদ্ভিদকোষ। শৈবাল, ছত্রাক, বায়োফাইটস, জিমনোস্পার্মস এবং এনজিওস্পার্মস ইত্যাদি সব উদ্ভিদই প্রকৃত কোষ দিয়ে গঠিত এবং সকল প্রাণিকোষ প্রকৃত কোষ।
৭। উদ্ভিদকোষ ও প্রাণিকোষ কাকে বলে ?
উত্তরঃ
উদ্ভিকোষ : কোষের বাইরে শক্ত সেলুলোজ নির্মিত কোষ প্রাচীর থাকে। পরিণত কোষে কেন্দ্রে বড় কোষ গহ্বর ও সাইটোপ্লাজমে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে। পরিণত কোষের গঠন সাধারণত গোলাকার, ডিম্বাকার হয়ে থাকে। সঞ্চিত খাদ্য শ্বেতসার। সাধারণত সেন্ট্রোসোম থাকে না।
প্রাণিকোষ : এদের কোষে কোষপ্রাচীর থাকে না এবং কোষ গহ্বর অনুপস্থিত, থাকলেও অতি ক্ষুদ্রাকৃতির, ক্লোরোপ্লাস্ট অনুপস্থিত। কোষে সেন্ট্রোসোম থাকে। সঞ্চিত খাদ্য চর্বি ও গ্লাইকোজেন।
৮। কোষ কে আবিষ্কার করেন ?
উত্তরঃ ১৬৬৫ : আদি প্রকৃতির একটি অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে রবার্ট হুক প্রথমে কর্ক কোষ আবিষ্কার করেন।
৯। জাইগোট কাকে বলে ?
উত্তরঃ পুং এবং স্ত্রী জনন কোষের মিলনের ফলে যে কোষ উৎপন্ন হয় তাকে জাইগোট বলে ।
১০। কোষ বিভাজন কাকে বলে ও কত প্রকার ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় জীব কোষের বিভাজনের মাধ্যমে একটি থেকে দুটি বা চারটি কোষের সৃষ্টি হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে।
কোষ বিভাজন ৩ প্রকার। যথা –
ক) অ্যামাইটোসিস
খ) মাইটোসিস
গ) মায়োসিস
১১। অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনকে কেন প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলে?
উত্তরঃ এ ধরনের বিভাজনে মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাই একে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলে।
১২। মাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস একবার বিভাজিত হয়ে সম আকৃতির, সমগুনসম্পন্ন সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয় তাকে মাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে।
১২। মিয়োসিস কোষ বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয় কেন?
উত্তরঃ এ ধরনের কোষ বিভাজনে অপত্য কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা, মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে যায়। ক্রোমোজোম সংখ্যা অর্ধেক হ্রাস পায় বলে মিয়োসিস কোষ বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলে।
১৩। উদ্ভিদের কোষ প্রাচীর কি দিয়ে তৈরী ?
উত্তরঃ সেলোলোজ ।
১৪। ছত্রাকের কোষ প্রাচীর কি দিয়ে নির্মিত?
উত্তরঃ কাইটিন।
১৫৷ নিউক্লিয়াস যে আবিষ্কার করেন ?
উত্তরঃ রবার্ট ব্রাউন(Robert Brown) সর্বপ্রথম ১৮৩১ সালে কোষে নিউক্লিয়াস দেখতে পান এবং এর নামকরণ করেন। তিনিই এটি আবিষ্কার করেন সর্বপ্রথম।
১৬। নিউক্লিয়াস কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজমের সবচেয়ে ঘন, পর্দাঘেরা এবং প্রায় গোলাকার অংশকে নিউক্লিয়াস বলে।
১৭। কোষের শক্তিঘর কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ মাইটোকন্ড্রিয়া ( এখানে শ্বসন ঘটে )
১৮৷ প্রোটিন তৈরির কারখানা কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ রাইবোজোমকে।
১৯। প্লাস্টিড কাকে বলে ও কত প্রকার ?
উত্তরঃ প্লাস্টিড উদ্ভিদকোষের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গাণু। প্লাস্টিডের প্রধান কাজ খাদ্য প্রস্তুত করা, খাদ্য সঞ্চয় করা এবং উদ্ভিদদেহকে বর্ণময় করে পরাগায়নে সাহায্য করা। প্লাস্টিড তিন ধরনের—ক্লোরোপ্লাস্ট, ক্রোমোপ্লাস্ট ও লিউকোপ্লাস্ট। প্লাস্টিড আবিষ্কার করেন আর্নস্ট হেকেল।
২০। ক্রোমোজোম কাকে বলে ?
উত্তরঃ ক্রোমোজোম হলো একটি দীর্ঘ ডিএনএ অণু যাতে একটি জীবের জিনগত উপাদানের একটি অংশ বা সমস্ত অংশ বিদ্যমান থাকে।
মানুষের প্রতিটি কোষে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে, যার মধ্যে ২২ জোড়া স্বয়ংক্রিয় ক্রোমোজোম এবং একটি জোড়া যৌন ক্রোমোজোম থাকে। পুরুষদের যৌন ক্রোমোজোম হল XY এবং মহিলাদের যৌন ক্রোমোজোম হল XX।
২১। নিউক্লিক কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি ?
উত্তরঃ নিউক্লিক এসিড হল নিউক্লিওটাইডের পলিমার। নিউক্লিওটাইড হল একটি জৈব অণু যা তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত: একটি নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষারক, একটি সুগার এবং একটি ফসফেট গ্রুপ। নিউক্লিক এসিডের দুটি প্রধান প্রকার রয়েছে: ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (DNA) এবং রাইবোনিউক্লিক এসিড (RNA)। DNA হল জীবের জিনোমের প্রধান উপাদান, যা কোষের ক্রোমোজোমে পাওয়া যায়। RNA প্রোটিন সংশ্লেষণ এবং অন্যান্য জৈবিক প্রক্রিয়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২২। বংশগতির ধারক ও বাহক কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ ক্রোমোজোম।
২৩। DNA কে মাস্টার মলিকিউল কেন বলা হয়?
উত্তরঃ DNA-অণু জীবকোষের সকল রাসায়নিক বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, তাই DNA অণুকে মাস্টার মলিকিউল (Master molecule)।
২৪৷ ডাবল হেলিক্স মডেল কী ?
উত্তরঃ ১৯৫৩ সালে আমেরিকান বিজ্ঞানী ওয়াটসন (James D. Watson) এবং ইংরেজি বিজ্ঞানী ক্রিক (Francis Crick) DNA অণুর ভৌত গঠনের একটি মডেল বর্ণনা করেন। এ মডেলটি DNA অণুর ডবল ‘হেলিক্স মডেল’ নামে পরিচিত। এ মডেল বর্ণনার সময় বিজ্ঞানী Frederick Wilkins-এর X-ray deffraction চিত্রের সাহায্য নেয়া হয়। DNA অণুর ডবল হেলিক্স মডেল বর্ণনার জন্য ওয়াটসন, ক্রিক ও উইলকিন্স ১৯৬৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান।
২৫। কোষ চক্র কাকে বলে ?
উত্তরঃ একটি বর্ধিষ্ণু কোষের জীবন শুরু হয় মাতৃকোষের বিভাজনের মাধ্যমে এবং শেষও হয় বিভাজিত হয়ে অপত্য কোষ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। কোষের এ বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায় চক্রাকারে সম্পন্ন হয়। কোষ সৃষ্টি, এর বৃদ্ধি এবং পরবর্তীতে বিভাজন- এ তিনটি কাজ যে চক্রের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় তাকে কোষচক্র বলে। Howard & Pelc কোষচক্রের প্রস্তাব করেন।
২৬। সাইটোকাইনেসিস ও ক্যারিওকাইনেসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ সাইটোপ্লাজমের বিভাজনকে সাইটোকাইনেসিস এবং নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস বলে ।
২৭। হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড কাকে বলে ?
কোষের অর্ধেক ক্রোমোজোম সংখ্যার অবস্থাকে হ্যাপ্লয়েড (n) বলে। যখন দুটি হ্যাপ্লয়েড কোষের মিলন ঘটে, তখন সে অবস্থাকে ডিপ্লয়েড (2n) বলে।
২৮। প্রোটোপ্লাজম কাকে বলে ?
উত্তরঃ কোষের ভিতরে যে অর্ধস্বচ্ছ, থকথকে জেলির মতো বস্তু থাকে তাকে প্রোটোপ্লাজম বলে।
২৯। মাইটোকন্ড্রিয়া সম্পর্কে বলুন।
উত্তরঃ এ অঙ্গাণুটি 1898 সালে বেনডা (Benda) অবিষ্কার করেন।এটি দুই স্তরবিশিষ্ট আবরণী ঝিল্লি দিয়ে ঘেরা।
ভিতরের স্তরটি ভিতরের দিকে ভাঁজ হয়ে থাকে। এদের ক্রিস্টি (cristae) বলে।
ক্রিস্টির গায়ে বৃন্তযুক্ত গোলাকার বস্তু থাকে, এদের অক্সিজোম (onliomes) বলে।
অক্সিজোমে উৎসেচকগুলো (enzymes) সাজানো থাকে। মাইটোকন্ড্রিয়নের ভেতরে থাকে ম্যাট্রিক্স (matrix)। জীবের শ্বসনকার্যে সাহায্য করা মাইটোকন্ড্রিয়ার প্রধান কাজ।
৩০। স্নায়ুকোষ বা নিউরন কাকে বলে ?
স্নায়ুতন্ত্রের গঠনমূলক ও কার্যকরী একককে নিউরন বা স্নায়ুকোষ বলে। মস্তিষ্ক কোটি কোটি স্নায়ুকোষ (নিউরন) দিয়ে তৈরি।
৩১। সাইটোপ্লাজম কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজম থেকে নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রিকাটিকে সরিয়ে দিলে যে জেলির মতো বস্তুটি থেকে যায় সেটিই সাইটোপ্লাজম।
৩২। কোষঝিল্লি বা প্লাজমালেমা কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজমের বাইরে দুই স্তরের যে স্থিতিস্থাপক পর্দা থাকে, তাকে কোষঝিল্লি বা প্লাজমালেমা বলে। কোষঝিল্লির ভাঁজকে মাইক্লোভিলাই বলে। এটি প্রধানত লিপিড এবং প্রোটিন দিয়ে তৈরি।
৩৩। উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণিকোষের মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
উত্তরঃ উদ্ভিদ এবং প্রাণী কোষের মূল পার্থক্য হল কোষপ্রাচীর । প্রাণী কোষে কোষপ্রাচীর থাকে না । আর একটি বড় পার্থক্য হল উদ্ভিদ কোষে একটি বড় কোষ গহ্বর থাকে। কিন্তু প্রাণী কোষের গহবরগুলো ছোট ছোট । এছাড়া প্রাণী কোষে গলগি বস্তু ও মাইক্রোভিলাই থাকে যা উদ্ভিদ কোষে থাকে না ।
৩৪। DNA ও RNA এর মধ্যে পার্থক্য লিখুন।
উত্তরঃ DNA ও RNA এর পার্থক্য :১। DNA হল ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড (Deoxy Ribonuclic Acid)। অপরদিকে, RNA হল রাইবো নিউক্লিক এসিড (Ribonucleic acid)।
২। DNA তে ডিঅক্সি রাইবোজ সুগার থাকে। পেন্টোজ সুগারের সাথে ক্ষারক থাকে এডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থায়ামিন ।
অপরদিকে, RNA তে রাইবোজ সুগার থাকে। পেন্টোজ সুগার এর সাথে ক্ষারক থাকে এডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও ইউরাসিল।
৩। DNA এর ক্ষারকগুলো সর্বদাই হাইড্রোজেন বন্ধনী দ্বারা যুক্ত থাকে। অপরদিকে, RNA এর লুপ বা ভাঁজযুক্ত স্থানে ক্ষারকগুলো বন্ধনী দ্বারা যুক্ত; কিন্তু অন্যত্র বন্ধনীহীন।
৪। DNA নিউক্লিয়াসে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে থাকে। এটি ক্রোমোজোমের মূল উপাদান। তবে মাইটোকন্ড্রিয়া ও ক্লোরোপ্লাস্টেও পাওয়া যায়। অপরদিকে, RNA সাইটোপ্লাজমে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে থাকে। এটি রাইবোজোমের মূল উপাদান। তবে ক্রোমোজোমেও পাওয়া যায়।
৩৫। নিউক্লিওটাইড ও নিউক্লিওসাইড এর পার্থক্য লিখুন ।
উত্তরঃ ১. নিউক্লিওটাইড হলো নিউক্লিওসাইড এবং ফসফেট সমন্বয়ে গঠিত এক ধরনের জৈব যৌগ যা নিউক্লিক এসিড পলিমার ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (DNA) ও রাইবোনিউক্লিক এসিড (RNA)-এর মনোমার হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে, নিউক্লিওসাইড হল কিছু গ্লাইকোসিল্যামাইন যা ফসফেট গ্রুপ ছাড়া নিউক্লিওটাইড হিসাবে ভাবা যেতে পারে। একটি নিউক্লিওসাইড কেবল একটি নিউক্লিওবেস এবং একটি পাঁচ-কার্বনযুক্ত শর্করা (রাইবোজ বা ২’-ডিঅক্সিরাইবোজ) নিয়ে গঠিত
২. নিউক্লিওটাইডের রাসায়নিক সংমিশ্রণে একটি ফসফেট গ্রুপ, একটি চিনি এবং একটি নাইট্রোজেনাস বেস থাকে। অন্যদিকে, একটি নিউক্লিওসাইডের একটি রাসায়নিক গঠন রয়েছে যা ফসফেট গ্রুপ ছাড়াই একটি চিনি এবং একটি বেস নিয়ে গঠিত।
৩. নিউক্লিওটাইড আজও ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এজেন্টদের অন্যতম প্রধান কারণ। অন্যদিকে, নিউক্লিওসাইড গুলি ওষুধে এজেন্ট হিসাবে ব্যবহৃত হয় যা প্রাথমিকভাবে ভাইরাস এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়।
৪. নিউক্লিওটাইড ফস্ফেট গ্রুপ একটি অস্থায়ী ফস্ফেট ইয়োন যা অ্যাডেনোসিন ট্রাইফস্ফেট, সাধারণত অস্থায়ী হাইড্রোজেনফস্ফেট (HPO4) বা ফস্ফরিক অ্যাসিড (H3PO4) সংযুক্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে, নিউক্লিওসাইডে কোনো ফস্ফেট গ্রুপ নেই।
৫. নিউক্লিওটাইডের কিছু প্রধান উদাহরণ হল অ্যাডেনোসিন, গুয়ানোসিন ইত্যাদি। অন্যদিকে, নিউক্লিওসাইডের কিছু মূল উদাহরণ শুধুমাত্র ফসফেট গ্রুপের যোগে নিউক্লিওটাইডের মতোই।
৩৬। টিস্যু কাকে বলে ?
উত্তরঃ একই উৎস থেকে সৃষ্ট, একই ধরণের কাজ সম্পন্নকারী, সমধর্মী অবিচ্ছিন্ন কোষগুচ্ছকে টিস্যু বলে।
৩৭। টিস্যু কত প্রকার ও কী কী? ( উদ্ভিদ টিস্যু )
উত্তরঃ টিস্যু দুই প্রকার –
১। ভাজক টিস্যু (Merismatic tissue) : যে কোষগুলো বিভাজিত হয় তা হল ভাজক কোষ, আর ভাজক কোষ দিয়ে গঠিত টিস্যুই ভাজক টিস্যু। ভাজক টিস্যুর অপর নাম মেরিস্টেম।
২। স্থায়ী টিস্যু (Permanent tissue) : যে টিস্যুর কোষগুলো বিভাজনে অক্ষম সে টিস্যুকে স্থায়ী টিস্যু বলে। এ টিস্যুর কোষগুলো পূর্ণভাবে বিকশিত এবং সঠিক আকার-আকৃতি বিশিষ্ট অর্থাৎ এরা আকার-আকৃতি ও বিকাশে স্থায়িত্ব লাভ করেছে, তাই এরা স্থায়ী টিস্যু। বিশেষ অবস্থা ছাড়া এরা আর বিকশিত হতে পারে না। ভাজক টিস্যু হতে কোষের পূর্ণ বিকাশ লাভের পর বিভাজন ক্ষমতা স্থগিত হওয়ার মাধ্যমে স্থায়ী টিস্যুর উদ্ভব হয়।
৩৮। প্রাণী টিস্যু কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ প্রাণিটিস্যুর প্রকারভেদ: প্রাণীটিস্যু তার গঠনকারী কোষের সংখ্যা, বৈশিষ্ট্য এবং তাদের নিঃসৃত পদার্থের বৈশিষ্টের ভিত্তিতে প্রধানত চার ধরণের হয়-
(a) আবরণী টিস্যু
(b) যোজক টিস্যু
(c) পেশি টিস্যু এবং
(d) স্নায়ু টিস্যু।
৩৯। অস্থি ও তরুণাস্থি কী ?
উত্তরঃ কোমলাস্থি (Cartilage): কোমলাস্থি এক ধরনের নমনীয় স্কেলিটাল যোজক টিস্যু। মানুষের নাক ও কানের পিনা কোমলাস্থি দিয়ে তৈরি।
অস্থি: অস্থি বিশেষ ধরনের দৃঢ় ভঙ্গুর এবং অনমনীয় স্কেলিটাল কানেকটিভ টিস্যু। এদের মাতৃকায় ক্যালসিয়াম জাতীয় পদার্থ জমা হয়ে অস্থির দৃঢ়তা প্রদান করে।
৪০। তরল যোজক কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ তরল যোজক টিস্যু দুই ধরনের,
রক্ত এবং
লসিকা।
রক্ত (Blood):
রক্ত এক ধরনের ক্ষারীয়, ঈসৎ লবণাক্ত এবং লালবর্ণের তরল যোজক টিস্যু। ধমনি, শিরা ও কৈশিকনালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রক্ত অভ্যন্তরীণ পরিবহনে অংশ নেয়। উষ্ণ রক্তবাহী প্রাণীর দেহে রক্ত তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে। রক্তের উপাদান দুটি- রক্তরস ও রক্তকণিকা। রক্তরস (Plasma) রক্তের তরল অংশ, এর রং ঈসৎ হলুদাভ। এর প্রায় 91-92% অংশ পানি এবং 8-9% অংশ জৈব ও অজৈব পদার্থ। এসব রক্তরসের বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন এবং বর্জ্য পদার্থ থাকে। রক্তকলিকা তিন ধরনের, যথা- লোহিত রপ্তকণিকা (Erythrocyte বা red blood corpuscles বা RBC), শ্বেত রক্তকণিকা (Leukocyte বা white blood corpuscles WBC) এবং অনুচক্রিকা (Thrombocytes Blood platelet)।
লোহিত রক্তকণিকায় হিমোগ্লোবিন নামে একটি লৌহজাত যৌগ থাকে, যার জন্য রক্ত লাল হয়। হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি অক্সিহিমোগ্লোবিন যৌগ গঠন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে অক্সিজেন পরিবহন করে।
শ্বেত রক্ত কণিকা জীবাণু ধ্বংস করে দেহের প্রকৃতিগত আত্মরক্ষায় অংশ নেয়।
অনুচক্রিকা রক্ত জমাট বাধায় অংশ নেয়।
লসিকা:
মানবদেহে বিভিন্ন টিস্যুর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানে (Intercellular space) যে জলীয় পদার্থ জমা হয় তাকে লসিকা বলে। লসিকা ঈসৎ হলুদ বর্ণের তরল পদার্থ। এর মধ্যে কিছু রোগপ্রতিরোধী কোষ থাকে, এদের লসিকাকোষ (Lymphoid cell) বলে।
৪১। পেশী টিস্যু কাকে বলে ও কত প্রকার ?
ভ্রূণের মেসোডার্ম থেকে তৈরি সংকোচন ও প্রসারণশীল বিশেষ ধরনের টিস্যুকে পেশি টিস্যু বলে। এদের মাতৃকা প্রায় অনুপস্থিত। পেশিকোষগুলো সরু লম্বা এবং তন্তুময়। যেসব তন্তুতে আড়াআড়ি ডোরাকাটা থাকে, তাদের ডোরাকাটা পেশি (Striated muscle) এবং ডোরাবিহীন তন্তুকে মসৃণ পেশি (Smooth muscle) বলে। পেশিকোষ সংকোচন এবং প্রসারণের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ সঞ্চালন, চলন ও অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ঘটায়। অবস্থান গঠন এবং কাজের ভিত্তিতে পেশি টিস্যু তিন ধরনের,
(i) ঐচ্ছিক পেশি
(ii) অনৈচ্ছিক পেশি এবং
(iii) হৃৎপেশি।
অভ্যন্তরীণ পরিবহন ঘটায়। অবস্থান, গঠন এবং কাজের ভিত্তিতে পেশি টিস্যু তিন ধরনের, ঐচ্ছিক পেশি, অনৈচ্ছিক পেশি এবং হৃদপেশি।
(i) ঐচ্ছিক পেশি (Voluntary) বা ডোরাকাটা পেশি (Striated muscle):
এই পেশি প্রাণীর ইচ্ছানুযায়ী সংকুচিত বা প্রসারিত হয়।
ঐচ্ছিক পেশিটিস্যুর কোষগুলো নলাকার, শাখাবিহীন ও আড়াআড়ি ডোরাযুক্ত হয়। এদের সাধারণত একাধিক নিউক্লিয়াস থাকে।
এই পেশি দ্রুত সংকুচিত এবং প্রসারিত হতে পারে। ঐচ্ছিক পেশি অস্থিতন্ত্রে সংলগ্ন থাকে। উদাহরণ: মানুষের হাত এবং পায়ের পেশি।
(ii) অনৈচ্ছিক পেশি (Involuntary muscle) মসৃণ পেশি (Smooth muscle):
এই পেশি টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়।
এ পেশির কোষগুলো মাকু আকৃতির। এদের গায়ে আড়াআড়ি দাগ থাকে না। এজন্য এ পেশিকে মসৃণ পেশি বলে।
মেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্তনালি, পৌষ্টিকনালি ইত্যাদির প্রাচীরে অনৈচ্ছিক পেশি থাকে।
অনৈচ্ছিক পেশি প্রধানত দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ্যাদির সঞ্চালনে অংশ নেয়। যেমন- খাদ্য হজম প্রক্রিয়ায় অন্ত্রের ক্রমসংকোচন।
(iii) কার্ডিয়াক পেশি বা হৃদপেশি (Cardiac muscle):
এ পেশি মেরুদন্ডী প্রাণীদের হৃৎপিন্ডের এক বিশেষ ধরণের অনৈচ্ছিক পেশি। এই টিস্যুর কোষগুলো নলাকৃতির (অনেকটা ঐচ্ছিক পেশির মতো), শাখান্বিত ও আড়াআড়ি দাগযুক্ত। এই টিস্যুর কোষগুলোর মধ্যে ইন্টারক্যালাটেড ডিস্ক (Intercalated disc) থাকে। এদের সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। অর্থাৎ কার্ডিয়াক পেশির গঠন ঐচ্ছিক পেশির মতো হলেও কাজ অনৈচ্ছিক পেশির মত। কার্ডিয়াক পেশির কোষগুলো শাখার মাধ্যমে পরস্পর যুক্ত থাকে। হৃদপিন্ডের সব কার্ডিয়াক পেশি সমন্বিতভাবে সাকুচিত ও প্রসারিত হয়। মানব ভ্রূণ সৃষ্টির একটা বিশেষ পর্যায় থেকে মৃত্যুর পূর্বমূহুর্ত পর্যন্ত হৃদপিন্ডের কার্ডিয়াক পেশি একটা নির্দিষ্ট গতিতে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে দেহের মধ্যে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া সচল রাখে।
২য় অধ্যায় – শ্রেণিবিন্যাস (Taxonomy)
১। শ্রেণিবিন্যাস কাকে বলে ? কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ শ্রেণিবিন্যাস হলো জীবজগতকে তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন দলে বিভাজনের প্রক্রিয়া। এটি সমস্ত জীবকে ধাপে ধাপে সংগঠন করে। জনক হলেন ক্যারোলাস লিনিয়াস।
শ্রেণিবিন্যাস ৩ প্রকার। যথা –
ক) প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস ( বেনথাম ও হুকার এর শ্রেণিবিন্যাস )
খ) কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস ( থিয়োফ্রাস্টাস ও লিনিয়াস )
গ) জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস ( এঙ্গলার ও প্রান্টল)
২। শ্রেণিবিন্যাসের কয়টি ধাপ ?
উত্তরঃ শ্রেণিবিন্যাসের আবশ্যিক ধাপ হচ্ছে ৭টি, যথা ➞ Kingdom (রাজ্য), Phylum (পর্ব), Class (শ্রেণি), Order (বর্গ), Family (গোত্র), Genus (গণ) ও Species (প্রজাতি)
• ট্যাক্সন হচ্ছে শ্রেণিবদ্ধগত একক
• শ্রেণিবিন্যাসের মূল বা ভিত্তি একক হচ্ছে প্রজাতি
• শ্রেণিবিন্যাসের সর্বোচ্চ স্তর হলো পর্ব
• রাজ্য হলো প্রাণী শ্রেনিবিন্যাসের সার্বজনীন স্তর।
৩। ICBN-এর পূর্ণনাম কী?
উত্তরঃ International Code of Botanical Nomenclature. এর নীতিমালা – ৬ টি ।
৪। দ্বিপদ নামকরণ কাকে বলে?
উত্তরঃ দ্বিপদ নামকরণ বলতে বোঝায় দুটি পদের সমন্বয়ে উদ্ভিদ ও প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নামকরণের পদ্ধতি। ১৭৫৮ সালে সুইডিশ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস প্রাণীর দ্বিপদ নামকরণের নীতি প্রবর্তন করেন। এ জন্য তাঁকে দ্বিপদ নামকরণের জনক বলা হয়।
৫। ক্যারোলাস লিনিয়াস সমস্ত উদ্ভিদজগৎকে কয়টি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন ?
উত্তরঃ ২৪ টি।
৬। এঙ্গলার ও প্রান্টল উদ্ভিদজগৎকে কয়টি ভাগে ভাগ করেন ?
উত্তরঃ ১৩ টি ।
৭। মারগুলিস ও হুইটেকার সমস্ত জীবজগৎ মকে কয়টি রাজ্যে ভাগ করেন ?
উত্তরঃ ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে Whittaker একটি Five Kingdom পদ্ধতি প্রস্তাব করেন। তিনি সব কোষীয় জীবকে Monera, Protista, Plantae, Fungi এবং Animalia এ ৫টি কিংডমে ভাগ করেন। তারপর Margulis ১৯৭৪ সালে Whittaker-এর শ্রেণিবিন্যাসকে পরিবর্তিত ও বিস্তারিত করেন। তিনি জীবজগতকে ২টি সুপার কিংডম ও ৫টি কিংডমে ভাগ করেন।
মনেরা ( Monera ) – Bracillus albus, Nostoc Linckia.
প্রোটোকটিস্টা ( Protoctista) – Spirogyra hyalina.
ফানজাই ( Fungi ) – Penicilium notatum, Agaricus.
৮। ট্যাক্সন ও ট্যাক্সা কাকে বলে ?
উত্তরঃ শ্রেণিবিন্যাসের যেকোনো একককে ট্যাক্সন (Taxon), বহুবচনে ট্যাক্সা (Taxa) বলে।
৯। ক্যারোলাস লিনিয়াসের দ্বিপদ নামকরনের উপর একটি বইয়ের নাম বলুন।
উত্তরঃ ১৭৫৩ সালে সর্বপ্রথম তার Species Plantarum বইতে বর্ণিত সকল উদ্ভিদ প্রজাতির জন্য দ্বিপদ নাম প্রদান করেন।
১০। প্রজাতি কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রজাতি বলতে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যে সর্বাধিক মিলসম্পন্ন একদল জীবকে বোঝায় যারা নিজেদের মধ্যে মিলনে উর্বর সন্তান উৎপাদনে সক্ষম কিন্তু অন্য প্রজাতির সাথে মিলনে উর্বর সন্তান উৎপাদনে অক্ষম।
১১। প্রাণিজগৎকে কয়টি পর্বে ভাগ করা হয়েছে ?
উত্তরঃ ৯ টি।
প্রাণিজগতের ৯টি প্রধান পর্ব এবং প্রতিটির উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো:
Porifera (স্পঞ্জ)উদাহরণ: Spongilla, Euplectella
Cnidaria (নিডারিয়া)উদাহরণ: Hydra, Jellyfish, Sea Anemone
Platyhelminthes (প্লাটিহেলমিনথেস)উদাহরণ: Tapeworm, Liver Fluke, Planaria
Nematoda (নেমাটোডা)উদাহরণ: Ascaris, Hookworm, Filaria worm
Annelida (অ্যানেলিডা)উদাহরণ: Earthworm, Leech, Polychaete
Arthropoda (আর্থ্রোপোডা)উদাহরণ: Butterfly, Spider, Crab
Mollusca (মোলাস্কা)উদাহরণ: Snail, Octopus, Clam
Echinodermata (একাইনোডারমাটা)উদাহরণ: Starfish, Sea urchin, Sea cucumber
Chordata (কর্ডাটা)উদাহরণ: Human, Fish, Frog
১২। বৃহত্তম পর্বের নাম বলুন ?
উত্তরঃ আর্থ্রোপোডা।
১৩। কর্ডাটা পর্বের প্রাণীদের ৪ টি বৈশিষ্ট্য বলুন।
উত্তরঃ
১. পরিণত প্রাণীতে নটোকর্ড থাকে না। লার্ভা দশায় কেবল লেজে নটোকর্ড থাকে।
২. পরিণত প্রাণী নিশ্চল এবং স্থায়ীভাবে নিমজ্জিত কোন বস্তুর সঙ্গে আটকানো থাকে, কিন্তু লার্ভা মুক্ত সাঁতারু।
৩. দেহ সেলুলোজ নির্মিত টিউনিক বা টেস্ট নামক আচ্ছাদনে আবৃত।
৪. সকলেই সামুদ্রিক এবং সমুদ্রের তলদেশে একক বা কলোনি গঠন করে বাস করে।
১৪। নন কর্ডেট এর বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তরঃ
১। নন-কর্ডাটাদের জীবনের কোনো পর্যায়ে নটোকর্ড থাকে না।
২। নন-কর্ডাটার ক্ষেত্রে অঙ্কীয়দেশে স্নায়ুরজ্জু অবস্থিত।
৩। নন-কর্ডাটার দেহে ফুলকা থাকলেও ফুলকা রন্ধ্র নেই।
৪। নন-কর্ডাটার ক্ষেত্রে রক্তরসে হিমোগ্লোবিন দ্রবীভূত থাকে।
১৪। পরিফেরা পর্বের বৈশিষ্ট্য লিখুন ।
উত্তরঃ
১. এদের দেহ অরীয় প্রতিসম বা অপ্রতিসম।
২. এদের সারা দেহে অস্টিয়া নামক অসংখ্য ছিদ্র বিদ্যমান।
৩. এদের দেহ চ্যাপ্টা, লম্বা, ফুলদানির ন্যায় অথবা বর্তুল আকারের।
৪. সমগ্র দেহব্যাপী অসংখ্য সূক্ষ্ম নালিকা আছে। এ নালিকার মাধ্যমে পানি ভেতরে যাওয়া- আসা করতে পারে।
১৫। আর্থ্রোপোডার বৈশিষ্ট্য বলুন।
উত্তরঃ আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণীর বৈশিষ্ট্য:
১। দেহ কাইটিন নির্মিত বহিঃকঙ্কাল দিয়ে আবৃত, নির্দিষ্ট সময় পর পর এ কঙ্কাল পরিত্যক্ত হয় ।
২। দেহ খণ্ডায়িত,টাগমাটাইজেসন দেখা যায়। দেহখন্ডক পার্শ্বীয় সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ (Jointed appendages) বিশিষ্ট।
৩৷ এদের দেহকে দুটি সমান অংশে ভাগ করা যায় তাই এরা দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম হয়।
৪। পর্বের প্রাণীদের পৌষ্টিকতন্ত্র সম্পূর্ণ এবং এদের উপাঙ্গ পরিবর্তিত হয়ে মুখোপাঙ্গ গঠিত হয়।
৫। দেহের প্রাণীর সিলোম সংক্ষিপ্ত, অধিকাংশ দেহগহ্বরে রক্তে পূর্ণ যা হিমোসিল (Haemocoel) নামে পরিচিত।
৬। মালপিজিয়ান নালিকা প্রধান রেচন অঙ্গ।
১৬। টটোনিম কাকে বলে ?
উত্তরঃ গন এবং প্রজাতির নাম একই হলে তাকে টটোনিম ( Tautonym) বলে । উদাহরণ – Catla catla, Gorilla gorilla, Naja naja.
১৭। ক্যারোলাস লিনিয়াসকে Father of Taxonomy বলা হয় কেন?
উত্তরঃ সুইডিশ প্রকৃতি বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াসই সর্বপ্রথম পৃথিবীর সকল জীবের দ্বিপদ নাম তথা বৈজ্ঞানিক নামকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং বৈজ্ঞানিক নামকরণ পদ্ধতি প্রবর্তন করেন। এছাড়াও তিনি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জীবের বৈজ্ঞানিক নাম প্রণয়ন করেন। তাই ক্যারোলাস লিনিয়াসকে Father of Taxonomy বলা হয়।
৯ টি পর্বের বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ
১৮। ট্যাগমাটাইজশন কাকে বলে ?
উত্তরঃ Arthropoda পর্বভুক্ত প্রাণীর দেহ বাহ্যিকভাবে খন্ডকায়িত। কিন্তু এর অধিকাংশ খন্ডকগুলাে স্পষ্ট নয়। অস্পষ্ট খন্ডকগুলাে দেহের বিভিন্ন জায়গায় মিলিত হয়ে দেহে কয়েকটি নির্দিষ্ট অঞ্চল গঠন করে। এই গঠনকৃত প্রত্যেকটি অঞ্চলকে ট্যাগমা বলে এবং ট্যাগমা সৃষ্টির মাধ্যমে দেহের অঞ্চলীকরণই হল ট্যাগমাটাইজেশন।
৩য় অধ্যায় – অণুজীব (Microorganisms)
১। অনুজীব কাকে বলে?
উত্তরঃ অণুজীব হল সেই সকল ক্ষুদ্র এককোষী জীব যাদের খালি চোখে দেখা যায় না। এরা প্রাককেন্দ্রিক, সুকেন্দ্রিক উভয় প্রকার হতে পারে। অণুজীব জগৎ তিনটি রাজ্যে বিভক্ত। যথা :ক) এক্যারিওটা বা অকোষীয়
খ) প্রোক্যারিওটা বা আদিকোষী
গ) ইউক্যারিওটা বা প্রকৃত কোষী
২৷ ভাইরাস কাকে বলে ?
উত্তরঃ ভাইরাস (Virus) হলো অতিক্ষুদ্র সংক্রামক কারক যা শুধুমাত্র একটি জীবন্ত কোষের অভ্যন্তরে বংশবৃদ্ধি করতে পারে।
। ভাইরাস নিয়ে গবেষণা ভাইরোলজি নামে পরিচিত যা মাইক্রোবায়োলজির একটি উপশাখা।
৩। ভাইরাসকে কেন অকোষীয় বলা হয়?
উত্তরঃ ভাইরাসের দেহ কোষ প্রাচীর ,প্লাজমালেমা, সুগঠিত নিউক্লিয়াস ,সাইটোপ্লাজম ইত্যাদি কিছুই না থাকার জন্য ভাইরাসকে অকোষীয় জীব বলা হয়। এটি শুধু প্রোটিন আবরণ ও নিউক্লিক এসিড নিয়ে গঠিত। অকোষীয় জীবের ভেতর প্রাথমিক সদস্য হল ভাইরাস।
৪। ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য লিখুন ।
উত্তরঃ ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যগুলোকে দুভাগে ভাগ করা যায়; যথা-জড়-রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য এবং জীব সদৃশ বৈশিষ্ট্যজড়-রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যঃ
১ ভাইরাস অকোষীয়, অতিআণুবীক্ষণিক ও সাইটোপ্লাজমবিহীন রাসায়নিক পদার্থ ।
২. পোষক দেহের বাইরে এরা কোন জৈবনিক কার্যকলাপ ঘটায় না ।
৩. জীবকোষের বাইরে সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে না।
৪. পরিস্রুতত ও কেলাসিত করে ভাইরাসকে স্ফটিকে পরিণত করা যায়।
৫. ভাইরাস আকারে বৃদ্ধি পায় না এবং পরিবেশিক উদ্দীপনায় সাড়া দেয় না ।
৬. এদের নিজস্ব কোন বিপাকীয় এনজাইম নেই।
৭. ভাইরাস রাসায়নিকভাবে প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিডের জীবীয় বৈশিষ্ট্য সমাহার মাত্র।
জীব সদৃশ বৈশিষ্ঠ্যঃ
১. গাঠনিকভাবে ভাইরাসে নিউক্লিক এসিড (DNA বা RNA) আছে।
২. উপযুক্ত পোষক কোষের অভ্যন্তরে ভাইরাস সংখ্যাবৃদ্ধি (multiplication) করতে সক্ষম ।
৩. ভাইরাস সুনির্দিষ্টভাবে বাধ্যতামূলক পরজীবী।
৪. ভাইরাস জিনগত পুনর্বিন্যাস ঘটতে দেখা যায়।
৫. ভাইরাসে প্রকরণ (variation) ও পরিব্যক্তি (mutation) দেখা যায়।
৬. এদের অভিযোজন ক্ষমতা রয়েছে।
৭. নতুন সৃষ্ট ভাইরাসে মাতৃভাইরাসের বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে, অর্থাৎ একটি ভাইরাস তার অনুরূপ ভাইরাস সৃষ্টি করতে পারে।
পরিব্যক্তি (mutation) : নানাবিধ কারণে জীবের বংশগতি উপাদানের এক বা একাধিক জিনের হঠাৎ স্বতঃস্ফূর্ত পরিবর্তন। এ পরিবর্তন স্থায়ী তাই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যেরও পরিবর্তন ঘটে।
৫। ভাইরাসের উপকারিতা লিখুন ।
উত্তরঃ
১। বসন্ত, পোলিও, প্লেগ এবং জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক টিকা ভাইরাস দিয়েই তৈরি করা হয়।
২। ভাইরাস হতে ‘জন্ডিস’ রোগের টিকা তৈরি করা হয়।
৩। কলেরা, টাইফয়েড, আমাশয় ইত্যাদি রোগের ওষুধ তৈরিতে ব্যাকটেরিওফায ভাইরাস ব্যবহার করা হয়।
৪। ভাইরাসকে বর্তমানে বহুল আলোচিত ‘জেনেটিক প্রকৌশল’-এ বাহক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
৫। ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণে ভাইরাস ব্যবহার করা হয়।
৬। কতিপয় ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ দমনেও ভাইরাসের ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। যুক্তরাষ্ট্রে NPV (Nuclear polyhydrosis Virus) কে কীট পতঙ্গনাশক হিসেবে প্রয়োগ করা হয়।
৭। ফায ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করে থাকে।
৮। লাল টিউলিপ ফুলে ভাইরাস আক্রমণের ফলে লম্বা লম্বা সাদা সাদা দাগ পড়ে। একে ব্রোকেন টিউলিপ বলে। এর ফলে ফুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় এবং ফুলের মূল্য বেড়ে যায়।
৬। ভাইরাসের প্রকারভেদ লিখুন।
উত্তরঃ ভাইরাসের প্রকারভেদ (Types of viruses)
১। আকৃতি অনুযায়ী (According to shape)
(i) দণ্ডাকার : এদের আকার অনেকটা দণ্ডের মতো। উদাহরণ- টোবাকো মোজাইক ভাইরাস (TMV), আলফা-আলফা মোজাইক ভাইরাস, মাম্পস ভাইরাস।
(ii) গোলাকার : এদের আকার অনেকটা গোলাকার। উদাহরণ-পোলিও ভাইরাস, TIV, HIV, ডেঙ্গু ভাইরাস।
(iii) ঘনক্ষেত্রাকার/বহুভুজাকার : এসব ভাইরাস দেখতে অনেকটা পাউরুটির মতো।
যেমন- হার্পিস, ভ্যাকসিনিয়া ভাইরাস।
(iv) ব্যাঙ্গাচি আকার : এরা মাথা ও লেজ- এ দুই অংশে বিভক্ত।
উদাহরণ- T2 , T4 , T6 ইত্যাদি।
(v) সিলিন্ড্রিক্যাল/সূত্রাকার : এদের আকার লম্বা সিলিন্ডারের মতো।
যেমন- Ebola virus ও মটরের স্ট্রিক ভাইরাস।
(vi) ডিম্বাকার : এরা অনেকটা ডিম্বাকার।
উদাহরণ- ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস।
২। নিউক্লিক অ্যাসিডের ধরন অনুযায়ী (According to the types of nucleic acid)
(i) DNA ভাইরাস : যে ভাইরাসে নিউক্লিক অ্যাসিড হিসেবে DNA থাকে তাদেরকে DNA ভাইরাস বলা হয়। উদাহরণ- T2 ভাইরাস, ভ্যাকসিনিয়া, ভ্যারিওলা, TIV (Tipula Iridiscent Virus), এডিনোহার্পিস সিমপ্লেক্স ইত্যাদি ভাইরাস।
(ii) RNA ভাইরাস : যে ভাইরাসে নিউক্লিক অ্যাসিড হিসেবে RNA থাকে তাদেরকে RNA ভাইরাস বলা হয়।
উদাহরণ- TMV, HIV, ডেঙ্গু, পোলিও, মাম্পস, র্যাবিস ইত্যাদি ভাইরাস।
৩। বহিস্থ আবরণ অনুযায়ী (According to the external covering)
(i) বহিস্থ আবরণহীন ভাইরাস;
যেমন- TMV, T2 ভাইরাস।
(ii) বহিস্থ আবরণী ভাইরাস;
যেমন- ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, হার্পিস, HIV ভাইরাস।
৪। পোষকদেহ অনুসারে (According to the host body)
(i) উদ্ভিদ ভাইরাস : উদ্ভিদদেহে রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসকে উদ্ভিদ ভাইরাস বলে।
যেমন- TMV, Bean Yellow Virus (BYV)। ব্যতিক্রম—ফুলকপির মোজাইক ভাইরাস (DNA)।
(ii) প্রাণী ভাইরাস : প্রাণিদেহে রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসকে প্রাণী ভাইরাস বলে।
যেমন—HIV, ভ্যাকসিনিয়া ভাইরাস।
(iii) ব্যাকটেরিওফায বা ফায ভাইরাস : ভাইরাস যখন ব্যাকটেরিয়ার উপর পরজীবী হয় এবং ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে তখন তাকে ব্যাকটেরিওফায বলে।
যেমন T2 ,T4 ,T6 ব্যাকটেরিওফায।
(iv) সায়ানোফায : সায়ানোব্যাকটেরিয়া (নীলাভ সবুজ শৈবাল) ধ্বংসকারী ভাইরাসকে সায়ানোফায বলে।
যেমন-LPP1 ,LPP2 , (Lyngbya, Plectonema ও Phormidium নামক সায়ানোব্যাকটেরিয়ার প্রথম অক্ষর দিয়ে নামকরণ করা হয়েছে।)
৫। পোষক দেহে সংক্রমণ ও বংশবৃদ্ধির উপর ভিত্তি করে (Based on infection and reproduction in the host body) সাধারণ ভাইরাস ও রিট্রোভাইরাস। এখানে ভাইরাল RNA থেকে DNA তৈরি হয়।
৬। অন্যান্য ধরন (Other types)
যে সব ভাইরাস ছত্রাককে আক্রমণ করে থাকে তাদের মাইকোফায (Mycophage) বলে।
১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে Holmes ব্যাকটেরিয়া আক্রমণকারী ভাইরাসকে Phaginae, উদ্ভিদ আক্রমণকারী ভাইরাসকে Phytophaginae এবং প্রাণী আক্রমণকারী ভাইরাসকে Zoophaginae নামকরণ করেন।
৭। ভাইরাসের অপকারিতা লিখুন ?
উত্তরঃ
১। ভাইরাস মানবদেহে বসন্ত, হাম, পোলিও, জলাতঙ্ক, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হার্পিস, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ভাইরাল হেপাটাইটিস, ক্যাপোসি সার্কোমা প্রভৃতি মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে থাকে।২। বিভিন্ন উদ্ভিদের রোগ সৃষ্টিতে যেমন-সিমের মোজাইক রোগ, আলুর লিফরোল (পাতা কুঁচকাইয়া যাওয়া), পেঁপের লিফকার্ল, ক্লোরোসিস, ধানের টুংরো রোগসহ প্রায় ৩০০ উদ্ভিদ রোগ ভাইরাস দ্বারা ঘটে থাকে। এতে ফসলের উৎপাদন বিপুলভাবে হ্রাস পায়।
৩। গরুর বসন্ত; গরু, ভেড়া, ছাগল, শূকর, মহিষ ইত্যাদি প্রাণীর ‘ফুট এ্যান্ড মাউথ’ রোগ অর্থাৎ এদের পা ও মুখের বিশেষ ক্ষতরোগ (খুরারোগ) এবং মানুষ, কুকুর ও বিড়ালের দেহে জলাতঙ্ক (hydrophobia) রোগ ভাইরাস দিয়েই সৃষ্টি হয়।
৪। ফায ভাইরাস মানুষের কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়াকেও ধ্বংস করে থাকে।
৫। HIV ভাইরাস দিয়ে AIDS হয়। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
৬। Ebola ভাইরাসের আক্রমণে cell lysis হয় বা কোষ ফেটে যায়।
৭। Zika ভাইরাস মশকীর মাধ্যমে ছড়ায়। মাইক্রোসেফালি ঘটে অর্থাৎ অপরিণত মস্তিষ্ক নিয়ে শিশু জন্মায়। ডেঙ্গুর মত লক্ষণ দেখা যায়।
৮। নিপা ভাইরাস Paramyxoviridae পরিবারভুক্ত একটি RNA ভাইরাস যার গণ নাম Henipavirus. ১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়ায় শূকরের খামারে প্রথম ধরা পড়লেও দ্রুত দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে পরে। বাদুর এই ভাইরাসটির বাহক এবং কাঁচা খেজুরের রসের মাধ্যমে এ ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত (অনুপ্রবেশ) হয়। এ ভাইরাসের আক্রমণে শ্বসন জটিলতায় মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখির মৃত্যু ঘটে।
৯। সম্প্রতি SARS (Severe Acute Respiratory Syndrome) ভাইরাসের কারণে চীন, তাইওয়ান, কানাডা প্রভৃতি দেশে বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে। MERS (Middle East Respiratory Syndrome) ভাইরাসও একটি মারাত্মক ভাইরাস।
৮। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পার্থক্য লিখুন ?
উত্তরঃ
১। ভাইরাস হলো এক প্রকার অতিক্ষুদ্র জৈব কণা বা অণুজীব যারা জীবিত কোষের ভিতরেই মাত্র বংশবৃদ্ধি করতে পারে। অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়া (Bacteria) হলো এক প্রকারের আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত, অসবুজ, এককোষী অণুজীব।২। ভাইরাসে DNA অথবা RNA যেকোনো একটি থাকে।ক্যাপসিডের মধ্যে অবস্থান করে। অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়ার DNA ও RNA উভয়ই থাকে।ক্যাপসিডের মধ্যে অবস্থান করে না।
৩। ব্যাকটেরিয়া জীবন্ত জিনিস। অন্যদিকে ভাইরাস তাদের নিজের উপর নির্ভর করতে পারে না।
৪। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়ার সহজেই মারা যায়। অন্যদিকে এন্টি ভাইরাসজনিত অ্যান্টিভাইরাস কেবল ভাইরাসগুলির প্রজনন হ্রাস করতে পারে এবং তাদের ধ্বংস করতে পারে না।
৫। রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া কোষকে ধ্বংস করে এমন টক্সিন উৎপন্ন করে। তারা খাবার বিষক্রিয়া এবং মেনিনজাইটিস , নিউমোনিয়া এবং যক্ষ্মা সহ অন্যান্য গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে ভাইরাসগুলি হলো রোগাক্রান্ত যা মুরগী, ফ্লু, রেবিজি , ইবোলা ভাইরাসের রোগ , জিকা রোগ এবং এইচআইভি / এইডস সহ বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে থাকে।
৬। ব্যাকটিরিয়া আন্তঃকোষীয় জীব। অন্যদিকে ভাইরাসগুলি অন্তঃকোষীয় জীব, যার অর্থ তারা হোস্ট কোষে প্রবেশ করে এবং বাস করে।
৭। ব্যাকটেরিয়া তাদের নিজস্ব বৃদ্ধি এবং প্রজনন ক্ষমতা আছে। এই কোষগুলি থেকে আরও বিভাজন তৈরি করা যেতে পারে। অন্যদিকে ভাইরাসগুলি নিজেদের দ্বারা বিভক্ত করার ক্ষমতা রাখে না, তারা অবিরাম প্রতিলিপি করে এবং অন্যান্য কোষকে আক্রমণ করে তাদের জিনগত তথ্য প্রেরণ করে।
৯। ৯। ভাইরাসজনিত কিছু রোগের নাম ও পোষকদেহ ও জীবাণুর নাম লিখুন৷
উত্তরঃ
ক) তামাকের মোজাইক রোগ – তামাক – Tobacco Mosaic virus
খ) ধানের টুংরো রোগ – ধান – Tungro virus
গ) AIDS – মানুষ – HIV ভাইরাস
ঘ) ডেঙ্গু/ ডেঙ্গী জ্বর – মানুষ – ফ্ল্যাভি ভাইরাস (Flavi virus)
ঙ) SARS – মানুষ – Nipah virus
চ) জলাতঙ্ক – মানুষ – র্যাবিস ভাইরাস (Rabis virus)
ছ) হাম – মানুষ – রুবিওলা ভাইরাস (Rubeola virus)
জ) জন্ডিস/লিভার ক্যান্সার – মানুষ – হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস (Hepatitis B)
ঝ) পা ও মুখের ক্ষত – গরু/ভেড়া/মহিষ – ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ ভাইরাস
৯। ব্যাকটেরিওফাজ কাকে বলে ?
উত্তরঃ
Phage (ফাজ) একটি গ্রিক শব্দ যার বাংলা আভিধানিক অর্থ ভক্ষণ করা বা( to eat) এরা জীবদেহের অভ্যন্তরে সংক্রমণের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি ঘটিয়ে জীবকে (পোষককে) ধ্বংস করে। (ব্যাকটেরিয়ার দেহাভ্যন্তরে (কোষের ভিতর) বংশ বৃদ্ধি ঘটিয়ে যারা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে তাদেরকে ব্যাকটেরিওফাজ বলে। উদাহরণ- T2 ফাজ। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী দ্য হেরেলী ফেলিক্স (d’Herelle Felix) এই ভাইরাসকে ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস বা ব্যাকটেরিওফাজ বা ফাজ নামে অভিহিত করেন।
১০। ব্যাকটেরিয়া কাকে বলে ?
উত্তরঃ ব্যাকটেরিয়া (Bacteria) হলো আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত, অসবুজ, এককোষী একদল আণুবীক্ষণিক জীব। Bacteria শব্দটি নব্য লাতিন ভাষার ব্যাকটেরিয়ামের (Bacterium) বহুবচন। এটি গ্রিক ব্যাকটেরিয়নের (Bakterion) লাতিন রূপ। ব্যাকটেরিয়নের অর্থ লাঠি, দণ্ড বা বেত। ব্যাকটেরিয়ার এমন নামকরণের কারণ প্রথম আবিষ্কৃত ব্যাকটেরিয়া দণ্ডাকৃতির ছিল। তবে ব্যাকটেরিয়া গোলাকার, বেলনাকার বা সর্পিল নানা আকৃতির হয়। ওলন্দাজ বিজ্ঞানী অ্যান্টনি ফন লিউয়েন হুক সর্বপ্রথম ১৬৭৫ সালে বৃষ্টির পানির মধ্যে নিজের তৈরি সরল অণুবীক্ষণযন্ত্রের নিচে ব্যাকটেরিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি এর নাম দেন ক্ষুদ্র প্রাণী।এ কারণে তাঁকে ব্যাকটেরিওলজির জনক বলা হয়। ১৮২৯ সালে জার্মান বিজ্ঞানী এরেনবার্গ ব্যাকটেরিয়া নাম দেন। ব্যাকটেরিয়া অত্যন্ত ছোট আকারের জীব। এটি সাধারণত ০.২ থেকে ৫ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
১১। ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণিবিভাগ করুন ।
উত্তরঃ ব্যাকটেরিয়ার আকৃতিগত শ্রেণীবিভাগ
১। কক্কাস-Coccus
যে সব ব্যাকটেরিয়া দেখতে গোলাকার তাদেরকে কক্কাস ব্যাকটেরিয়া বলে। বিভিন্ন ধরনের কক্কাস ব্যাকটেরিয়া হলো-
(i) মাইক্রোকক্কাসঃ গোলাকার ব্যাকটেরিয়া গুলো একা একা বা পৃথক পৃথক ভাবে অবস্থান করলে তাকে মাইক্রোকক্কাস বলে। যেমন- Micrococcus denitrificans, Micrococcus aureus, Micrococcus flavus.
(ii) ডিপ্লোকক্কাসঃ গোলাকার ব্যাকটেরিয়া গুলো জোড়ায় জোড়ায় বা দুইটি করে একত্রে অবস্থান করলে তাকে ডিপোকক্কাস বলে। যেমন- Diplococcus pneumonia.
(ররর) স্ট্রেপ্টোকক্কাসঃ গোলাকৃতির ব্যাকটেরিয়া গুলো চেইন বা শৃঙ্খল আকারে অবস্থান করলে তাকে স্ট্রেপ্টোকক্কাস বলে। যেমন- Treptococcus lactis, Treptococcus strep and Treptococcus pyrogens.
(iv) টেট্রাকক্কাসঃ গোলাকার ব্যাকটেরিয়া কোষগুলো দুইটি ভিন্ন তলে বিভাজিত হয়ে চারটি করে একত্রে অবস্থান করলে তাকে টেট্রাকক্কাস বলে। যেমন- Gaffkyacoccus tetragena, Tetracoccus sp.
(v) স্ট্যাফাইলোকক্কাসঃ গোলাকৃতির ব্যাকটেরিয়া গুলো একত্রে আঙ্গুরের থোকার মতো অবস্থান করলে তাকে স্ট্যাফাইলোকক্কাস বলে। যেমন- Staphylococcus aureus.
(vi) সারসিনাঃ নির্দিষ্ট সংখ্যক গোলাকার ব্যাকটেরিয়া কোষ নিয়মিত ভাবে সাজানো থাকলে তাকে সারসিনা বলে। যেমন- Sarcina lutea.
২। ব্যাসিলাস বা দন্ডাকার
যে সব ব্যাকটেরিয়া দেখতে দন্ড আকৃতির তাদেরকে ব্যাসিলাস বলে। বিভিন্ন ধরনের ব্যাসিলাস হলো-
(i) মনোব্যাসিলাসঃ দন্ডাকৃতির ব্যাকটেরিয়া গুলো একক ভাবে অবস্থান করলে তাকে মনোব্যাসিলাস বলে। যেমন- Bacillus albus, Escherichia coli.
(ii) ডিপ্লোব্যাসিলাসঃ দন্ডাকৃতির ব্যাকটেরিয়া গুলো জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করলে তাকে ডিপ্লোব্যাসিলাস বলে। Lactobacillus, Corynebacterium diptheriae, Moraxella lacunata, Diplobacillus.
(iii) স্ট্রেপটোব্যাসিলাসঃ দন্ডাকৃতির ব্যাকটেরিয়া গুলো চেইন বা শৃঙ্খল আকারে অবস্থান করলে তাকে স্ট্রেপটোব্যাসিলাস বলে। যেমন- Bacillus tuberculosis, Streptobacillus moniliformis.
(iv) প্যালিসেড ব্যাসিলাসঃ দন্ডাকৃতির ব্যাকটেরিয়া গুলো পাশাপাশি সমান্তরাল ভাবে অবস্থান করে অলিক টিস্যুর মতো গঠন সৃষ্টি করলে তাকে প্যালিসেড ব্যাসিলাস বলে। যেমন- Lampropedia sp.
(v) কক্কোব্যাসিলাসঃ ব্যাকটেরিয়া গুলো ঈষৎ লম্বা বা ডিম্বাকার হলে তাদেরকে কক্কোব্যাসিলাস বলে। যেমন- Salmonella, Mycobacterium, Coxiella burnetti.
৩। স্পাইরিলামঃ যে সব ভাইরাস দেখতে প্যাঁচানো বা কুন্ডালাকার তাদেরকে স্পাইরিলাম ব্যাকটেরিয়া বলে। যেমন- Spirillum minus, Treponema.
৪। কমাকৃতি ব্যাকটেরিয়াঃ যে সব ব্যাকটেরিয়া দেখতে কমাকৃতির অর্থাৎ দেহ খানিকটা পাক খাওয়ানো তাদেরকে কমাকৃতি ব্যাকটেরিয়া বলে। যেমন- Vibrio cholera.
৫। প্লিওমরফিকঃ যে সব ব্যাকটেরিয়ার সুনির্দিষ্ট আকৃতি নাই তাদেরকে প্লিওমরফিক বা বহুরুপী বা pleomorphic ব্যাকটেরিয়া বলে। যেমন- Rhizobium mayense.
৬। বর্গাকৃতির ব্যাকটেরিয়াঃ চার বাহু বিশিষ্ট বর্গাকার ব্যাকটেরিয়াকে বর্গাকৃতির ব্যাকটেরিয়া বলে। যেমন- Haloquadratum.
৭। তারকাকৃতি ব্যাকটেরিয়াঃ যে সব ব্যাকটেরিয়া দেখতে তারকা বা নক্ষত্রের মতো তাদেরকে তারকাকৃতি ব্যাকটেরিয়া বলে। যেমন- Stella humosa, Stella vacuolata.
৮। হাইফা বা অণুসূত্রাকার ব্যাকটেরিয়াঃ যে সব ব্যাকটেরিয়া পাতলা প্রাচীরবিশিষ্ট দীর্ঘ অণুসূত্র আকৃতির হয় তাদেরকে অণুসূত্রাকার ব্যাকটেরিয়া বলে। যেমন- Candidatus savagella, Streptomyces.
অক্সিজেন গ্রহণের ভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগ
অক্সিজেনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির ভিত্তিতে ব্যাকটেরিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১। বায়ুজীব ব্যাকটেরিয়াঃ যে সব ব্যাকটেরিয়া অক্সিজেনের উপস্থিতি ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে না তাকে বায়ুজীবী ব্যাকটেরিয়া বলে। যেমন- Bacillus anthracis, Azobacter beijerinckii.
২। অবায়ুজীব ব্যাকটেরিয়াঃ যে সব ব্যাকটেরিয়া অক্সিজেনের উপস্থিতি ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে তাকে অবায়ুজীবী ব্যাকটেরিয়া বলে। যেমন- Clostridium tetani.
তাপ সহনশীলতার ভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগ
তাপ সহনশীলতার ভিত্তিতে ব্যাকটেরিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
১। সাইক্রোফিলিকঃ যে সব ব্যাকটেরিয়া নিম্ন তাপমাত্রায় বেঁচে থাকে তাকে Psychrophilic ব্যাকটেরিয়া বলে। শুন্য বা তার চেয়ে কম তাপমাত্রায় এ সব ব্যাকটেরিয়া বাঁচতে পারে। এদের সবচেয়ে ভাল বৃদ্ধির জন্য ২৫-৩০ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রা উত্তম। যেমন- Psychrobacter, Acinetobacter, Arthrobacter, Pseudomonas.
২। মেসোফিলিকঃ যে সব ব্যাকটেরিয়া স্বাভাবিক তাপমাত্রায় বেঁচে থাকে তাকে Mesophilic ব্যাকটেরিয়া বলে। এদের সবচেয়ে ভাল বৃদ্ধির জন্য ৩০-৪০ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রা উত্তম। যেমন- Azotobacter, Rhizobium.
৩। থার্মোফিলিকঃ যে সব ব্যাকটেরিয়া উচ্চ তাপমাত্রায় বেঁচে থাকে তাকে Thermophilic ব্যাকটেরিয়া বলে। এদের সবচেয়ে ভাল বৃদ্ধির জন্য ৪৫-৬০ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রা উত্তম। যেমন- Thermus aquaticus, Bacillus coagulans.
১২৷ গ্রাম পজেটিভ ও গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া কাকে বলে ?
উত্তরঃ
ক) গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়াঃ যে সব ব্যাকটেরিয়াকে ক্রিস্টাল ভায়োলেট রঞ্জকে রঞ্জিত করার পর ধৌত করলে রঞ্জক ধরে রাখে (ব্লু, পার্পল) তাকে গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া বলে। এদের কোষপ্রাচীর পুরু। এর কোষপ্রাচীরে পেপটাইডোগ্লাইকন, টিকোয়িক এসিড ও পাতলা লাইপোপলিস্যাকারাইড থাকে। যেমন– Clostridium, Staphylococcus, Streptococcus, Bacillus, Actinobacteria.
খ) গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াঃ যে সব ব্যাকটেরিয়াকে ক্রিস্টাল ভায়োলেট রঞ্জকে রঞ্জিত করার পর ধৌত করলে রঞ্জক ধরে রাখতে পারে না তাকে গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া বলে। এদের কোষপ্রাচীর পাতলা। এর কোষপ্রাচীরে পেপটাইডোগ্লাইকন ও পুরু লাইপোপলিস্যাকারাইড থাকে। E. coli, Salmonella typhi, Shigella, Proteus, Rhizobium, Vibrio cholerae, Neisseria meningitidis, Cyanobacteria.
১৩। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পার্থক্য লিখুন।
১৪। DNA ভাইরাস ও RNA ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
১৪। DNA ভাইরাস ও RNA ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
১৪। DNA ভাইরাস ও RNA ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
১৪। DNA ভাইরাস ও RNA ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
৪র্থ অধ্যায় – সালোকসংশ্লেষণ এবং শ্বসন (Photosynthesis and Respiration)
১। সালোকসংশ্লেষণ কাকে বলে?
উত্তরঃ সবুজ উদ্ভিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো যে এরা সূর্যালোকের উপস্থিতিতে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) এবং পানি থেকে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাজাতীয় খাদ্য তৈরি করে। সবুজ উদ্ভিদে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য তৈরি হওয়ার এ প্রক্রিয়াকে সালোকসংশ্লেষণ (Photosynthesis) বলা হয়।
সালোকসংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো হলো: ক্লোরোফিল, আলো, পানি এবং কার্বন ডাই অক্সাইড। সালোকসংশ্লেষণ একটি জৈব রাসায়নিক (biochemical) বিক্রিয়া, যেটি এরকম:
পাতার মেসোফিল টিস্যু সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার প্রধান স্থান। স্থলজ সবুজ উদ্ভিদ মাটি থেকে মূলের মাধ্যমে পানি শোষণ করে পাতার মেসোফিল টিস্যুর ক্লোরোপ্লাস্টে পৌঁছায় এবং স্টোমাটা বা পত্ররন্ধ্রের মাধ্যমে বায়ু থেকে CO2 গ্রহণ করে, যা মেসোফিল টিস্যুর ক্লোরোপ্লাস্টে পৌঁছে। জলজ উদ্ভিদ পানিতে দ্রবীভূত CO2 গ্রহণ করে। বায়ুমণ্ডলে 0.03% এবং পানিতে 0.3% CO2 আছে, তাই জলজ উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণের হার স্থলজ উদ্ভিদ থেকে বেশি।
২। ফটোফসফোরাইলেশন কাকে বলে ?
উত্তরঃ ক্লোরোফিল অণু আলোকরশ্মির ফোটন (photon) শোষণ করে এবং শোষণকৃত ফোটন থেকে শক্তি সঞ্চয় করে ADP (অ্যাডিনোসিন ডাইফসফেট) অজৈব ফসফেট (Pi = inorganic phosphate)-এর সাথে মিলিত হয়ে ATP তৈরি করে। ATP তৈরির এই প্রক্রিয়াকে ফটোফসফোরাইলেশন (photophosphorylation) বলে।
৩। আলোক নিরপক্ষ পর্যায় সম্পর্কে লিখুন।
উত্তরঃ সবুজ উদ্ভিদে CO2 বিজারণের তিনটি গতিপথ শনাক্ত করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে ক্যালভিন চক্র, হ্যাচ ও স্লাক চক্র এবং ক্রেসুলেসিয়ান এসিড বিপাক বা CAM প্রক্রিয়া।
(i) ক্যালভিন চক্র বা C3 গতিপথ (Calvin cycle বা C3 cycle): CO2 আত্তীকরণের এ গতিপথকে আবিষ্কারকদের নামানুসারে ক্যালভিন–বেনসন ও ব্যাশাম চক্র বা সংক্ষেপে ক্যালভিন চক্র বলা হয়। ক্যালভিন তার এ আবিষ্কারের জন্য 1961 সালে নোবেল পুরস্কার পান। অধিকাংশ উদ্ভিদে এই প্রক্রিয়ায় শর্করা তৈরি হয় এবং প্রথম স্থায়ী পদার্থ 3-কার্বনবিশিষ্ট ফসফোগ্লিসারিক এসিড বলে এই ধরনের উদ্ভিদকে বলে C3 উদ্ভিদ।
(ii) হ্যাচ ও স্লাক চক্র বা C4 গতিপথ (Hatch and Slack cycle বা C4 cycle): অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানী M.D. Hatch ও C.R. Slack (1966 সালে) CO2 বিজারণের আর একটি গতিপথ আবিষ্কার করেন। এই গতিপথের প্রথম স্থায়ী পদার্থ হলো 4 কার্বনবিশিষ্ট অক্সালো এসিটিক এসিড তাই, একে C4 গতিপথ বলে।
C4 উদ্ভিদে একই সাথে হ্যাচ ও স্ল্যাক চক্র এবং ক্যালভিন চক্র পরিচালিত হতে দেখা যায়। C3 উদ্ভিদের তুলনায় C4 উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণের হার বেশি এবং উৎপাদন ক্ষমতাও বেশি। সাধারণত ভুট্টা, আখ, অন্যান্য ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ, মুথা ঘাস, অ্যামারন্যথাস (Amaranthus-অ্যামারান্থাস) ইত্যাদি উদ্ভিদে পরিচালিত হয়।
৪। C3 ও C4 উদ্ভিদের মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
৫। CAM প্রক্রিয়া সম্পর্কে লিখুন।
CAM প্রক্রিয়া (CAM process)
ক্র্যাসুলেসিয়ান অ্যাসিড মেটাবলিজম সংক্ষেপে CAM প্রক্রিয়া বলা হয়। Crassulaceae গোত্রের (পাথরকুচি গোত্র) উদ্ভিদে এ প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় বলে একে CAM নামকরণ করা হয়েছে। এসব উদ্ভিদ উষ্ণ আবহাওয়ায় বেঁচে থাকে। এসব উদ্ভিদে রাতে পত্ররন্ধগুলো খোলা থাকে। এর কারণ দিনের বেলায় এদের পাতায় জৈব অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায় যার ফলে pH এর মাত্রাও কমে যায় এবং রাতে জৈব অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় যার ফলে pH এর মাত্রা বেড়ে যায়।
৬। শ্বসন কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জীবকোষস্থ জটিল জৈবযৌগ (খাদ্যবস্তু) জারিত হয়, ফলে জৈবযৌগে সঞ্চিত স্থিতিশক্তি রূপান্তরিত হয়ে গতিশক্তি বা রাসায়নিক শক্তিতে পরিণত হয়, তাকে শ্বসন (Respiration)বলে।
৭। শ্বসন কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ
অবাত শ্বসন কাকে বলে?
উত্তর : যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে হয়ে থাকে তাকে অবাত শ্বসন বলে।
৮। সবাত শ্বসন কাকে বলে?
উত্তর : যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় এবং শ্বসনিক বস্তু জারিত হয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড, পানি ও বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে সবাত শ্বসন বলে।
৯। চক্রীয় ও অচক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন কাকে বলে ?
উত্তরঃ চক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন (Cyclic Photophosphorylation) যে ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় আলোকশক্তি শোষণের ফলে উদ্দীপ্ত ক্লোরোফিল অণু থেকে নির্গত উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ইলেকট্রন বিভিন্ন বাহকের মাধ্যমে নিস্তেজ অবস্থায় পুনরায় ঐ ক্লোরোফিল অণুতে ফিরে আসে এবং একবার পরিভ্রমণ শেষে একটি ATP অণু তৈরি করে, তাকে চক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন বলে।
অচক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন (Noncyclic Photophosphorylation)
যে ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিল অণু থেকে উৎক্ষিপ্ত উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ইলেকট্রন বিভিন্ন বাহকের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করার পর NADP-এর সাথে যুক্ত হয়, কিন্তু ইলেকট্রন যে ক্লোরোফিল থেকে নির্গত হয়েছিল সেই ক্লোরোফিলে পুনরায় ফিরে যায় না তাকে অচক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন বলা হয়।
১০। চক্রীয় ও অচক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন এর মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
উত্তরঃ
১১। সবাত ও অবাত শ্বসনের মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
সবাত শ্বসন ও অবাত শ্বসনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। সবাত শ্বসনে মুক্ত অক্সিজেনের (O2) উপস্থিতিতে ঘটে। অন্যদিকে অবাত শ্বসনে মুক্ত অক্সিজেনের অনপস্থিতিতে ঘটে।
২। সবাত শ্বসন বস্তু সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়। অন্যদিকে অবাত শ্বসন বস্তু আংশিক জারিত হয় ।
৩। সবাত শ্বসন বায়ুজীবি জীবে ঘটে । অন্যদিকে অবাদ শ্বসন অবায়ুজীবি জীবে ঘটে ।
৪। সবাত শ্বসন প্রান্তীয় হাইড্রোজেন গ্রাহক হল আণবিক অক্সিজেন । অন্যদিকে অবাত শ্বসন প্রান্তীয় হাইড্রোজেন গ্রাহক অক্সিজেনযুক্ত যৌগের অক্সিজেন।
৫। সবাত শ্বসনের উপজাত বস্তু CO2 ও H2O । অন্যদিকে উপজাত বস্তু CO2, H2O এবং অন্যান্য বস্তু।
৬। সবাত শ্বসন সম্পূর্ণ শক্তি অর্থাৎ 686 Kcal শক্তি উৎপন্ন হয় । অন্যদিকে অবাত শ্বসন আংশিক শক্তি অর্থাৎ 50 Kcal শক্তি উৎপন্ন হয়।
৭। সবাত শ্বসন প্রধানত তিনটি পর্যায়ে হয় -গ্লাইকোলাইসিস, ক্রেবস চক্র এবং প্রান্তীয় শ্বসন । অন্যদিকে অবাত শ্বসন দুটি পর্যায়ে সম্পর্ণ হয় – গ্লাইকোলাইসিস এবং পাইরুভিক অ্যাসিডের অসম্পূর্ণ জারণ ।
৮। সবাত শ্বসন সাইটোপ্লাসম ও মাইট্রোকন্ড্রিয়ার মধ্যে ঘটে । অন্যদিকে অবাত শ্বসন মাইট্রোকন্ড্রিয়ার বাইরে অর্থাৎ সাইটোপ্লাসমে ঘটে।
১২। C3 ও C4 উদ্ভিদ এর মধ্যে পার্থক্য লিখুন।
১৩। আলোক পর্যায় ও অন্ধকার পর্যায়ের মধ্যে পার্থক্য লিখুন৷
১৪। ফার্মান্টেশন বা গাজন কী ?
উত্তরঃ ফার্মেন্টেশন বা গাঁজন (Fermentation)
কোষের বাইরে অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে জাইমেজ এনজাইমের উপস্থিতিতে গ্লুকোজ অণু অসম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে ইথানল (অ্যালকোহল) বা ল্যাকটিক অ্যাসিড সৃষ্টি ও অল্প পরিমাণ শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ফার্মেন্টেশন বা গাজন বলে। কিছু ব্যাক্টেরিয়া ও এককোষী ঈস্টে ফার্মেন্টেশন ঘটে। বিজ্ঞানের যে শাখায় ফার্মেন্টেশন সম্পর্কে অধ্যয়ন করা হয় তাকে জাইমোলোজি (Zymology) বলে। এ প্রক্রিয়ায় অ্যালকোহল, মদ, পাউরুটি ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
১৫। গ্লাইকোলাইসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ শ্বসনের যে সাধারণ পর্যায়ে কোষের সাইটোপ্লাজমে এক অণু গ্লুকোজ কয়েক রকম উৎসেচকের প্রভাবে আংশিকভাবে জারিত হয়ে দুই অণু পাইরুভিক অ্যাসিড (CH3COCOOH), 2 অণু ATP, 2 অণু NADH2 ও 2 অণু H2O উৎপন্ন করে তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে । গ্লাইকোলাইসিস (Glycolysis) হচ্ছে জীবের সবাত ও অবাত উভয় প্রকার শ্বসনের প্রথম ধাপ।
১৫। ক্রেবস চক্র কাকে বলে ?
উত্তরঃ ক্রেবস চক্র (Krebs Cycle)
পাইরুভিক এসিড থেকে উৎপাদিত ২-কার্বন বিশিষ্ট যৌগ অ্যাসিটাইল Co-A একটি জটিল চক্রের মাধ্যমে জারিত হয়ে CO2 এবং পানি প্রস্তুত করে। এ চক্রটির বিশদ বিবরণ ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের প্রাণরসায়নবিদ স্যার হ্যানস ক্রেবস (Sir Hans Adolf Krebs, 1900 – 1981) প্রদান করেছিলেন । এজন্য তাঁর নামানুসারে এ চক্রকে ক্রেবস চক্র বলা হয়। এ চক্রের প্রথম উৎপাদিত যৌগ সাইট্রিক এসিড হওয়ায় ক্রেবস চক্রকে সাইট্রিক এসিড চক্র (Citric Acid Cycle)-ও বলে। সাইট্রিক এসিডে তিনটি কার্বক্সিল -COOH) গ্রুপ থাকায় একে বর্তমানে ট্রাই কার্বক্সিলিক এসিড চক্র বা টিসিএ চক্র (Tricarboxylic Acid Cycle বা TCA Cycle) বলে। ক্রেবস চক্রের সমগ্র বিক্রিয়াগুলো মাইটোকন্ড্রিয়ার মাতৃকার মধ্যে সম্পন্ন হয়। প্রকৃতপক্ষে, পাইরুভিক এসিডের সবাত জারণ (Aerobic Oxidation of Pyruvic Acid) ক্রেবস চক্রের মাধ্যমেই ঘটে
৫ম অধ্যায় – পুষ্টি (Nutrition)
১। পুষ্টি কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় জীব খাদ্যবস্তু গ্রহণ, পরিপাক, পরিশোধন ও আত্তীকরণের মাধ্যমে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন ও শক্তি উৎপাদিত হয় তাকে পুষ্টি বলে। অর্থ্যাৎ খাদ্য উপাদান যে প্রক্রিয়ায় শরীরের তাপ ও শক্তি জোগায়, দেহের গঠন, বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ করে এবং শরীরকে সবল ও রোগমুক্ত রেখে কর্মক্ষম জীবনযাপনে সহয়তা করে তাই হলো পুষ্টি। আমাদের দেহ বিভিন্ন উপাদান থেকে পুষ্টি পেয়ে থাকে ৷ আর এই উপাদান গুলো ৬ টি ৷ যথা:- আমিষ, শর্করা, স্নেহ পদার্থ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি।
পুষ্টির প্রাকৃতিক উৎস
শর্করাঃ চিনি, মধু, গুড়, মিষ্টি ফল, চাল, আটা, ময়দা, আলু, বিভিন্ন প্রকার সবজি ও ফলের আঁশ।
আমিষঃ ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, ডাল, বীচি, তৈলবীজ, বাদাম ইত্যাদি।
স্নেহ বা চর্বিঃ উদ্ভিজ্জ তেল, ঘি, মাখন, মাছ/মাংসের চর্বি বা তেল ইত্যাদি।
২। খাদ্য কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে পদার্থ খেলে আমাদের শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ থাকে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সকল ধরনের কার্যপ্রক্রিয়া সঠিকভাবে চলমান থাকে মূলত সেটাই হচ্ছে খাদ্য।
ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ কাকে বলে ?
উত্তরঃ ভিটামিন বলতে আমরা খাদ্যের ঐ সব জৈব রাসায়নিক পদার্থকে বুঝি যা খাদ্যে সামান্য পরিমাণে উপস্থিত থাকে। ভিটামিনসমূহ প্রত্যক্ষভাবে দেহ গঠনে অংশগ্রহণ না করলেও এদের অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধিসাধন বা তাপশক্তি উৎপাদন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রিয়াগুলো সুসম্পন্ন হতে পারে না।
ভিটামিনের প্রকারভেদ : দ্রবণীয়তার গুণ অনুসারে ভিটামিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. স্নেহ জাতীয় পদার্থে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন- এ, ডি, ই, এবং কে।
২. পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন- ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং সি।
ভিটামিনের উৎস : গাছের সবুজ পাতা, কচি ডগা, হলুদ ও সবুজ বর্ণের সবজি, ফল ও বীজ ইত্যাদি অংশে ভিটামিন থাকে।
কোন খাদ্যে কোন ভিটামিন থাকে ?
উত্তরঃ
ভিটামিন-এচোখ, চুল এবং ত্বকের জন্য খুবই ভালো।
কোন কোন খাবারে আছে : দুধ, গাজর, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, আম, লালশাক, সব রকমের সবুজ শাকসবজি, কড লিভার অয়েল, যকৃত, পালংশাক, রঙিন শাকসবজি, পনির, ডিম, পেঁপে, মটরশুঁটি।
ভিটামিন-বি
হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
কোন কোন খাবারে আছে : মাছ, যে কোনো রকমের সি ফুড, মাংস, শস্যদানা, ডিম, ডেইরি প্রডাক্ট এবং সবুজ শাকসবজি।
ভিটামিন-সি
শরীরের বিভিন্ন টিস্যু ভালো রাখতে সাহায্য করে। শরীরের রোগ সেরে ওঠার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কোন কোন খাবারে আছে : কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, টমেটো, কাঁচামরিচ, ফুলকপি, গাজর, পেঁপে, আনারস, আঙুর, আম, জাম, আলু, তরমুজ, কলা, পেঁয়াজ, চেরিফল, পেয়ারা, কিশমিশ, লেটুসপাতা, বেগুন, ডুমুর।
ভিটামিন-ডি
দাঁত ও হাড় গঠনে জরুরি। দাঁত ও হাড় মজবুত করার জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে।
কোন কোন খাবারে আছে : দুধ, মাছ, ডিমের কুসুম, যকৃত।
ভিটামিন-ই
ফুসফুসকে রক্ষা করে এবং শরীরের টিস্যু গঠনে সহায়তা করে। ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী।
৩। ভিটামিনের অভাবজনিত কিছু রোগের নাম লিখুন।
উত্তরঃ
ভিটামিন – এ
রোগের নাম – রাতকানা, জেরোফথালমিয়া ।
ভিটামিন-বি
রোগের নাম – ভিটামিন বি – এর অভাবে বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে । যেমন – বেরিবেরি, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া ইত্যাদি ।
ভিটামিন – সি
রোগের নাম – ভিটামিন সি (অ্যাসকরবিক এসিড) – এর অভাবে স্কার্ভি রােগ হয়। তাছাড়া এর অভাবে শিশুদের মাড়ি ফুলে যায়, দেহের ওজন হ্রাস পায়, রক্তশূন্যতা হয়, দুর্বল লাগে এবং ক্ষত সারতে ভাঙা হাড় জোড়া লাগতে দেরি হয়।
ভিটামিন – ডি
রোগের নাম – রিকেটস রোগ হয় ।
ভিটামিন – কে
রোগের নাম – ভিটামিন – কে এর। অভাব হলে নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি, হাড়ের দুর্বলতা, হাড়ে খনিজের স্বল্পতা, হৃদরোগ, অস্টিয়োপোরোসিস, দাঁতের ক্ষয়, রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা ইত্যাদি দেখা দেয়।
৪। ভিটামিন – বি কমপ্লেক্স কী ?
উত্তরঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স হল পুষ্টি উপাদানগুলির একটি গ্রুপ যা কোষের বিপাক এবং লোহিত রক্তকণিকা সংশ্লেষণের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে আটটি বি ভিটামিন রয়েছে:থায়ামিন (B1)
রিবোফ্লাভিন (বিএক্সএনইউএমএক্স)
নিয়াসিন (বিএক্সএনইউএমএক্স)
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বিএক্সএনইউএমএক্স)
পাইরিডক্সিন (বি 6)
বায়োটিন (বি 7)
ফলিক অ্যাসিড (B9)
কোবালামিন (B12)
৫। উদ্ভিদ ও পানির সম্পর্ক কী ?
উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজম জীবদেহের ভৌত ভিত্তি, এই প্রোটোপ্লাজমের শতকরা 90 ভাগই পানি। এ কারণেই পানিকে ফ্লুইড অফ লাইফ বলা হয়ে থাকে। পানির পরিমাণ কমে গেলে প্রোটোপ্লাজম সংকুচিত হয়ে মরে পর্যন্ত যেতে পারে। তাছাড়া উদ্ভিদের দেহে যত বিপাকীয় বিক্রিয়া চলে, পানির অভাব হলে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। উদ্ভিদদেহে পানির প্রয়োজনীয় দিকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
(ক) প্রোটোপ্লাজম সজীব রাখতে পানির বিকল্প নেই। একটি সংকুচিত প্রোটোপ্লাজমযুক্ত কোষকে বাঁচাতে চাইলে দেরি না করে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
(খ) প্রস্বেদন ও সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া চালু রাখতে পরিমাণমতো পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার। এজন্যই শুষ্ক মৌসুমে বড় বড় উদ্ভিদেও পানি সেচ দিতে হয়।
(গ) পানি একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্রাবক। বিপাকীয় অনেক বিক্রিয়ায় পানির গুরুত্ব অপরিসীম।
(ঘ) উদ্ভিদের কোষ বৃদ্ধি ও চলনে পানির ভূমিকা রয়েছে।
উদ্ভিদ প্রধানত মূলের মাধ্যমে মাটি থেকে পানি শোষণ করে। উদ্ভিদে 3টি প্রক্রিয়া সম্মিলিতভাবে শোষণ কাজ সম্পাদন করে। প্রক্রিয়া তিনটি হলো: ইমবাইবিশন, ব্যাপন এবং অভিস্রবণ।
ইমবাইবিশন (Imbibition)
এক খণ্ড শুকনা কাঠের এক প্রান্ত পানিতে ডুবালে ঐ কাঠের খণ্ডটি কিছু পানি টেনে নেবে। আমরা জানি, কলয়েড জাতীয় শুকনা বা আধা শুকনা পদার্থ তরল পদার্থ শুষে নেয়, এজন্যই কাঠের খণ্ডটি পানি টেনে নিয়েছে। এ প্রক্রিয়াকে ইমবাইবিশন বলে। সেলুলোজ, স্টার্চ, জিলাটিন— এগুলো হাইড্রোফিলিক (পানিপ্রিয়) পদার্থ। এরা তরল পদার্থের সংস্পর্শে এলে তা শুষে নেয়, আবার তরল পদার্থের অভাবে সংকুচিত হয়ে যায়। কোষপ্রাচীর ও প্রোটোপ্লাজম কলয়েডধর্মী হওয়ায় ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করে স্ফীত হয়ে ওঠে।
ব্যাপন (Diffusion)
যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো দ্রব্যের অণু বেশি ঘনত্বের এলাকা থেকে কম ঘনত্বের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে তাকে ব্যাপন প্রক্রিয়া বলে। একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থের বেশি ঘনত্ববিশিষ্ট দ্রবণ থেকে কম ঘনত্বের দ্রবণের দিকে দ্রাবকের ব্যাপিত হওয়ার প্রচ্ছন্ন ক্ষমতাকে ব্যাপন চাপ বলে। একই বায়ু চাপে কোনো একটি দ্রবণ ও দ্রাবকের ব্যাপন চাপের পার্থক্যকে ব্যাপন চাপ ঘাটতি (Diffusion pressure deficit) বলে। পাতার মেসোফিল টিস্যুতে এই ব্যাপন চাপ ঘাটতির ফলে পানির ঘাটতি আছে এমন কোষ পাশের কোষ থেকে পানি টেনে নেয়। উদ্ভিদের পানি শোষণে ব্যাপনের গুরুত্ব অপরিসীম।
অভিস্রবণ (Osmosis)
যদি দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ যাদের দ্রব এবং দ্রাবক একই, একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা (Selectively permeable membrane) দিয়ে আলাদা করা হয়, তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই দুটি দ্রবণের ঘনত্ব সমান হয়ে যাবে। একই দ্রব এবং দ্রাবকযুক্ত দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা দিয়ে আলাদা করা হলে, দ্রাবক তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয়। দ্রাবকের বৈষম্যভেদ্য পর্দা ভেদ করে তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হওয়াকে অভিস্রবণ প্রক্রিয়া বলা হয়।
৬। পুষ্টিহীনতা কাকে বলে ?
উত্তরঃ দেহের চাহিদা বা প্রয়োজন সাপেক্ষে এক বা একাধিক পুষ্টি উপাদানের সামগ্রিক বা আংশিক অভাবজনিত শারীরিক লক্ষণকে অপুষ্টি বা পুষ্টিহীনতা বলে।
৭। মাইক্রো ও ম্যাক্রো উপাদান সম্পর্কে লিখুন।
উত্তরঃ ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা ম্যাক্রো উপাদান (macro-nutrient বা macro-element): উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান বেশি পরিমাণে দরকার হয়, সেগুলোকে ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা ম্যাক্রো উপাদান বলা হয়। ম্যাক্রো উপাদান 10 টি, যথা: নাইট্রোজেন (N), পটাশিয়াম (K), ফসফরাস (P), ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (O), সালফার (S) এবং লৌহ (Fe)।(মনে রাখার উপায়: MgK CaFe for Nice CHOPS)
মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা মাইক্রো উপাদান (micro-nutrient বা micro-element): উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান অত্যন্ত সামান্য পরিমাণে প্রয়োজন হয় তাদেরকে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা মাইক্রো উপাদান বলে। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট 6 টি, যথা: দস্তা বা জিংক (Zn), ম্যাংগানিজ (Mn), মোলিবডেনাম (Mo), বোরন (B), তামা বা কপার (Cu) এবং ক্লোরিন (Cl)।
৮। পুষ্টি উপাদানের অভাবজনিত লক্ষণ লিখুন।
উত্তরঃ নাইট্রোজেন (N): নাইট্রোজেনের অভাব হলে ক্লোরোফিল সৃষ্টিতে বিঘ্ন ঘটে। ক্লোরোফিলের অভাবে পাতার সবুজ রং হালকা হতে হতে একসময় হলুদ হয়ে যায়। পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে ‘ক্লোরোসিস’ (chlorosis) বলে। লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ বা দস্তার অভাবেও ক্লোরোসিস হতে পারে কেননা এগুলোও ক্লোরোফিল উৎপাদনের সাথে কোনো না কোনোভাবে জড়িত। ক্লোরোসিসে কোষের বৃদ্ধি এবং বিভাজন হ্রাস পায়, তাই উদ্ভিদের বৃদ্ধি কমে যায়। ফসফরাস (P): ফসফরাসের অভাব হলে পাতা বেগুনি হয়ে যায়। পাতায় মৃত অঞ্চল সৃষ্টি হয় এমনকি পাতা, ফুল ও ফল ঝরে যেতে পারে। উদ্ভিদের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায় এবং উদ্ভিদ খর্বাকার হয়।
পটাশিয়াম (k): পটাশিয়ামের অভাবে পাতার শীর্ষ এবং কিনারা হলুদ হয় এবং মৃত অঞ্চল সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে পাতার শিরার মধ্যবর্তী স্থানে ক্লোরোসিস হয়ে হলুদবর্ণ ধারণ করে। পাতার কিনারায় পুড়ে যাওয়া সদৃশ বাদামি রং দেখা যায় এবং পাতা কুঁকড়ে আসে। উদ্ভিদের বৃদ্ধি কম হয় এবং শীর্ষ ও পার্শ্ব মুকুল মরে যায়।
ক্যালসিয়াম (Ca): কোষের সাইটোসলে ক্যালসিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা, মাইটোকন্ড্রিয়া এবং এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামের স্বাভাবিক কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কিত। মাত্রা কমে গেলে মাইটোকন্ড্রিয়ায় অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়া এবং এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামের প্রোটিন ট্রাফিকিং প্রক্রিয়া বিপর্যস্ত হয়। তাই ক্যালসিয়ামের অভাবে উদ্ভিদের বর্ধনশীল শীর্ষ অঞ্চল, বিশেষ করে ফুল ফোটার সময় উদ্ভিদের কাণ্ড শুকিয়ে যায় এবং উদ্ভিদ হঠাৎ নেতিয়ে পড়ে।
ম্যাগনেসিয়াম (Mg): ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে ক্লোরোফিল সংশ্লেষিত হয় না বলে সবুজ রং হালকা হয়ে যায় এবং সালোকসংশ্লেষণের হার কমে যায়। পাতার শিরাগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে অধিক হারে ক্লোরোসিস হয়।
লৌহ (Fe): লৌহের অভাবে প্রথমে কচি পাতার রং হালকা হয়ে যায়, তবে পাতার সরু শিরার মধ্যবর্তী স্থানেই প্রথম হালকা হয় এবং ক্লোরোসিস হয়। কখনো কখনো সম্পূর্ণ পাতা বিবর্ণ হয়ে যায়। কাণ্ড দুর্বল এবং ছোট হয়।
সালফার (S): সালফার উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রোটিন, হরমোন ও ভিটামিনের গাঠনিক উপাদানই শুধু নয়, একই সাথে এটি কোষে পানির সমতা রক্ষা করে। সালফারের অভাবে পাতা হালকা সবুজ হয় এবং পাতায় লাল ও বেগুনি দাগ দেখা যায়। কচি পাতায় বেশি এবং বয়োবৃদ্ধ পাতায় কম ক্লোরোসিস হয়। সালফারের অভাবে মূল, কাণ্ড এবং পাতার শীর্ষ থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে টিস্যু মারা যেতে থাকে, যাকে ডাইব্যাক (dieback) বলে। কাণ্ডের মধ্যপর্ব ছোট হয় বলে গাছ খর্বাকৃতির হয়।
বোরন (B): বোরন কোষপ্রাচীরের কাঠামোর মধ্যে অবস্থান করে প্রাচীরটিকে তথা কোষটিকে দৃঢ়তা দেয়। বিপাক ক্রিয়ার বিভিন্ন বিক্রিয়ায় এর নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা রয়েছে। তাই বোরনের অভাবে পর্যাপ্ত দৃঢ়তা না পেয়ে এবং বিপাকে গোলযোগ হওয়ার কারণে উদ্ভিদের বর্ধনশীল অগ্রভাগ মরে যায়। কচি পাতার বৃদ্ধি কমে যায় এবং পাতা বিকৃত হয়, কাণ্ড খসখসে হয়ে ফেটে যায়। ফুলের কুঁড়ির জন্ম ব্যাহত হয়।
৯। BMI ও BMR সম্পর্কে লিখুন।
উত্তরঃ বিএমআর (BMR) এবং বিএমআই (BMI) (BMR and BMI)বিএমআর (Basal Metabolic Rate) পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় মানবশরীরে ব্যবহৃত শক্তির পরিমাণ নির্দেশ করে।
বিএমআই (Body Mass Index) মানবদেহের গড়ন ও চর্বির একটি সূচক নির্দেশ করে।
বিএমআর মান নির্ণয় (Calculating BMR)
মেয়েদের বিএমআর = 655 + (9.6× ওজন কেজি) + (1.8 × উচ্চতা সে.মি.) – (4.7 × বয়স বছর)
ছেলেদের বিএমআর =( 66 + (13.7 ওজন কেজি) +(5× উচ্চতা সে.মি.) – (6.8 × বয়স বছর))
ধরা যাক একজন নারীর বয়স 33 বছর, উচ্চতা 165 সে.মি. এবং ওজন 94 কেজি।
সুতরাং তার বিএমআর = 655+ (9.6 × 94)+ (1.8 x 165) (4.7 × 33)
= 655+ 902.4 +297 – 155.1
= 1699.3 ক্যালরি
বিএমআই মান নির্ণয় (Calculating BMI)
বিএমআই (BMI) = দেহের ওজন (কেজি)/ দেহের উচ্চতা (মিটার)2
উদাহরণ হিসেবে 125 সেমি (1.25 মিটার) উচ্চতা এবং 50 কেজি ওজনের একজন ব্যক্তির বিএমআই হচ্ছে 32।
জেনে রাখতে হবে
১ ফুট = ১২ ইঞ্চি
১ মিটার = ১০০ সে.মি
১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সে.মি
আবার ১ ইঞ্চি = ০.২৫৪ মিটার
১০। ১ ক্যালরি = কত জুল ?
উত্তরঃ 4.2 জুল ।
খাদ্য উপাদানে খাদ্য ক্যালরির পরিমাণ
৬ষ্ঠ অধ্যায় – সমন্বয় এবং নিয়ন্ত্রণ (Coordination and Control)
১। হরমোন কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে জৈব রাসায়নিক পদার্থ উদ্ভিদদেহে উৎপন্ন হয়ে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশ, বিভিন্ন অঙ্গ সৃষ্টি ইত্যাদি কাজ নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে হরমোন বা প্রাণরস বল ।
২। ফাইটোহরমোন কাকে বলে ?
উত্তরঃ উদ্ভিদদেহে উৎপাদিত যে রাসায়নিক পদার্থ উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশ, বিভিন্ন অঙ্গ সৃষ্টি ইত্যাদি প্রভাবিত করে তাকে ফাইটোহরমোন বলে। যেমন: অক্সিন (Auxin), জিবেরেলিন (Gibberellin), সাইটোকাইনিন (Cytokinin), অ্যাবসিসিক এসিড (Abscisic acid), ইথিলিন (Ethylene) ইত্যাদি।
৩। কিছু ফাইটোহরমোনের নাম ও বৈশিষ্ট্য লিখুন ।
উত্তরঃ ফাইটোহরমোনগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
অক্সিন (Auxin)
আবিষ্কারক (Discoverer) : চার্লস ডারউইন
বৈশিষ্ট্য (Characteristic) :
i) শাখা কলমে মূল গজায়।
ii) ফলের অকালে ঝরে পড়া রোধ করে।
iii) অভিস্রবন ও শ্বসন ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি ঘটায়।
জিবরেলিন (Gibberelin)
i) কান্ডের অতি বৃদ্ধি ঘটায়।
ii) বীজের সুপ্তাবস্থা, দৈর্ঘ্য কমায়।
iii) অঙ্কুরোদগমে কার্যকারিতা রয়েছে।
iv) পর্ব মধ্য গুলো দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়।
সাইটোকাইনিন (Cytokinin)
i) কোষের বৃদ্ধি ঘটায়।
ii) অঙ্গের বিকাশ সাধন করে।
iii) বীজ ও অঙ্গের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে।
iv) বার্ধক্য বিলম্বিত করতে সাহায্য করে ।
ইথিলিন (Ethylene)
এ হরমোনটি একটি গ্যাসীয় পদার্থ ।
বৈশিষ্ট্য (Characteristic) :
i) বীজ ও মুকুলের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে।
ii) চারা গাছের কান্ডের বৃদ্ধি ঘটিয়ে চারা গাছকে লম্বা হতে সাহায্য করে।
iii) ফুল ও ফল সৃষ্টির সূচনা করে।
iv) পাতা, ফুল ও ফলের ঝরে পড়া তরান্বিত করে।
v) কৃত্রিম উপায়ে ফল পাকাতে ব্যবহার হয়।
৪। প্রাণী হরমোনের নাম লিখুন।
উত্তরঃ পিটুইটারি গ্লান্ড (Pituitary Gland): গ্রোথ হরমোন (GH), থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (TSH), ফলিকল-স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH), অক্সিটোসিন (oxytocin) থাইরয়েড গ্লান্ড (Thyroid Gland): থাইরক্সিন (T4) এবং ট্রাইয়োডোথাইরোনিন (T3)
প্যারাথাইরয়েড গ্লান্ড (Parathyroid Gland): প্যারাথাইরয়েড (Parathyroid)
এড্রেনাল গ্লান্ড (Adrenal Gland): কর্টিসল (Cortisol), অ্যালডোস্টেরন (Aldosterone), অ্যাড্রেনালিন (Adrenaline) এবং নরড্রেনালিন (Nor Adrenaline)
অগ্ন্যাশয় (Pancreas): ইনসুলিন (Insulin) এবং গ্লুকাগন (Glucagon)
ডিম্বাশয় (Ovary): ইস্ট্রোজেন (Estrogen) এবং প্রোজেস্টেরন (Progesterone)
টেস্টিস (Testes): টেস্টোস্টেরন (Testosterone)
৫। এনজাইম কাকে বলে ?
উত্তরঃ এনজাইম এক প্রকার প্রোটিন, যা জীবদেহে বিভিন্ন বিক্রিয়ার হারকে তরান্বিত করে কিন্তু বিক্রিয়ার পর নিজেরা অপরিবর্তিত থাকে। একে জৈব অনুঘটক/ জৈব প্রভাবকও বলা হয়।
৬। কয়েকটি স্টেরয়েড হরমোনের নাম লিখুন।
উত্তরঃ স্টেরোয়েড -জাত হরমোন:এই ধরণের প্রাণরস কোলেস্টেরোল থেকে তৈরি হয়। যেমন: টেস্টোস্টেরন, কর্টিসল, ইস্ট্রোজেন ।
৭। ভার্নালাইজেশন কাকে বলে ?
উত্তরঃ শৈত্য প্রদানের মাধ্যমে উদ্ভিদের ফুল ধারণকে ত্বরান্বিত করার প্রক্রিয়াকে ভার্নালাইজেশন বলে।
৮। অভিকর্ষ উপলব্ধি (Geoperception) কী?উত্তরঃ ভ্রূণমূল বা ভ্রূণকাণ্ডের অগ্রাংশ অভিকর্ষের উদ্দীপনা অনুভব করতে পারে। একে অভিকর্ষ উপলব্ধি বলে।
৯। বায়োলজিক্যাল ক্লক কী?উত্তরঃ উদ্ভিদে আলো-অন্ধকারের ছন্দকে বায়োলজিক্যাল ক্লক বলে।
১০। ফেরোমন কী?উত্তরঃ কোনো পিঁপড়া খাদ্যের খোঁজ পেলে খাদ্য উৎস থেকে বাসায় আসার পথে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত করে। যাকে ফেরোমন বলে।
১১। স্নায়ুতন্ত্র কী?
উত্তর : যে তন্ত্রের সাহায্যে প্রাণী উত্তেজনায় সাড়া দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে, দেহের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ সাধন করে এবং তাদের কাজে সুসংবদ্ধতা আনয়ন ও শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে স্নায়ুতন্ত্র বলে।
১২। নিউরন কাকে বলে ?
উত্তরঃ মানুষের স্নায়বিক সমন্বয়ের প্রধান সমন্বয়কারী স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও কার্যকর একককে নিউরন বলে । নিউরনের দুটি প্রধান অংশ হচ্ছে কোষদেহ (cell body) এবং প্রলম্বিত অংশ বা নিউরাইট (neurite)। নিউরাইট দুধরনের অংশ নিয়ে গঠিত : বহু শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট ছোট ছোট প্রলম্বিত অংশ বা ডেনড্রাইট (dendrite) এবং শাখা-প্রশাখাবিহীন দীর্ঘ প্রলম্বিত অংশ বা অ্যাক্সন (axon)।
১৩। প্রতিবর্তী ক্রিয়া কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রতিবর্তী ক্রিয়া (Reflex Action) বলতে উদ্দীপনার আকস্মিকতা এবং তার কারণে স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়াকে বোঝায়। হঠাৎ করে আঙ্গুলে সুচ ফুটলে অথবা হাতে গরম কিছু পড়লে আমরা দ্রুত হাতটি উদ্দীপনার স্থান থেকে সরিয়ে নিই, এটি প্রতিবর্তী ক্রিয়ার ফল।
১৪। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে সব গ্রন্থি নালিবিহীন, তাই ক্ষরণ সরাসরি রক্ত বা লসিকার মাধ্যমে বাহিত হয়ে দূরবর্তী সুনির্দিষ্ট অঙ্গে ক্রিয়াশীল হয়, সে সব গ্রন্থিকে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বা অনাল গ্রন্থি (dustless gland) বলে। উদাহরণ- পিটুইটারি, থাইরয়েড, অ্যাড্রেনাল ইত্যাদি গ্রন্থি। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ক্ষরণকে হরমোন বলে।
১৫। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির নাম ও উৎপত্তিস্থল লিখুন।
১৬। করোটিক স্নায়ু কাকে বলে ?
উত্তরঃ যেসব স্নায়ু মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ থেকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি হয়ে করোটিকার বিভিন্ন ছিদ্রপথে বেরিয়ে দেহের সেগুলোকে করোটিক স্নায়ু ( Cranial Nerves ) বলে। মানুষের মস্তিষ্কে বারো জোড়া করোটিক স্নায়ু আছে।
১৭। করোটিক স্নায়ুর নাম, উৎপত্তিস্থল ও কাজ লিখুন ।
১৮। সুষুম্নাকাণ্ড বা স্পাইনাল কর্ড (Spinal cord) কাকে বলে?
উত্তরঃ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের পিছনের প্রলম্বিত অংশটি সুষুম্নাকাণ্ড । মেডুলা অবলংগাটার নিচের অংশ থেকে উদগত হয়ে এটি ফোরামেন ম্যাগনাম (foramen magnum) নামক করোটির পশ্চাৎভাগে অবস্থিত একটি বড় গোল ছিদ্রের মধ্য দিয়ে ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে মেরুদণ্ডের নিউরাল নালির মাধ্যমে পিছনে লাম্বার কশেরুকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। সুষুমাকাণ্ড মস্তিষ্কের মতো মেনিনজেস দিয়ে আবৃত থাকে।
৭ম অধ্যায় – প্রজনন (Reproduction)
১। প্রজনন কাকে বলে ? কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ প্রজনন একটি শারীরতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া, যে প্রক্রিয়ায় জীব তার নিজের অনুরূপ অপত্য বংশধর সৃষ্টি করে।
যে প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ এক বা একাধিক উদ্ভিদ তৈরি করে, তাকে উদ্ভিদ প্রজনন (Plant Reproduction) বলে।
প্রজননের প্রকারভেদ :-
জীবের প্রজনন দু’প্রকার। যথা-
(ক) অযৌন প্রজনন এবং
(খ) যৌন প্রজনন ।
অযৌন প্রজনন-
পুং (শুক্রাণু) ও স্ত্রী (ডিম্বাণু) গ্যামিটের মিলন ছাড়া জীবের প্রজননকে বলা হয় অযৌন প্রজনন (Asexual reproduction)।
এ ধরনের প্রজননে একসঙ্গে বহু সংখ্যক জীব উৎপন্ন হয়। একটি প্রজনক থেকে উৎপন্ন হয় বলে এ প্রক্রিয়ায় জীবে কোন বৈচিত্র আসে না। নিম্নশ্রেণির জীব, যেমন- শৈবাল, ছত্রাক, মস, ফার্ণ প্রভৃতিতে সাধারণত স্পোর উৎপাদনের মাধ্যমে অযৌন জননসম্পন্ন হয়।
তাছাড়া বিভাজন, মুকুল উৎপাদান পুনরুৎপাদন, অঙ্গজ জনন প্রভৃতি প্রতিনায় জীবকূলে সাধারণত অযৌন প্রজনন সম্পন্ন হয়।
যৌন প্রজনন-
দুটি ভিন্ন প্রকৃতির যথা পুং ও স্ত্রী গ্যামিট পরস্পরের সাথে মিলিত হয়ে যে প্রজনন ঘটে তাকে যৌন প্ৰজনন (Sexual reproduction) বলা হয়।
২। নিষেক ও দ্বি – নিষেক কাকে বলে ?
উত্তরঃ
নিষেকঃ স্ত্রী গ্যামিট ও পুরুষ গ্যামিটের যৌন মিলন প্রক্রিয়া হল নিষেক। পরাগধাণী থেকে পরাগরেণুর মাধ্যমে পুং গ্যামিট সচল হয়ে নিশ্চল স্ত্রী গ্যামিটের কাছে গমন করে এবং নিষেক ঘটায়।
দ্বিনিষেকক্রিয়া বা দ্বি-নিষেক (Double fertilization) : একই সময়ে ডিম্বাণুর সাথে একটি পুংগ্যামিটের মিলন ও সেকেন্ডারি নিউক্লিয়াসের সাথে অপর পুংগ্যামিটের মিলন প্রক্রিয়াকে দ্বিনিষেকক্রিয়া (double fertilization) বা দ্বিগর্ভাধান প্রক্রিয়া বলে। দ্বিনিষেক আবৃতবীজী উদ্ভিদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য (নগ্নবীজী উদ্ভিদের Ephedra-তে দ্বিনিষেক আবিস্কৃত হয় ১৯৯০ সালে- এটি ব্যতিক্রম)।
৩। পরাগায়ন কাকে বলে ? কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ ফুলের পরাগ সংযোগকে পরাগায়ন(Pollination) বলে।
পরাগায়ন(Pollination) দুই প্রকার :
i)স্ব-পরাগায়ন
ii)পর পরাগায়ন
i) স্ব-পরাগায়ন (Self-pollination):
একই ফুলে বা একই গাছের ভিন্ন দুটি ফুলের মধ্যে যখন পরাগায়ন ঘটে তখন তাকে স্বপরাগায়ন (Self-pollination) বলে। যেমন: ধুতরা, সরিষা।
স্বপরাগায়ন এর ফলে পরাগরেণুর অপচয় কম হয়।
গড় আয়ু ও অভিযোজন ক্ষমতা কম।
ii) পর পরাগায়ন (cross-pollination): একই প্রজাতির দুটি ভিন্ন উদ্ভিদের ফুলের মধ্যে যখন পরাগ সংযোগ ঘটে তখন তাকে পর পরাগায়ন (cross-pollination) বলে। যেমন: শিমুল, পেঁপে।
এদের পরাগরেণুর অপচয় বেশি হয়।
গড় আয়ু ও অভিযোজন ক্ষমতা বেশি।
৪। গ্যামেটোজেনেসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় জনন অঙ্গের (শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয়) প্রাইমর্ডিয়াল জননকোষ (জনন মাতৃকোষ) থেকে গ্যামেট (শুক্রাণু ও ডিম্বাণু) উৎপন্ন হয়ে নিষেকে সক্ষম হয়ে উঠে তাকে গ্যামেটোজেনেসিস (গ্রিক gamos = জননকোষ এবং genesis = উৎপত্তি হওয়া) বলে।
৫। স্পার্মাটোজেনেসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ পূর্ণাঙ্গ শুক্রাণু সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে স্পার্মাটোজেনেসিস (spermatogenesis: গ্রিক sperma = শুক্রাণু + genesis = জনন বা সৃষ্টি) বলে।
৬। উওজেনেসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ ডিম্বাশয়ের অভ্যন্তরে ডিম্বাণু সৃষ্টির পদ্ধতিকে উওজেনেসিস (oogonesis; গ্রিক oon = ডিম্বাণু + genesis = সৃষ্টি বা জনন) বলে।
৭। প্রতিটি পরিপক্ক ডিম্বানুকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ?
উত্তরঃ প্রতিটি পরিপক্ক ডিম্বাণুকে তিনটি অংশে ভাগ করা যায়, যথা: ডিম্বাণু ঝিল্লি, নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম।
৮। ফুল কাকে বলে ? এর বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তরঃ প্রজননের জন্য রূপান্তরিত বিশেষ বিটপকে ফুল(Flower) বলে।
ক) একটি আদর্শ ফুলের পাঁচটি স্তবকের মধ্যে দুটি স্তবক- পুং স্তবক ও স্ত্রী স্তবক সরাসরি প্রজননে অংশ নেয়। অন্য স্তবক গুলো সরাসরি অংশ নেয় না। কিন্তু প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খ) যে ফুলে পাঁচটি স্তবকই উপস্থিত থাকে তাকে সম্পূর্ণ ফুল বলে। যেমন: ধুতুরা, জবা।
পাঁচটি স্তবকের যেকোন একটি না থাকলে তাকে অসম্পূর্ণ ফুল বলে। যেমন: লাউ, কুমড়া।
গ) বৃন্তযুক্ত ফুলকে সবৃন্তক ফুল বলে। যেমন: জবা, কুমড়া।
ঘ) বৃন্তহীন ফুলকে অবৃন্তক ফুল বলে। যেমন: হাতিশূঁড়।
৯। একটি আদর্শ ফুলের বিভিন্ন অংশ বর্ণনা করুন ।
উত্তরঃ ফুলের বিভিন্ন অংশ (Different parts of the flower):a) পুষ্পাক্ষ (Thalmus):
পুষ্পাক্ষ সাধারণত গোলাকার এবং ফুলের বৃন্ত শীর্ষে অবস্থান করে। পুষ্পাক্ষের উপর বাকি চারটি স্তবক পরপর সাজানো থাকে।
পুষ্পাক্ষের উপর বাকী চারটি স্তবক পরপর সাজানো থাকে।
b) বৃতি (calyx):
ফুলের বাইরের স্তবককে বৃতি বলে।
সবুজ বৃতি খাদ্য প্রস্তুত কাজে অংশ নেয়।
বৃতির প্রধান কাজ ফুল এর ভেতরের অংশগুলোকে রোদ-বৃষ্টি ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করা।
রঙ বেরঙের বৃতি পরাগায়নে সাহায্য করে।
c) দলমণ্ডল (Corolla):
এটি বাইরের দিক থেকে দ্বিতীয় স্তবক।
প্রতিটি খণ্ডকে দল বা পাপড়ি বলে।
দলমণ্ডল ফুলের অত্যাবশ্যকীয় অংশগুলোকে রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে।
উজ্জ্বল, ঝলমলে রঙ্গিন দলমন্ডল পোকামাকড় এবং পশুপাখিকে আকর্ষণ করে এবং পরাগায়নে সহায়তা করে।
d) পুংস্তবক (Androecium):
ফুলের তৃতীয় স্তবক।
স্তবকের প্রতিটি অংশকে পুংকেশর বলে।
পরাগধানী ও পুংদণ্ড সংযোগকারী অংশকে যোজনী বলে।
পুং জননকোষ সরাসরি জনন কাজে অংশগ্রহণ করে।
যখন পরাগধানী একগুচ্ছ থাকে তখন তাকে যুক্তধানী বা সিনজেনিয়াস বলে।
মুক্ত অবস্থায় এবং পূর্ণ কেশর দলমন্ডলের সাথে যুক্ত থাকলে তাকে দললগ্ন পুং পুস্তক বলে। যেমন: ধুতুরা।
পুংকেশরের বিভিন্ন প্রকার সজ্জা (ক) একগুচ্ছ, (খ) দ্বিগুচ্ছ, (গ) বহুগুচ্ছ, (ঘ) যুক্তধানী এবং (ঙ) দললগ্ন
e) স্ত্রীস্তবক (Gynoecium):
স্ত্রী স্তবক বা গর্ভকেশর এর অবস্থান ফুলটির কেন্দ্রে থাকে।
স্ত্রী স্তবক এক বা একাধিক গর্ভপত্র নিয়ে গঠিত।
একটি গর্ভপত্রের তিনটি অংশ। যথা:-
১। গর্ভাশয়
২। গর্ভদণ্ড
৩। গর্ভমুণ্ড
গর্ভাশয় এর ভিতরে এক বা একাধিক ডিম্বক বিশেষ নিয়মের সজ্জিত থাকে। এসব ডিম্বকের মধ্যে স্ত্রী প্রজনন কোষ বা ডিম্বাণু সৃষ্টি হয়।
পুষ্পমঞ্জরি (inflorescence)
অনেক গাছের ছোট একটি শাখায় ফুলগুলো বিশেষ একটি নিয়মে সাজানো থাকে। ফুলসহ এই শাখাকে পুষ্পমঞ্জরি বলে।
১০। পার্থেনোকার্পি কী ?
উত্তরঃ হরমোন প্রয়োগে বীজহীন ফল উৎপাদন প্রক্রিয়াকে পার্থেনোকারপি বলে।
১১। পরাগরেণু বা মাইক্রোস্পোর কাকে বলে ?
উত্তরঃ পরাগধানীর অভ্যন্তরে ডিপ্লয়েড মাইক্রোস্পোর মাতৃকোষ থেকে সৃষ্ট হ্যাপ্লয়েড জনন কোষকে মাইক্রোস্পোর বা পরাগরেণু বলে।
১২। ট্যাপেটাম কী ?
উত্তরঃ : মাইক্রোস্পোরোজেনেসিস এর সময় একে আর্কিস্পোরিয়াল কোষ বিভাজিত হয়ে পরিধির দিকে দেয়ালকোষ এবং কেন্দ্রের দিকে প্রাথমিক জনন কোষে পরিণত হয়। দেয়াল কোষপ্রাচীরের সবচেয়ে ভেতরের স্তরকে ট্যাপেটাম বলে।
১৩। ডিম্বক কাকে বলে ?
উত্তরঃ গর্ভধারণের পর ডিম্বাশয়ের যে অংশ বীজে পরিণত হয় তাকে ডিম্বক বা মেগাস্পোরাঞ্জিয়াম বলে।
১৪। অমরা কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে বিশেষ অঙ্গের মাধ্যমে মাতৃ জরায়ুতে ক্রমবর্ধমান ভ্রূণ ও মাতৃ জরায়ু টিস্যুর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হয় তাকে অমরা বা গর্ভফুল বলে।
১৫। রজঃচক্র কাকে বলে ?
উত্তরঃ স্ত্রীলোকের সমগ্র যৌন জীবনকালে প্রতি ২৮ দিন (২৪-৩২ দিন) অন্তর ৩-৫ দিন ধরে জরায়ুর অন্তঃস্থ স্তর বা এন্ডোমেট্রিয়ামের অবক্ষয়ের ফলে রজঃস্রাব এবং পরে দেহের অন্যান্য জননাঙ্গসমূহের যেমন-ডিম্বাশয়, জরায়ু ইত্যাদির যে পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন ঘটে তাকে রজঃচক্র বলে। প্রথম রজচক্রকে মেনার্কি (menarche) এবং যৌন জীবনকালের শেষে রজঃচক্রের নিবৃত্তি বা বন্ধ হওয়াকে মেনোপজ (menopause) বলে।
১৬। ক্লিভেজ সম্পর্কে লিখুন।
উত্তরঃ ক্লিভেজ (Cleavage):যে প্রক্রিয়ায় জাইগোট মাইটোসিস বিভাজনের মাধ্যমে বিভাজিত হয়ে অসংখ্য ভ্রূণকোষ সৃষ্টি করে তাকে ক্লিভেজ বা সম্ভেদ বলে। ক্লিভেজে সৃষ্ট ভ্রূণের প্রতিটি কোষকে বলে ব্লাস্ট্রোমিয়ার (blastormere)। ক্লিভেজ প্রক্রিয়ায় ক্রমাগত কোষ বিভাজনের ফলে জাইগোটটি বহুকোষী নিরেট গোলকে পরিণত হয়। এর নাম মরুলা (morula)। মরুলার কোষগুলো ক্রমশ একস্তরে সজ্জিত হয় এবং এর ভিতরে একটি তরল পূর্ণ গহ্বর সৃষ্টি হয়। ভ্রূণের এ দশাকে ব্লাস্টুলা (blastula) বলে। ব্লাস্টুলার প্রাচীরকে ব্লাস্টোডার্ম (blastoderm) এবং তরল পূর্ণ গহ্বরকে ব্লাস্টোসিল (blastocoel) বলে। ভ্রূণ ব্লাস্টুলায় পরিণত হওয়ার সাথে সাথে ক্লিভেজ দশার পরিসমাপ্তি ঘটে।
১৬। ফিটাস কাকে বলে ?
উত্তরঃ জাইগোট সৃষ্টির ৭ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভস্থ ভ্রুনকে মনুষ্যরুপে সনাক্ত করা হয়। ভ্রুনের এ অবস্থাকে ফিটাস (fetus) বলে।
১৭। নিষেকের পর গর্ভাশয় ও ডিম্বকের বিভিন্ন পরিবর্তন লিখুন।
উত্তরঃ
৮ম অধ্যায় – জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশবিদ্যা (Biodiversity and Ecology)
১। জীববৈচিত্র্য কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রকৃতির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন অঞ্চলে বংশবিস্তার করে টিকে থাকার উদ্দেশ্যে জীবের বিভিন্ন প্রজাতির বহিঃঅঙ্গসংস্থান ও অন্তঃঅঙ্গসংস্থান, আকার, আকৃতি, প্রকৃতি ইত্যাদির প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করে অভিযোজিত হওয়ার ফলে জীবদের মধ্যে যে বৈচিত্র্যময়তার উদ্ভব ঘটে তাকে জীব বৈচিত্র্য ( Biodiversity )বলে।
২। কয়েকটি বিদেশি উদ্ভিদের নাম লিখুন ।
উত্তরঃ রেইন ট্রি, কৃষ্ণচূড়া, সেগুন, আকাশমনি, ইউক্যালিপটাস , মেহগনি ।
৩। ইন – সিটু ও এক্স – সিটু সংরক্ষণ কাকে বলে ?
উত্তরঃ . বন্যপ্রাণি স্বস্থানে সংরক্ষণ বা ইনসিটু সংরক্ষণ (Insitu
Conservation of wildlife) :-
যে পরিবেশে কোন প্রজাতির জন্ম হয় সেখানেই তাকে সংরক্ষণ করাকে ইনসিটু কনজারভেশন বলা হয়।
উদাহরণ – ইকোপার্ক, সংরক্ষিত বন এবং গেম রিজার্ভ হল ইন-সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ।
এক্স-সিটু কনজারভেশন (Ex-Situ Conservation) :-
জীববৈচিত্র্যের উপাদানসমূহকে তাদের মূল বাসস্থান বা প্রাকৃতিক
পরিবেশের বাইরে বাঁচিয়ে রাখাই হলো এক্স-সিটু কনজারভেশন।
উদাহরণ – উদ্ভিদ উদ্যান হল এক্স-সিটু সংরক্ষণের একটি উদাহরণ ।
৪। ইকোপার্ক কাকে বলে ?
উত্তরঃ একটি প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত এলাকা
যেখানে পর্যটকরা প্রকৃতিবান্ধব পরিবেশে নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে এবং একই সাথে উক্ত এলাকার জীববৈচিত্র্যও সংরক্ষিত হবে তা ইকোপার্ক নামে পরিচিত। যেমন- সীতাকুন্ড ইকোপার্ক (চট্টগ্রাম), মধুটিলা ইকোপার্ক ( শেরপুর ) মাধবকুন্ড ইকোপার্ক (মৌলবীবাজার), বঙ্গবন্ধু যমুনা ইকোপার্ক প্রভৃতি।
৫। সাফারি পার্ক কী ?
উত্তরঃ সাফারি পার্কে বন্যপ্রাণীসমূহ উন্মুক্ত
অবস্থায় বনজঙ্গলে বিচরণ করে এবং মানুষ সতর্কতার সাথে চলমান যানবাহনে আবদ্ধ জীবজন্তুসমূহ পরিদর্শন করে থাকে। অর্থাৎ সাফারি পার্ক হলো চিড়িয়াখানার বিপরীত এবং একে 200 Without Cages বলা হয়। যেমন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক (ডুলাহাজারা) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক (গাজীপুর)।
৬। অভয়ারণ্য কী ?
উত্তরঃ যে সংরক্ষিত অঞ্চলে গাছপালার সঙ্গে বিশেষ কোনো বন্য প্রজাতির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা আছে, তাকে অভয়ারণ্য বলে।
বাংলাদেশে ৮ টি অভয়ারণ্য আছে । কয়েকটি নাম দেওয়া হলো –
হাজারিখিল অভয়ারণ্য – চট্টগ্রাম
সুন্দরবন বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য – বাগেরহাট
পাবলাখালি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য – পার্বত্য খাগড়াছড়ি
৭। সীড ব্যাংক কী ?
উত্তরঃ বীজের সংরক্ষণাগারকে। বীজ ব্যাংক বলে। পুষ্পক উদ্ভিদের প্রায় ৭০% বীজ শুকিয়ে ২০০ সে. তাপমাত্রায় শতাব্দীর পর শতাব্দী অঙ্কুরোদগম ক্ষমতাসমূহ সংরক্ষণ করা যায়। যেমন- ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি।
৮। ম্যানগ্রোভ বন কাকে বলে ?
উত্তরঃ সাধারণত যেসব বনাঞ্চল উপকূলীয়
অঞ্চলে জোয়ারভাটার মধ্যে গড়ে উঠে সেসব বনাঞ্চলকে ম্যানগ্রোভ বন বা উপকূলীয় বনাঞ্চল বলা হয়। যেমন: বাংলাদেশের সুন্দরবন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন বলে।
৯। বাস্তুতন্ত্র কাকে বলে ?
উত্তরঃ বাস্তুতন্ত্র (Ecosystem) হচ্ছে জৈব, অজৈব পদার্থ ও বিভিন্ন জীবসমন্বিত এমন প্রাকৃতিক একক যেখানে বিভিন্ন জীবসমষ্টি পরস্পরের সাথে এবং তাদের পারিপার্শ্বিক জৈব ও অজৈব উপাদানের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে একটি জীবনধারা গড়ে তোলে।
১০। উৎপাদক কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে-সমস্ত সবুজ উদ্ভিদ (ক্লোরােফিলযুক্ত) সূর্যালােক গ্রহণ করে সালােকসংশ্লেষ পদ্ধতিতে নিজেদের দেহে খাদ্য উৎপন্ন করে খাদ্যশৃঙ্খলের ভিত্তি রচনা করে, তাদের উৎপাদক বলে।
১১। বিয়োজক কাকে বলে ?
উত্তরঃ বিয়োজক কাকে বলে যেসব অণুখাদক ( আণুবীক্ষণিক ব্যাকটেরিয়া , ছত্রাক প্রভৃতি ) তাদের শরীরের এনজাইমকে মৃত উদ্ভিদ ও জীবদেহের ওপর ঢেলে পচিয়ে দেয় এবং মৃত জীবদেহের কলায় অবস্থিত জটিল যৌগগুলিকে ভেঙে কিছুটা
নিজেদের পুষ্টির জন্য শোষণ করে ও বাকি অংশকে সরল যৌগে (লবণ , জৈব বা অজৈব পদার্থ ) পরিণত করে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেয় তাদেরকে বিয়ােজক বা মৃতজীবী বলা হয় ।
১২। ফাইটোপ্লাংটন ও জুয়োপ্লাংটন কী ?
ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন হল ক্ষুদ্র প্রবাহিত উদ্ভিদ যা তাদের নিজস্ব খাদ্য সালোকসংশ্লেষ করে। সবুজ শেত্তলাগুলি যা আপনি জলের দেহের পৃষ্ঠে দেখতে পান তা একটি ভাল উদাহরণ। জুপ্ল্যাঙ্কটন হল ক্ষুদ্র প্রবাহমান প্রাণী যারা গাছপালা এবং প্রাণী খায় এবং তাদের খাদ্যের জন্য ক্ষয়কারী পদার্থ ।
১৩। বাংলাদেশের ৪ টি বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম লিখুন।
উত্তরঃ বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদের নাম:
১. টালিপাম (Corypha taliera Roxb.)
২. মল্লিকা বঝাঁজি (Aldrovanda vesiculosa L.)
৩. ক্ষুদে বড়লা (Knema bengalensis)
৪. রোটেলা (Rotala simpliciuscula)
৫. কোরুদ (Licuala peltata)
১৪। বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় ৪ টি প্রাণীর নাম লিখুন।
উত্তরঃ
১. ঘড়িয়াল (Gavialis gangeticus)
২. মিঠাপানির কুমির (Crocodylus palustris)
৩. রাজশকুন (Torgos calvus)
৪. নীল গা (Boselaphus tragocamelus)
৫. শুশুক (Platanista gangetica)
১৫। সুন্দরবনের ৪ টি উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম লিখুন।
উত্তরঃ
১. সুন্দরী- Heritiera fomes
২. গোলপাতা- Nipa fruticans
৩. গরান- Ceriops roxburghii
৪. আমুর- Amoora cucuilara
১৬। সুন্দরবনের ৫ টি প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম লিখুন।
উত্তরঃ
১. Panthera tigris (রয়েল বেঙ্গল টাইগার)
২. Cervus axis (চিত্রা হরিণ)
৩. Mantiacus mentjak (মায়া হরিণ)
8. Scotophilus kohli (হলদে বাদুড়)
৫. Naja naja (গোখরা)
১৭। খাদ্যশৃঙ্খল বা ফুড চেইন কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বাস্তুতন্ত্রে খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের ভিত্তিতে উৎপাদক স্তর থেকে খাদক স্তরের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত ধাপে ধাপে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জীবগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্যের মাধ্যমে শক্তির শৃঙ্খলিত ধারাবাহিক প্রবাহকেই খাদ্যশৃঙ্খল বলা হয়। যেমন-
খাদ্যশৃঙ্খল: ঘাস – ঘাসফড়িং – গিরগিটি – বাজপাখি
১৮। খাদ্যজাল কাকে বলে?
উত্তরঃ বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে বিভিন্ন খাদ্য-খাদক সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা খাদ্যশৃঙ্খলগুলি নানাভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হলে, পরিবেশে বিভিন্ন খাদ্যশৃঙ্খলের মধ্যে খাবারের আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে যে জাল গড়ে ওঠে তাকে খাদ্য জাল বা খাদ্যজালিকা বা ফুড ওয়েব (Food Web) বলে।
১৯। ইকোলজিক্যাল পিরামিড কাকে বলে ?
উত্তরঃ কোন এলাকায় খাদ্যশৃঙ্খলের বিভিন্ন স্তরের প্রাণীদের সংখ্যা, তাদের ভর ও খাদ্য গ্রহনের পরে এক স্তর থেকে পরের স্তরে কতটুক শক্তি প্রবাহিত হচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে উৎপাদক থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্তরের খাদক পর্যন্ত প্রাণীদের কে সাজালে একটি সুন্দর পিরামিড আকারের নকশা পাওয়া যায়। একে ইকোলজিক্যাল পিরামিড বলে।
২০। বাস্তুতন্ত্রের উপাদানগুলো লিখুন।
উত্তরঃ অজীব এবং জীব এই দুটি প্রধান উপাদান নিয়ে বাস্তুতন্ত্র গঠিত।
অজীব উপাদান : বাস্তুতন্ত্রের প্রাণহীন সব উপাদান অজীব উপাদান নামে পরিচিত। এই অজীব উপাদান আবার দুই ধরনের। (ক) অজৈব বা ভৌত উপাদান এবং (খ) জৈব উপাদান।
জীব উপাদান : পরিবেশের সকল জীবন্ত অংশই বাস্তুতন্ত্রের জীব উপাদান
বাস্তুতন্ত্রকে কার্যকরী রাখার জন্য এ সকল জীব যে ধরনের ভূমিকা রাখে তার উপর ভিত্তি করে এসব জীব উপাদানকে (ক) উৎপাদক, (খ) খাদক এবং (গ) বিযোজক এ তিন ভাগে ভাগ করা হয়।
প্রথম স্তরের খাদক : যে সকল প্রাণী উদ্ভিদভোজী তারা প্রথম স্তরের খাদক। এরা তৃণভোজী নামেও পরিচিত। তৃণভোজী প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে ছোট কীটপতঙ্গ থেকে শুরু করে অনেক বড় প্রাণী। যেমন— গরু, ছাগল ইত্যাদি।
দ্বিতীয় স্তরের খাদক : যারা প্রথম স্তরের খাদকদেরকে খেয়ে বাঁচে। যেমন- পাখি, ব্যাঙ, মানুষ ইত্যাদি। এরা মাংসাশী বলেও পরিচিত।
তৃতীয় স্তরের খাদক বা সর্বোচ্চ খাদক : যারা দ্বিতীয় স্তরের খাদকদের খায়। যেমন- কচ্ছপ, বক, ব্যাঙ, মানুষ ইত্যাদি। এদের মধ্যে কোনো কোনো প্রাণী আবার একাধিক স্তরের খাবার খায়। এদেরকে বলা হয় সর্বভুক। আমরা যখন ডাল, ভাত, আলু ইত্যাদি খাই, তখন আমরা প্রথম স্তরের খাদক। আবার আমরা যখন মাছ, মাংস খাই, তখন আমরা দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্তরের খাদক।
৯ম অধ্যায় – জেনেটিক্স এবং বিবর্তন (Genetics and Evolution)
১। জেনেটিক্স বা বংশগতিবিদ্যার জনক কে ? জিনতত্ব বা জেনেটিক্স কী ?
উত্তরঃ গ্রেগর জোহান মেন্ডেল ।
জিনতত্বঃ – জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জিনের গঠন, কাজ, বংশপরম্পরায় সঞ্চারণের ধরণ ও ফলাফল সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় তাকে বংশগতিবিদ্যা বা জিনতত্ত্ব বা জেনেটিক্স (Genetics) বলে। উইলিয়াম বেটসন (William Bateson, 1861–1926) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম Genetics শব্দ প্রচলন করেন।
২। মেন্ডেল কেন মটরশুঁটি গাছ নির্বাচন করেছিলেন ?
উত্তরঃ জোহান গ্রেগর মেন্ডেল ব্যক্তি জীবনে একজন ধর্মযাজক হলেও তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন খাঁটি বিজ্ঞানী ছিলেন। বংশগতিবিদ্যা পরীক্ষার জন্য তিনি তার মঠের বাগানে নিয়ন্ত্রিত-পরাগায়নের মাধ্যমে সংকরায়ণ (Hybridization) করার জন্য মটরশুঁটি উদ্ভিদকে নির্বাচন করেন এবং 1856 সাল থেকে তাঁর গবেষণা শুরু করেন। মেন্ডেল তাঁর পরীক্ষার জন্য মটরশুঁটি গাছকে নমুনা হিসেবে মনোনীত করার পিছনে বেশ কিছু কারণ ছিল। যেমন-
ক) মটরশুঁটি গাছ একবর্ষজীবী হওয়ায় খুব কম সময়ের মধ্যেই সংকরায়ণ পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়।
খ) এটি একটি উভলিঙ্গী উদ্ভিদ এবং স্বপরাগায়নের মাধ্যমে যৌন প্রজনন সম্পন্ন করে।
গ) ফুলগুলো আকারে বড়ো হওয়ায় মটরশুঁটি গাছে অতি সহজেই সংকরায়ণ ঘটানো যায়। ঘ) পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবককে ঘিরে দলমণ্ডল (Corolla) এমনভাবে সাজানো থাকে যে পরনিষেকের (Cross fertilization) কোনো সম্ভাবনা থাকে না। ফলে বিভিন্ন জাতের মটরশুঁটি উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যগুলো খাঁটি বা বিশুদ্ধ অবস্থায় থাকে।
ঙ) মটরশুঁটি গাছে একাধিক সুস্পষ্ট তুলনামূলক বিপরীত বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তাই অপত্য বংশে কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের স্পষ্ট প্রকাশ পরীক্ষার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
চ) সংকরায়ণে সৃষ্ট বংশধরগুলো উর্বর (fertile) প্রকৃতির হওয়ায় সেগুলো নিয়মিত বংশবৃদ্ধি করতে পারে।
৩৷ মেন্ডেলের সুত্র দুটি লিখুন ।
উত্তরঃ
ক) প্রথম সূত্র (Mendel’s First Law):
সংকর জীবে বিপরীত বৈশিষ্টের ফ্যাক্টরগুলো (জিনগুলো) মিশ্রিত বা পরিবর্তিত না হয়ে পাশাপাশি অবস্থান করে এবং জননকোষ (গ্যামেট) সৃষ্টির সময় পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে ভিন্ন ভিন্ন জননকোষে প্রবেশ করে।
এ সূত্রকে মনোহাইব্রিড ক্রস সূত্র (Law of Monohybrid cross) বা জননকোষ শুদ্ধতার সূত্র (Law of Purity of gametes) বা পৃথকীকরণ সূত্র (Law of Segregation)-ও বলা হয়।
খ) দ্বিতীয় সূত্র (Mendel’s Second Law):
দুই বা ততোধিক জোড়া বিপরীত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জীবের মধ্যে ক্রস ঘটালে প্রথম সংকর পুরুষে (F1) কেবলমাত্র প্রকট বৈশিষ্ট্যগুলোই প্রকাশিত হবে, কিন্তু জননকোষ (গ্যামেট) উৎপাদনকালে বৈশিষ্ট্যগুলো জোড়া ভেঙ্গে পরস্পর থেকে স্বতন্ত্র বা স্বাধীনভাবে বিন্যস্ত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন জননকোষে প্রবেশ করবে।
এ সূত্রকে স্বাধীনভাবে মিলনের বা বন্টনের সূত্র (Law of Independent Assortment)-ও বলা হয়।
৪। অসম্পূর্ণ প্রকটতা কাকে বলে ?
উত্তরঃ বিপরীত বৈশিষ্ট্যযুক্ত দু’টি জীবের সংকরায়ণে প্রকট জিনটি সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ না পাওয়ার প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যবর্তী একটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। এই ঘটনাকে অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলে।
৫। অতি গুরুত্বপূর্ণ অনুপাত –
প্রথম সূত্র
ফিনোটাইপিক অনুপাত ৩:১
জিনোটাইপিক অনুপাত ১:২:১
অপর নাম
– মনোহাইব্রিড ক্রস সূত্র
– জননকোষ বিশুদ্ধতার সূত্র
– পৃথকীকরণ সূত্র
দ্বিতীয় সূত্র
অনুপাত ৯:৩:৩:১
অপর নাম
– ডাইহাইব্রিড ক্রস সূত্র
– স্বাধীনভাবে মিলনের/বন্টনের সূত্র
প্রথম সূত্রের ব্যতিক্রম – ৩ টা
– লিথাল জিন
– অসম্পূর্ণ প্রকটতা
– সমপ্রকটতা
লিথাল জিন
অনুপাত ২:১
অপর নাম
– মারণ জিন
সমপ্রকটতা
অনুপাত ১:২:১
অসম্পূর্ণ প্রকটতা
অনুপাত ১:২:১
দায়ী জিন
– ইন্টারমিডিয়েট জিন
দ্বিতীয় সূত্রের ব্যতিক্রম – ২ টা
– পরিপূরক জিন
– এপিস্ট্যাসিস
i) প্রকট এপিস্ট্যাসিস
ii) দ্বৈত প্রচ্ছন্ন এপিস্ট্যাসিস
পরিপূরক জিন
অনুপাত ৯:৭
অপর নাম
– সহ প্রকটতা (সম প্রকটতা না )
প্রকট এপিস্ট্যাসিস
অনুপাত ১৩:৩
ট্রিক: প্রকট মানেই বেশি, তাই অনুপাতও বেশি (১৩)
দ্বৈত প্রচ্ছন্ন এপিস্ট্যাসিস
অনুপাত ৯:৭
পলিজেনিক ইনহেরিটেন্স/ বহুজিনীয় উত্তরাধিকার
অনুপাত ১:৪:৬:৪:১
৬। প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে বৈশিষ্ট্য বিপরীতধর্মী অন্য কোনো বৈশিষ্ট্যের প্রকাশে বাধা দেয় কিন্তু নিজে প্রকাশ পায় তাকে প্রকট বৈশিষ্ট্য বলে।
যে বৈশিষ্ট্য প্রকট বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতিতে প্রকাশিত হয় না বা সুপ্ত অবস্থায় থাকে তাকে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য বলে।
৭। এপিস্ট্যাসিস কী ?
উত্তরঃ ভিন্ন ভিন্ন লোকাসে অবস্থিত নন-অ্যালিলিক (non- allelic) জিন যখন অন্য জিনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশে বাধাদান করে তখন এ প্রপঞ্চকে (phenomenon ) এপিস্ট্যাসিস (Epistasis) বলা হয়।
৮। লোকাস কী ?
উত্তরঃ ক্রোমাজোমের যে স্থানে জীন অবস্থান করে, তাকে লোকাস (Locus) বলে।
৯। লিথাল জিন কাকে বলে ?
উত্তরঃ ক্রোমাজোমের যে স্থানে জীন অবস্থান করে, তাকে লোকাস (Locus) বলে।
১০। লিংকেজ কী ?
উত্তরঃ “একই ক্রোমোজোমে পাশাপাশি অবস্থিত। জিনগুলোর এক সাথে অপরিবর্তিত থেকে পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে সঞ্চারিত হওয়ার প্রবণতাকে লিংকেজ বলে।”
১১। ক্রসিংওভার কী ?
উত্তরঃ মায়োসিস-১ এর প্যাকাইটিন উপ-পর্যায়ে এক জোড়া সমসংস্থ ক্রোমোসোমের দুটি নন-সিস্টার ক্রোমাটিড-এর মধ্যে বিনিময় হওয়াকে ক্রসিং ওভার বলে। ক্রসিং ওভারের ফলে ক্রোমোসোমের জিনসমূহের মূল বিন্যাসের পরিবর্তন ঘটে এবং লিঙ্কড জিনসমূহের মধ্যে নতুন সমন্বয় (combination) তৈরি হয়।
১২। পলিজেনিক ইনহেরিটেন্স কী ?
উত্তরঃ ভিন্ন ভিন্ন লোকাসে অবস্থিত নন-অ্যালিলিক জিনের একটি গ্রুপ সম্মিলিতভাবে কোনো জীবের একটি পরিমাণগত বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করলে তখন সেই জিন-গ্রুপকে পলিজিন (polygene) বলে। পলিজিনে নিয়ন্ত্রিত পরিমাণগত বৈশিষ্ট্যের বংশগতিকে পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্স বলা হয়।
১৩। বর্ণান্ধতা কী ?
উত্তরঃ লিঙ্গ সংযোজিত যে বংশগত রোগের মিউট্যান্ট প্রচ্ছন্ন জিনের প্রভাবে মানুষ বিভিন্ন রঙের বিশেষত লাল-সবুজ রঙের পার্থক্য বুঝতে পারে না বা চিনতে ভুল করে সেই প্রকার অস্বাভাবিকতা কে বর্ণান্ধতা বলা হয়।
১৪। বংশগত কিছু রোগের নাম বলুন।
উত্তরঃ বংশগত রোগগুলো হচ্ছে—
ক. থ্যালাসেমিয়া
খ. হিমোফিলিয়া
গ. বর্নান্ধতা
১৫। জিনোটাইপ ও ফিনোটাইপ কাকে বলে ?
উত্তরঃ
জিনোটাইপ হল একটি জীবের জিনের সেট, যা তার বংশগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে।
ফিনোটাইপ হল একটি জীবের বাইরের দৃশ্যমান বৈশিষ্ট্য, যা তার জিনোটাইপ এবং পরিবেশের সমন্বয়ে গঠিত।
১৬। ABO ব্লাড গ্রুপ কী ?
উত্তরঃ রক্তকণিকায় কতকগুলো অ্যান্টিজেন (antigen)-এর উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির উপর নির্ভর করে বিজ্ঞানী ল্যান্ডস্টেইনার মানুষের রক্তের যে শ্রেণিবিন্যাস করেন, তা ABO ব্লাড গ্রুপ বা সংক্ষেপে ব্লাড গ্রুপ (blood group) নামে পরিচিত।
১৭। Rh factor / রেসাস ফ্যাক্টর কী ?
উত্তরঃ মানুষের লোহিত কণিকার ঝিল্লিতে রেসাস বানরের লোহিত কণিকার ঝিল্লির মতো এক প্রকার অ্যান্টিজেন রয়েছে। রেসাস বানরের নাম অনুসারে ঐ অ্যান্টিজেনকে রেসাস ফ্যাক্টর (Rhess factor) বা সংক্ষেপে Rh factor বলে।
১৮। জিন কী ?
উত্তরঃ জিন হলো DNA অণুর একটি খন্ডাংশ যা জীবের বংশগতির মৌলিক ভৌত ও কার্ষিক একক এবং বংশ থেকে বংশান্তরে জীবের বৈশিষ্ট্য বহন করে।
১৯। অ্যালিল কী ?
উত্তরঃ সমসংস্থ (homologous) ক্রোমোজোম জোড়ের নির্দিষ্ট লোকাসে অবস্থানকারী নির্দিষ্ট জিন-জোড়ার একটিকে অপরটির অ্যালিল বলে।
২০। হোমোজাইগাস কী ?
উত্তরঃ কোনো জীবে একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী অ্যালিলদুটি সমপ্রকৃতির হলে, তাকে হোমোজাইগাস বলে। যেমন-BB= কালো পশম, bb= বাদামী পশম ইত্যাদি।
২১। হেটারোজাইগাস কী ?
উত্তরঃ কোনো জীবে একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী অ্যালিলদুটি অসমপ্রকৃতির হলে, তাকে হেটারোজাইগাস জীব বলে। যেমন T এবং t অর্থাৎ Tt-ধারী জীবটি লম্বা হলেও তা হেটারোজাইগাস।
২২। মনোহাইব্রিড ক্রস কাকে বলে ?
উত্তরঃ জীবের একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের উপর দৃষ্টি রেখে যে সংকরায়ন বা ক্রস ঘটানো হয়, তাকে একসংকর ক্রস বা মনোহাইব্রিড ক্রস বলে।
২৩। ডাইহাইব্রিড ক্রস কী?
উত্তরঃ জীবের দুজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের উপর দৃষ্টি রেখে সংকরায়ন বা ক্রস।
২৪। জিনোম কী ?
উত্তরঃ জীবের একটি জননকোষের ক্রোমোজামে বিদ্যমান জিনের সমষ্টি।
২৫। বিবর্তন কী ?
উত্তরঃ কোনো জীবের জনগোষ্ঠীর উত্তরাধিকারযোগ্য বৈশিষ্ট্যে (জিনগত বৈশিষ্ট্য) বংশপরম্পরায় পরিবর্তন, সঞ্চারণ ও অভিযোজনের প্রক্রিয়াকে বিবর্তন বলে।
২৬। ডারউইনিজম বা প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ কী ?
উত্তরঃ চার্লস রবার্ট ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) একজন ব্রিটিশ প্রকৃতিবিজ্ঞানী (naralist) ছিলেন। ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত “Origin of Species By Means of Natural Selection” নামক গ্রন্থে তিনি অভিব্যক্তি সম্পর্কে তাঁর সুচিন্তিত ও জোরালো মতবাদ প্রকাশ করেন। এ মতবাদ প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ বা ডারউইনিজম নামে পরিচিত।
২৭। ল্যামাকিজম বা ল্যামাকবাদ কী ?
উত্তরঃ ল্যামার্ক বায়োলজি (Biology) শব্দের প্রবর্তক এবং প্রাণিজগতকে মেরুদন্ডী ও অমেরুদভী এ দুভাগে বিভক্ত করেন। একটি সুসংগঠিত জৈব বিবর্তনবাদের প্রথম প্রবক্তা হিসেবে ল্যামাক সুপরিচিত। তাঁর মতবাদটি, অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার মতবাদ নামে অভিহিত।
ভাইবা বিগত প্রশ্ন ও উত্তর
১। সুন্দরবনকে ম্যানগ্রোভ বন বলা হয় কেন?
উত্তরঃ সুন্দরবনকে ম্যানগ্রোভ বন বলা হয় কারণ এটি একটি লবণাক্ত জলাভূমিতে অবস্থিত। ম্যানগ্রোভ হলো এমন গাছ যা লবণাক্ত পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে। সুন্দরবনে প্রায় ১০০ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ গাছ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সুন্দরী, গরান, গেওয়া, কেওড়া, হিড়হুল, পশুর, ধুন্দুল, তেঁতুল, বেত ইত্যাদি। ম্যানগ্রোভ গাছের মূলের বিশেষ কাঠামো রয়েছে যা তাদের লবণাক্ত পরিবেশে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। এই মূলগুলোকে শ্বাসমূল বলা হয়। শ্বাসমূলগুলো জলের উপরে উঠে থাকে এবং বাতাসের অক্সিজেন গ্রহণ করে।
২। সুন্দরবনের কয়েকটি গাছের নাম বলুন।
উত্তরঃ সুন্দরবনের প্রধান গাছপালার মধ্যে অন্যতম সুন্দরী, গেওয়া, গড়ান, পশুর, বাইন, হেঁতাল, গোলপাতা, খামু, লতা সুন্দরী, কেওড়া, ধুন্দুল, আমুর, ছৈলা, ওড়া, কাঁকরা, সিংরা, ঝানা, খলশি ইত্যাদি। কিন্তু সুন্দরবনের নামের সমার্থক হিসেবে যে তরুটি জড়িয়ে আছে, সেটি সুন্দরীগাছ।
৩। সুন্দরবনের কয়েকটি বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণীর নাম বলুন ।
উত্তরঃ বিলুপ্ত প্রজাতির মধ্যে আছে বাঘরোল, চিতা বিড়াল, বার্কিং হরিণ ,বন্য মহিষ, দু’প্রজাতির গন্ডার,ভোঁদড়, শুশুক(ডলফিন), সর্দার গুঁইসাপ, গুঁই সাপ, কাঠা, চিরুনি, কচ্ছপ, ময়াল, দৈত্য বক, সাদা পেঁচা ,সমুদ্র ঈগল, মেছো বাঘ, সাগর কাঁকড়া, সাগর কুসুম, সাগর শসা, শকুন, পেঁচা, রক্তবর্ণ মেছো শামুক, মিঠে পানির কুমির, নীল গাই, নেকড়ে, সোয়াম্প ডিয়ার, সারস পাখি প্রভৃতি।
৪। সুন্দরবনে বর্তমানে কয়টি বাঘ আছে ?
উত্তরঃ ২০২৩-২০২৪ সালে সুন্দরবনে জরিপে বাঘের সংখ্যা ১২৫টি পাওয়া যায়।
৫। Mammalia র বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তরঃ বৈশিষ্ট্য নিচে দেওয়া হলো –
১. দেহত্বক বিভিন্ন গ্রন্থিযুক্ত (ঘর্মগ্রন্থি সেলসিয়াস ইত্যাদি) এবং লোম (hair)- এ আবৃত (তিমি ব্যতীত)।
২. পরিণত স্ত্রী প্রাণীর কার্যকরী স্তনগ্রন্থি (mammary gland) থেকে ক্ষরিত মাতৃদুগ্ধে নবজাতক লালিত হয়।
৩. বহিঃকর্ণে পিনা (pinna) ও মধ্যকর্ণে তিনটি ক্ষুদ্রাস্থি থাকে। চোয়াল বিভিন্ন ধরনের দাঁত যুক্ত।
৪. মাংসল ডায়াফ্রাম (diaphragm) মধ্যচ্ছদা দিয়ে বক্ষ ও উদর গহ্বর পৃথক থাকে।
৫. পরিণত লোহিত রক্ত কণিকা নিউক্লিয়াস বিহীন।
৬. হৃদপিন্ড সম্পূর্ণ চার প্রকোষ্ঠী।
৫। Amphibia (অ্যাম্ফিবিয়া) এর বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তরঃ বৈশিষ্ট্য নিচে দেওয়া হলো —
১. গ্রন্থিময় ত্বক বিশিষ্ট এক্টোথার্মিক (ectothermic; দেহের তাপমাত্রা পরিবেশের তাপমাত্রার সাথে উঠানামা করে) চতুষ্পদী মেরুদন্ডী প্রাণী। লার্ভা অবস্থায় জলচর কিন্তু পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় জলচর বা স্থলচর।
২. ত্বক মসৃণ, আর্দ্র, গ্রন্থিময়; সাহায্য করে।
৩. অগ্রপদে চারটি ও পশ্চাৎপদ পাঁচটি করে নখরবিহীন আঙ্গুল থাকে।
৪. লার্ভা দশায় ফুলকা ও পরিণত অবস্থায় ফুসফুস ত্বক ও মুখ বিবর্ণ মিউকাস ঝিল্লির মাধ্যমে শ্বসন ঘটে।
৫. হৃদপিণ্ড তিন প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট- দুটি অ্যাট্রিয়া (অলিন্দ) এবং একটি ভেন্ট্রিকল (নিলয়)।
৬। কন্ড্রিকথিস ও অসটিকথিস এর মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
উত্তরঃ কনড্রিকথিস
ক) এদের সব প্রাণী সমুদ্রে বাস করে।
খ) এদের দেহ প্ল্যাকয়েড আঁশ দ্বারা আবৃত।
গ) মাথার দুই পাশে ৫-৭ জোড়া ফুলকা ছিদ্র থাকে।
ঘ) কঙ্কাল তরুণাস্থিময়।
উদাহরণ – হাঙ্গর , রশ্মি, স্কেট এবং করাত মাছ।
অসটিকথিস
ক) এদের বেশিরভাগই স্বাদু পানির মাছ।
খ) দেহ সাইক্লোয়েড, গ্যানয়েড বা টিনয়েড ধরনের আঁশ দ্বারা আবৃত।
গ) মাথার দুই পাশে ৪ জোড়া ফুলকা থাকে।
ঘ) অন্তঃকঙ্কাল অস্থিনির্মিত।
উদাহরণ – রুই, কাতলা, ইলিশ।
৭। কর্ডাটা ও আর্থ্রোপোডার বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তরঃ কর্ডাটার বৈশিষ্ট্য –
ক) নটোকর্ড : ভ্রণাবস্থায় অথবা আজীবন কর্ডেটের পৃষ্ঠ-মধ্যরেখা বরাবর দন্ডাকার ও স্থিতিস্থাপক নিরেট নটোকর্ড (notochord: গ্রিক, notun = back, পিঠ + ল্যাটিন, chorda = cord, রজ্জু) থাকে। উন্নত প্রাণীদের পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় এটি মেরুদণ্ড (vertebral column) দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়। এসব প্রাণীকে তখন মেরুদন্ডী প্রাণী (vertebrates) নামে অভিহিত করা হয়।
খ) স্নায়ুরজ্জু : নটোকর্ডের ঠিক উপরে লম্ব অক্ষ বরাবর নলাকার স্নায়ুরজ্জু (spinal cord) গঠন করে।
গ) গলবিলীয় ফুলকা রন্ধ্র: জীবনের যে কোনো দশায় যা আজীবন কর্ডেটে গলবিলের দুপাশে কয়েক জোড়া ফুলকা রন্ধ্র (gill slits) থাকে (উন্নত কর্ডেটে ফুলকা রন্ধ্রের বিলোপ ঘটে)।
আর্থ্রোপোডা পর্বের বৈশিষ্ট্য –
ক) দেহ কাইটিন নির্মিত বহিঃকঙ্কাল দিয়ে আবৃত, নির্দিষ্ট সময় পর পর এ কঙ্কাল পরিত্যক্ত হয় ।
খ) দেহ খণ্ডায়িত,টাগমাটাইজেসন দেখা যায়। দেহখন্ডক পার্শ্বীয় সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ (Jointed appendages) বিশিষ্ট।
গ) এদের দেহকে দুটি সমান অংশে ভাগ করা যায় তাই এরা দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম হয়।
ঘ) পর্বের প্রাণীদের পৌষ্টিকতন্ত্র সম্পূর্ণ এবং এদের উপাঙ্গ পরিবর্তিত হয়ে মুখোপাঙ্গ গঠিত হয়।
ঙ) দেহের প্রাণীর সিলোম সংক্ষিপ্ত, অধিকাংশ দেহগহ্বরে রক্তে পূর্ণ যা হিমোসিল (Haemocoel) নামে পরিচিত।
চ) মাথার দু’পাশে দুটি পুঞ্জাক্ষি (Compound eye) দেখা যায় ।
ছ) মালপিজিয়ান নালিকা প্রধান রেচন অঙ্গ। এছাড়া সবুজগ্রন্থি,কক্সাল গ্রন্থি, খোলস,ফুলকা রেচন অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
৮। টিকটিকির রক্ত কেন সাদা হয়?
উত্তরঃ টিকটিকির রক্তে হিমোগ্লেবিন থাকে না। যেসব প্রাণীর দেহে হিমোগ্লোবিন থাকে তাদের রক্ত লাল হয়। হিমোগ্লোবিন লৌহ ঘটিত আমিষ। এই হিমোগ্লোবিনের অভাবে রক্ত সাদা দেখায়।
৯। জিওল কি? এটা কেন কিছু সময়ের জন্য স্থলে থাকতে পারে?
উত্তরঃ উত্তরঃ যেসব মাছ জল ছাড়াও ডাঙায় কিছুক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে তাদের জিওল মাছ বলে। যেমন- কই, শিঙি, মাগুর।
যে কোনো মাছ জলের ভেতরে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন গ্রহণ করেই শ্বাস প্রশ্বাস চালায়। কই, মাগুর, শিঙি প্রভৃতি মাছেদের একজোড়া অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র থাকায় এরা জলের বাইরে বাতাস থেকে সরাসরি অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে। তাই জলের বাইরেও এরা অনেকক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। তাই এদের “জিওল মাছ” বলা হয়।
১০। মালিপিজিয়ান নালিকা কাকে বলে ?
উত্তরঃ ঘাসফড়িংয়ের পরিপাক নালিসংলগ্ন কতগুলো সরু নালিকা, যা রেচন কাজ সম্পন্ন করে তাকে মালপিজিয়ান নালিকা বলে।
১১। সিলোম ও হিমোসিল কাকে বলে ?
উত্তরঃ সিলোম – প্রাণীর দেহপ্রাচীর ও পৌষ্টিকনালির মধ্যবর্তী সিলোমিক
তরলপূর্ণ গহ্বরকে সিলোম বলে।
হিমোসিল – দেহপ্রাচীর ও পৌষ্টিকনালির মধ্যবর্তী রক্তপূর্ণ গহ্বরকে
হিমোসিল বলে।
১২। রক্ত কাকে বলে ?
উত্তরঃ রক্ত হচ্ছে মানুষের জীবন রক্ষাকারী এক বিশেষ তরল যোজক টিস্যু যার মাধ্যমে বিভিন্ন রক্তবাহিকা দেহের সকর কোষে পুষ্টি, ইলেক্ট্রোলাইট, হরমোন, ভিটামিন, অ্যান্টিবডি,অক্সিজেন, ইমিউন কোষ ইত্যাদি বহন করে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও বর্জ্য পদার্থ প্রত্যাহৃত হয়।
ক) একজন পূর্ণবয়স্ক মানবদেহে প্রায় ৫-৬ লিটার রক্ত থাকে অর্থাৎ দেহের মোট ওজনের প্রায় ৮%।
খ) রক্ত সামান্য ক্ষারীয়। এর pH মাত্রা ৭.৩৫-৭.৪৫ (গড়ে ৭.৪০) এবং তাপমাত্রা ৩৬-৩৮o সেলসিয়াস।
গ) রক্তের আপেক্ষিক গুরুত্ব পানির চেয়ে বেশি, প্রায় ১.০৬৫।
ঘ) অজৈব লবণের উপস্থিতির জন্য রক্তের স্বাদ নোনতা।
১৩। রক্তরস ও রক্তকনিকা কাকে বলে ?
উত্তরঃ
রক্তরস – রক্তের হালকা হলুদ বর্ণের তরল অংশকে রক্তরস(Plasma) বলা হয়। রক্তরস তরল কঠিন পদার্থের সমন্বয়ে তৈরি। এতে তরল পদার্থের(পানির) পরিমাণ ৯০-৯২% এবং কঠিন পদার্থের পরিমাণ ৮-১০%।
রক্তকনিকা – রক্তে ভাসমান বিভিন্ন কোষকে রক্ত কণিকা বলা হয়। এই কোষ গুলো হিমাটোপয়েসিস প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়। অন্যান্য কোষের মতো স্ববিভাজিত হয়ে সৃষ্টি হয় না বলে এদের কোষ না বলে কণিকা বলা হয়। রক্তের ৪৫% হরো রক্তকণিকা।
রক্তকণিকা(Blood Courpuscles) তিন(৩) প্রকার যথাঃ
ক) লোহিত রক্তকণিকা(Erythrocytes)
খ) শ্বেত রক্তকণিকা (Leucocytes)
গ) অণুচক্রিকা (Platelets)
১৪। অণুচক্রিকার কাজ লিখুন ।
উত্তরঃ অণুচক্রিকার (Platelets) কাজঃ
ক) অস্থায়ী Platelet plug সৃষ্টির মাধ্যমে রক্তপাত বন্ধ করে।
খ) রক্তজমাট ত্বরান্বিত করতে বিভিন্ন ক্লটিং ফ্যাক্টর ক্ষরণ করে।
গ) প্রয়োজন শেষে রক্তজমাট বিগলনে সাহায্য করে।
ঘ) ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে।
৫. দেহের কোথাও ব্যথার সৃষ্টি হলে নিউট্রোফিল ও মনোসাইটকে আকুষ্চকরতে রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরণ করে।
১৫। রক্ত কেন লাল হয় ?
উত্তরঃ মানবদেহের পরিণত লোহিত রক্তকণিকার হিমোগ্লোবিন নামক রঞ্জক পদার্থ থাকে যার ফলে রক্ত লাল বর্ণের হয়। হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতির কারণে লোহিত রক্ত কনিকা অধিক পরিমান অক্সিজেন পরিবহনে সক্ষম।
১৬। শিরা ও ধমনী কাকে বলে ?
উত্তরঃ
শিরা – যেসব নালি দিয়ে রক্ত দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে তাদের শিরা বলে। শিরার মধ্যে রক্তচাপ তুলনামূলক কম থাকার জন্য শিরার নালিকা পথে কপাটিকা থাকে।
ধমনী – যেসব রক্তনালির মাধ্যমে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে সারা দেহে বাহিত হয়, তা-ই ধমনি। উৎপত্তিস্থল হৃৎপিণ্ড।
রক্তের গতির দিক সাধারণত হৃৎপিণ্ড থেকে দেহের বিভিন্ন দিকে। অক্সিজেন বেশি থাকে বলে রক্ত টাটকা লাল। এর মধ্যে কোনো কপাটিকা থাকে না। হৃদপিণ্ডের কাছে ধমনী বেশ মোটা হয়, একে মহাধমনী (Aorta ) বলা হয়। মহাধমনীর শাখা-প্রশাখা গুলিকে ধমনী (Artery ) বলা হয়।
১৭। রক্তশুন্যতা কী ?
উত্তরঃ রক্তশূন্যতা হলো রক্তের এমন একটি রোগ যেখানে রক্তে লোহিত রক্তকণিকা বা হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক সংখ্যার চেয়ে কম থাকে, বা রক্তের অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। রক্তের একটি বিশেষ উপাদান লোহিত রক্তকণিকা বা আরবিসি। লোহিত রক্তকণিকায় হিমোগ্লোবিন নামের একটি বিশেষ ধরনের রঞ্জক পদার্থ থাকে। এই হিমোগ্লোবিন বয়স এবং লিঙ্গভেদে যখন স্বাভাবিক মাত্রার নিচে নেমে যায়, তখন তাকে এনিমিয়া বা রক্তশূন্যতা বলে।
১৮। রক্ত জমাট বাঁধা সম্পর্কে লিখুন।
উত্তরঃ দেহের কোথাও ক্ষত সৃষ্টির ফলে কোনো রক্তবাহিকার এন্ডোথেলিয়াম ক্ষতিগ্রস্থ হলে রক্তপাত বন্ধের উদ্দেশে ও সংক্রমণ প্রতিরোধে যে জটিল জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ফাইব্রিন জালক সৃষ্টির মাধ্যমে ক্ষতস্থানে রক্তকে থকথকে পিণ্ডে পরিণত করে সে প্রক্রিয়াকে রক্তের জমাট বাঁধা বা রক্ত তঞ্চন বলে । এ প্রক্রিয়ায় অণুচক্রিকা ও রক্তরসে অবস্থিত ১৩ ধরনের ক্লটিং ফ্যাক্টর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
ফ্যাক্টরগুলো নাম নিম্নরূপ :
• ফ্যাক্টর-I বা ফাইব্রিনোজেন
• ফ্যাক্টর-II বা প্রোথ্রম্বিন
• ফ্যাক্টর-III বা থ্রম্বোপ্লাস্টিন
• ফ্যাক্টর-IV বা ক্যালসিয়াম আয়ন
• ফ্যাক্টর-V বা ল্যাবাইল ফ্যাক্টর বা প্রোঅ্যাকসেলারিন
• ফ্যাক্টর-VI বা অ্যাকসেলারিন
• ফ্যাক্টর-VII বা স্টেবল ফ্যাক্টর বা প্রোকনভারটিন
• ফ্যাক্টর-VIII বা অ্যান্টিহিমোফিলিক ফ্যাক্টর (AHF)
• ফ্যাক্টর-IX বা ক্রিস্টমাস ফ্যাক্টর
• ফ্যাক্টর-X বা স্টুয়ার্ট ফ্যাক্টর
• ফ্যাক্টর-XI বা প্লাজমা থ্রম্বোপ্লাস্টিন
• ফ্যাক্টর-XII বা হ্যাগম্যান ফ্যাক্টর
• ফ্যাক্টর-XIII বা ফাইব্রিন স্টেবিলাইজিং ফ্যাক্টর
১৯। ক্যান্সার কি ?
উত্তরঃ মানব দেহ অনেকগুলি কোষ দ্বারা গঠিত এবং এই কোষগুলিতে সর্বদা বিভাজন থাকে। এটি একটি সাধারণ প্রক্রিয়া যেখানে শরীর নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা কোষের রোগটিকে ক্যান্সার বলে।
২০। মৎস্য ও মাৎস্য কী ?
উত্তরঃ মাছ বা মৎস্য (Fish) –
“মাছ/মৎস্য” শীতল রক্ত বিশিষ্ট যেসব জলজ মেরুদণ্ডী প্রাণী
যুগ্ম ও অযুগ্ম পাখনার সাহায্যে পানিতে সাঁতার কাটে, ফুলকার
সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস চালায় এবং যাদের দেহত্বক আঁইশে আবৃত বা
নগ্ন থাকে, তাদের মাছ বা মৎস্য বলা হয়। যেমন- রুই, কাতলা,
কার্পিও, মৃগেল, শিং, মাগুর, পাবদা, ইত্যাদি।
“মাৎস্য বা Fisheries”-এর ব্যবহারিক অর্থ ব্যাপক। সাধারণভাবে
অর্থনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন জলজ বা অর্ধজলজ জীবদের মাৎস্য বা
Fisheries বলা হয়। মাছ ছড়াও Arthropoda, Mollusca,
Echiondermata এবং Chordata পর্বের বেশকিছু প্রাণীকে
মাৎস্য হিসেবে অভিহিত করা হয়।
যেমন- পাখনাযুক্ত মাছ (Fin fish) ও খোলকযুক্ত মাছ (Shell
fish) মাৎস্য গোষ্ঠীভুক্ত যেসব জলজ প্রাণীদের মূলদেহ
ক্যারাপেস, শক্ত খোলক বা স্কুটস্ দ্বারা আবৃত থাকে, তাদের
Shell fish বলা হয়।
উল্লেখযোগ্য খোলকযুক্ত মাছ বা Shell
fish এর মধ্যে চিংড়ি, কাঁকড়া, ঝিনুক, শামুক, কচ্ছপ, ব্যাঙ,
কুমির, ডলফিন অন্যতম।
২১। আঁইশ কী ? কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ আঁইশ ত্বকোদ্ভূত অস্থিময় (bony) বা শৃঙ্গায়িত (horny) ক্ষুদ্রাকৃতির পাতলা পাত (Plate) বিশেষ যা অধিকাংশ মাছ ও সরীসৃপের ত্বক রক্ষাকারী অঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। সাধারণত একটি আঁইশের শেষ প্রান্ত পরবর্তী আঁইশের শুরুর প্রান্তের সামান্য অংশ আবৃত করে রাখে।
মাছে পাঁচ ধরণের আঁইশ দেখতে পাওয়া যায় যথা- কসময়েড (Cosmoid), প্লাকয়েড (Placoid), গ্যানয়েড (Ganoid), সাইক্লয়েড (Cycloid) ও টিনয়েড (Ctenoid)।
২২। রুই মাছের আঁইশ কোন ধরনের ?
উত্তরঃ রুই মাছের দেহ সাইক্লয়েড আঁইশ (Cycloid scale) দ্বারা আবৃত থাকে। এগুলো সাধারণত গোলাকার ও রূপালী বর্ণের হয়ে থাকে। রাসায়নিকভাবে আঁইশগুলো চুন ও কোলাজেন তন্ত্র নিয়ে গঠিত। আঁইশের কেন্দ্রস্থলে ফোকাস রেখা থাকে। আঁইশের কেন্দ্রস্থলকে ফোকাস বলে। আঁইশের কেন্দ্রকে ঘিরে ঘন সন্নিবিষ্ট কতগুলো রেখা থাকে। এগুলোকে সার্কুলি (circuli) বলে। আঁইশে সার্কুলিগুলোর মাঝে গাঢ় বর্ণের বৃদ্ধি রেখা অর্থাৎ অ্যানুলি (একবচনে অ্যানুলাস) থাকে, যেগুলোর সংখ্যা প্রতিবছর একটি করে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এগুলো গণনা করে মাছের বয়স নির্ধারণ করা হয়।
আরো পড়ুন –
হাঙ্গরের আঁইশ – প্ল্যাকয়েড
ইলিশের আঁইশ – সাইক্লয়েড
২৩। রুইমাছের বায়ুথলি বা সন্তরন থলি সম্পর্কে লিখুন।
উত্তরঃ বায়ুথলিঃ Labeo-র মেরুদণ্ডের নিচে এবং পৌষ্টিকনালির উপরে অবস্থিত পাতলা প্রাচীরবিশিষ্ট থলির নাম বায়ুথলি বা পটকা। এটি দেখতে চকচকে সাদা থলির মতো এবং বিভিন্ন ধরনের গ্যাসে (অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড) পূর্ণ থাকে ।
বায়ুথলির কাজঃ
ক) বায়ুথলি প্লবতারক্ষাকারী অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
খ) বায়ুথলির প্রাচীরে অবস্থিত কৈশিকনালি থেকে বায়ুথলিতে অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ করে।
গ) বায়ুথলি মাছের আপেক্ষিক গুরুত্ব নিয়ন্ত্রণ করে পানির নিচে স্থির থাকতে সাহায্য করে।
২৪। চিংড়ি কি মাছ?
উত্তরঃ চিংড়ি মাছ নয়। চিংড়ি হলো এক ধরনের জলজ পোকা। চিংড়ি (গলদা, বাগদা, লবস্টার, কুচো চিংড়ি, কাঁকড়া) হল আর্থ্রোপোডা পর্বের অমেরুদণ্ডী প্রাণী।
আরো পড়ুন – চিংড়ি হচ্ছে প্রাণী জগতের আর্থোপোডা পর্বের প্রাণী। এ পর্বের প্রাণীদের পোকামাকড় ও পতঙ্গ বলা হয়। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মাথায় এক জোড়া পুঞ্জাক্ষি ও এন্টেনা থাকে।দেহের প্রতিটি খন্ডে একজোড়া করে উপাঙ্গ বর্তমান।এদের দেহ ত্রিস্তরীয় এবং দেহে প্রকৃত সিলোম বা গহ্বর আছে।
২৫। বাস্তুতন্ত্র কাকে বলে ? কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ বিভিন্ন প্রজাতির জীব একটি স্হানে পরিবেশের জড় উপাদানের সাথে পারস্পারিক নির্ভরশীলতার মাধ্যমে একটি নিবিড় ও জটিল সম্পর্ক গড়ে তুলে বসবাস করে। একে ইকোসিস্টেম বা বাস্ততন্ত্র বলে ।
বাস্তুতন্ত্র দুই প্রকার – যথা
১। জলজ – জলজ বাস্তুতন্ত্র প্রধানত ভিন ধরনের।
ক) পুকুরের বাস্তুতন্ত্র
খ) নদ-নদীর বাস্তুতন্ত্র
গ) সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র
২। স্থলজ
২৬। খাদ্যশৃঙ্খল বা ফুড চেইন কাকে বলে ?
উত্তরঃ কোনো বাস্তুতন্ত্রে খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের ভিত্তিতে উৎপাদক স্তর থেকে খাদক স্তরের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত ধাপে ধাপে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জীবগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্যের মাধ্যমে শক্তির শৃঙ্খলিত ধারাবাহিক প্রবাহকেই খাদ্যশৃঙ্খল বলা হয় । যেমন –
খাদ্যশৃঙ্খল : ঘাস → ঘাসফড়িং → গিরগিটি → বাজপাখি
প্রকৃতিতে সাধারণভাবে শক্তির সঞ্চার অনুসারে দু’ধরণের খাদ্যশৃঙ্খল লক্ষ্য করা যায়, যথা—
গ্রেজিং বা চারণভূমি খাদ্যশৃঙ্খল [Grazing Food Chain] এবং
ডেট্রিটাস বা কর্কর খাদ্যশৃঙ্খল [Detritus Food Chain]।
২৭। খাদ্যজাল কাকে বলে ?
উত্তরঃ বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে বিভিন্ন খাদ্য-খাদক সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা খাদ্যশৃঙ্খলগুলি নানাভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হলে, পরিবেশে বিভিন্ন খাদ্যশৃঙ্খলের মধ্যে খাবারের আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে যে জাল গড়ে ওঠে তাকে খাদ্য জাল বা খাদ্যজালিকা বা ফুড ওয়েব (Food Web) বলে।
২৮। উৎপাদক ও বিয়োজক কাকে বলে ?
উত্তরঃ উৎপাদক (Producer) :
বাস্তুতন্ত্রের অন্তর্গত যে সমস্ত উপাদান সৌরশক্তি শোষণ করে বিভিন্ন অজৈব উপাদান সহযোগে নিজেদের দেহে জটিল খাদ্য প্রস্তুতিতে সক্ষম, তাদের উৎপাদক বলে।
বিয়োজক (Distributor) :
বাস্তুতন্ত্রের অন্তর্গত যে সমস্ত উপাদান মৃতজীবী অর্থাৎ যারা মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণী দেহ বিয়োজিত করে তাকে সরল রাসায়নিক উপাদানে পরিণত করে, তাদের বিয়োজক বলে। যারা উদ্ভিদ ও প্রাণীর বর্জ্য এবং মৃতদেহ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে এবং এসব বর্জ্যকে বিয়োজিত করে মাটি বা পানির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলে, তাদের বিয়োজক বলা হয়। যেমন—ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, আণুবীক্ষণিক জীব।
২৯। ইকোলজিক্যাল পিরামিড কি?
উত্তরঃ খাদ্যজালকের বিন্যাস সমন্বিত পিরামিড আকৃতির ছককে ইকোলজিক্যাল পিরামিড বা বাস্তুসংস্থানিক পিরামিড বলে।
ইকোলজিক্যাল পিরামিড তিন প্রকারের হয়ে থাকে। যথা:
১. সংখ্যার পিরামিড
২. শক্তির পিরামিড
৩. জীবভরের পিরামিড
৩০। পাখির মাইগ্রেশন কি?
উত্তরঃ পাখি পরিযান বলতে নির্দিষ্ট প্রজাতির কিছু পাখির প্রতি বছর বা কয়েক বছর পর পর একটি নির্দিষ্ট ঋতুতে বা সময়ে কম করে দু’টি অঞ্চলের মধ্যে আসা-যাওয়াকেই বোঝায়। জীবজন্তুরক্ষেত্রে মাইগ্রেশন (ইংরেজি: Migration) এর সঠিক পরিভাষা হচ্ছে সাংবাৎসরিক পরিযান। যেসব প্রজাতির পাখি পরিযানে অংশ নেয়, তাদেরকে পরিযায়ী পাখি বলে।
৩১। কার্প জাতীয় মাছ কি?
উত্তরঃ কার্প জাতীয় মাছ বলতে দেশী ও বিদেশী রুই জাতীয় মাছকেই বুঝায়। আমাদের দেশে, দেশী কার্পের মধ্যে কাতলা, রুই, মৃগেল, কালিবাউশ ইত্যাদি এবং বিদেশী কার্পের মধ্যে সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, বিগহেড কার্প, ব্লাক কার্প, কমন কার্প ইত্যাদি অন্যতম।
৩২। ট্যাগমাটাইজেশন কাকে বলে ?
উত্তরঃ Arthropoda পর্বভুক্ত প্রাণীর দেহ বাহ্যিকভাবে খণ্ডায়িত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে খণ্ডক স্পষ্ট নয় বরং দেহের বিভিন্ন স্থানে কিছু কিছু খণ্ডক একত্রিত হয়ে কয়েকটি নির্দিষ্ট অঞ্চল গঠন করে। এভাবে সৃষ্ট প্রত্যেকটি অঞ্চল ট্যাগমা নামে পরিচিত। আর ট্যাগমার মাধ্যমে দেহের অঞ্চলীকরণকে অঞ্চলায়ন বা ট্যাগমাটাইজেশন বলে।
৩৩। দ্বিস্তরী ও ত্রিস্তরী প্রাণী কাকে বলে ?
উত্তরঃ ক. দ্বিস্তরী বা দ্বিভ্রূণস্তরী প্রাণী (Diploblastic animal) : যেসব প্রাণীর ভ্রূণের গ্যাস্ট্রুলা পর্যায়েকোষগুলো এক্টোডার্ম ও এন্ডোডার্ম নামক দুটি স্তরে বিন্যস্ত থাকে। স্তরদুটির মাঝে থাকে আঠালো জেলির মতো অকোষীয় মেসোগ্লিয়া (mesoglea)। Cnidaria পর্বের প্রাণীরা দ্বিস্তরী (যেমন- Hydra)
খ. ত্রিস্তরী বা ত্রিভ্রূণস্তরী প্রাণী (Triploblastic animal) : ভ্রূণে গ্যাস্ট্রুলা পর্যায়ে কোষগুলো তিনটি কোষীয় স্তরে বিন্যাস্ত থাকে। তিনটি স্তরের মধ্যে বাইরের স্তরটিকে এক্টোডার্ম (ectoderm), মাঝেরটিকে মেসোডার্ম (mesoderm) এবং ভিতরেরটিকে এন্ডোডার্ম (endoderm) বলে। Platyhelminthes (ফিতাকৃমি- Taenia solium) থেকে শুরু করে Chordata (মানুষ – Homo sapiens) পর্ব পর্যন্ত প্রাণী সকল প্রাণী ত্রিস্তরী।
৩৪। মানুষের শ্রেণিবিন্যাস করুন ।
উত্তরঃ জগৎ: Animalia
পর্ব: Chordata
শ্রেণি: Mammalia
বর্গ: Primates
গোত্র: Hominidae
গণ: Homo
প্রজাতি: H. sapiens
৩৫। মানুষের হৃৎপিণ্ড কয় প্রকোষ্ট বিশিষ্ট ?
মানুষের হৃদপিন্ড ৪ প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট। এগুলো হচ্ছে-
ডান অলিন্দ (Right Atrium)
ডান নিলয় (Right Ventricle)
বাম অলিন্দ (Left Atrium)
বাম নিলয় (Left Ventricle)
৩৬। প্রাণিবিজ্ঞানের জনক কে ?
উত্তরঃ এরিস্টটল ।
৩৭। উদ্ভিদ বিজ্ঞানের জনক কে ?
উত্তরঃ থিওফ্রাস্টাস ।
৩৭। বিবর্তনবাদের জনক কে?
উত্তরঃ চার্লস ডারউইন৷
৩৮। জেনেটিক্সের বা বংশগতিবিদ্যার জনক কে ?
উত্তরঃ গ্রেগর জোহান মেন্ডেল ।
৩৯। ট্যাক্সোনমির বা শ্রেণিবিন্যাসের জনক কে?
উত্তরঃ ক্যারোলাস লিনিয়াস।
৪০। কোষ কাকে বলে ?
উত্তরঃ Jean Brachet (1961) এর মতে – ‘কোষ(Cell) হলো জীবের গঠনগত মৌলিক একক’।
Loewy and Siekevitz (1969) এর মতে – ‘কোষ হলো জৈবিক ক্রিয়াকলাপের একক যা একটি অর্ধভেদ্য ঝিল্লি দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে এবং যা অন্য কোনো সজীব মাধ্যম ছাড়াই আত্ম-জননে সক্ষম’।
৪১। কোষ কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ শারীরবৃত্তীয় কাজের ভিত্তিতে কোষের প্রকারভেদ –
ক) দেহকোষ ( মাইটোসিস বিভাজন হয় )
খ) জননকোষ ( মায়োসিস বিভাজন হয় )
নিউক্লিয়াসের গঠনের ভিত্তিতে কোষের প্রকারভেদ –
ক) আদিকোষ – উদাহরণ : মাইকোপ্লাজমা, ব্যাকটেরিয়া, ও সায়ানোব্যাকটেরিয়া।
খ) প্রকৃতকোষ – জড় কোষপ্রাচীর বিশিষ্ট প্রকৃত কোষই প্রকৃত উদ্ভিদকোষ। শৈবাল, ছত্রাক, বায়োফাইটস, জিমনোস্পার্মস এবং এনজিওস্পার্মস ইত্যাদি সব উদ্ভিদই প্রকৃত কোষ দিয়ে গঠিত এবং সকল প্রাণিকোষ প্রকৃত কোষ।
৪২। কোষ কে আবিষ্কার করেন ?
উত্তরঃ ১৬৬৫ : আদি প্রকৃতির একটি অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে রবার্ট হুক প্রথমে কর্ক কোষ আবিষ্কার করেন।
৪৩। কোষ বিভাজন কাকে বলে ও কত প্রকার ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় জীব কোষের বিভাজনের মাধ্যমে একটি থেকে দুটি বা চারটি কোষের সৃষ্টি হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে।
কোষ বিভাজন ৩ প্রকার। যথা –
ক) অ্যামাইটোসিস
খ) মাইটোসিস
গ) মায়োসিস
৪৪। উদ্ভিদের কোষ প্রাচীর কি দিয়ে তৈরী ?
উত্তরঃ সেলোলোজ ।
৪৫। ছত্রাকের কোষ প্রাচীর কি দিয়ে নির্মিত? উত্তরঃ কাইটিন।
৪৬। নিউক্লিয়াস কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজমের সবচেয়ে ঘন, পর্দাঘেরা এবং প্রায় গোলাকার অংশকে নিউক্লিয়াস বলে।
৪৭। কোষের শক্তিঘর কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ মাইটোকন্ড্রিয়া ( এখানে শ্বসন ঘটে )
৪৮। ক্রোমোজোম কাকে বলে ?
উত্তরঃ ক্রোমোজোম হলো একটি দীর্ঘ ডিএনএ অণু যাতে একটি জীবের জিনগত উপাদানের একটি অংশ বা সমস্ত অংশ বিদ্যমান থাকে।
মানুষের প্রতিটি কোষে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে, যার মধ্যে ২২ জোড়া স্বয়ংক্রিয় ক্রোমোজোম এবং একটি জোড়া যৌন ক্রোমোজোম থাকে। পুরুষদের যৌন ক্রোমোজোম হল XY এবং মহিলাদের যৌন ক্রোমোজোম হল XX।
৪৯। বংশগতির ধারক ও বাহক কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ ক্রোমোজোম।
৫০। সাইটোকাইনেসিস ও ক্যারিওকাইনেসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ সাইটোপ্লাজমের বিভাজনকে সাইটোকাইনেসিস এবং নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস বলে ।
৫১। হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড কাকে বলে ?
কোষের অর্ধেক ক্রোমোজোম সংখ্যার অবস্থাকে হ্যাপ্লয়েড (n) বলে। যখন দুটি হ্যাপ্লয়েড কোষের মিলন ঘটে, তখন সে অবস্থাকে ডিপ্লয়েড (2n) বলে।
৫২। সাইটোপ্লাজম কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজম থেকে নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রিকাটিকে সরিয়ে দিলে যে জেলির মতো বস্তুটি থেকে যায় সেটিই সাইটোপ্লাজম।
৫৩। প্রোটোপ্লাজম কাকে বলে ?
উত্তরঃ কোষের ভিতরে যে অর্ধস্বচ্ছ, থকথকে জেলির মতো বস্তু থাকে তাকে প্রোটোপ্লাজম বলে।
৫৪। টিস্যু কাকে বলে ?
উত্তরঃ একই উৎস থেকে সৃষ্ট, একই ধরণের কাজ সম্পন্নকারী, সমধর্মী অবিচ্ছিন্ন কোষগুচ্ছকে টিস্যু বলে।
৫৫। টিস্যু কত প্রকার ও কী কী? (
উত্তরঃ টিস্যু দুই প্রকার –
১। ভাজক টিস্যু (Merismatic tissue) : যে কোষগুলো বিভাজিত হয় তা হল ভাজক কোষ, আর ভাজক কোষ দিয়ে গঠিত টিস্যুই ভাজক টিস্যু। ভাজক টিস্যুর অপর নাম মেরিস্টেম।
২। স্থায়ী টিস্যু (Permanent tissue) : যে টিস্যুর কোষগুলো বিভাজনে অক্ষম সে টিস্যুকে স্থায়ী টিস্যু বলে। এ টিস্যুর কোষগুলো পূর্ণভাবে বিকশিত এবং সঠিক আকার-আকৃতি বিশিষ্ট অর্থাৎ এরা আকার-আকৃতি ও বিকাশে স্থায়িত্ব লাভ করেছে, তাই এরা স্থায়ী টিস্যু। বিশেষ অবস্থা ছাড়া এরা আর বিকশিত হতে পারে না। ভাজক টিস্যু হতে কোষের পূর্ণ বিকাশ লাভের পর বিভাজন ক্ষমতা স্থগিত হওয়ার মাধ্যমে স্থায়ী টিস্যুর উদ্ভব হয়।
৫৬। প্রাণী টিস্যু কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ প্রাণিটিস্যুর প্রকারভেদ: প্রাণীটিস্যু তার গঠনকারী কোষের সংখ্যা, বৈশিষ্ট্য এবং তাদের নিঃসৃত পদার্থের বৈশিষ্টের ভিত্তিতে প্রধানত চার ধরণের হয়-
(a) আবরণী টিস্যু
(b) যোজক টিস্যু
(c) পেশি টিস্যু এবং
(d) স্নায়ু টিস্যু।
৫৭। পেশী টিস্যু কাকে বলে ও কত প্রকার ?
ভ্রূণের মেসোডার্ম থেকে তৈরি সংকোচন ও প্রসারণশীল বিশেষ ধরনের টিস্যুকে পেশি টিস্যু বলে। অবস্থান গঠন এবং কাজের ভিত্তিতে পেশি টিস্যু তিন ধরনের,
(i) ঐচ্ছিক পেশি
(ii) অনৈচ্ছিক পেশি এবং
(iii) হৃৎপেশি।
৫৮। স্নায়ুকোষ বা নিউরন কাকে বলে ?
স্নায়ুতন্ত্রের গঠনমূলক ও কার্যকরী একককে নিউরন বা স্নায়ুকোষ বলে। মস্তিষ্ক কোটি কোটি স্নায়ুকোষ (নিউরন) দিয়ে তৈরি।
৫৯। শ্রেণিবিন্যাস কাকে বলে ? কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ শ্রেণিবিন্যাস হলো জীবজগতকে তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন দলে বিভাজনের প্রক্রিয়া। এটি সমস্ত জীবকে ধাপে ধাপে সংগঠন করে। জনক হলেন ক্যারোলাস লিনিয়াস।
শ্রেণিবিন্যাস ৩ প্রকার। যথা –
ক) প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস ( বেনথাম ও হুকার এর শ্রেণিবিন্যাস )
খ) কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস ( থিয়োফ্রাস্টাস ও লিনিয়াস )
গ) জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস ( এঙ্গলার ও প্রান্টল)
৬০। শ্রেণিবিন্যাসের কয়টি ধাপ ?
উত্তরঃ শ্রেণিবিন্যাসের আবশ্যিক ধাপ হচ্ছে ৭টি, যথা ➞ Kingdom (রাজ্য), Phylum (পর্ব), Class (শ্রেণি), Order (বর্গ), Family (গোত্র), Genus (গণ) ও Species (প্রজাতি)
৬১। ICBN-এর পূর্ণনাম কী?
উত্তরঃ International Code of Botanical Nomenclature. এর নীতিমালা – ৬ টি ।
৬২। ট্যাক্সন ও ট্যাক্সা কাকে বলে ?
উত্তরঃ শ্রেণিবিন্যাসের যেকোনো একককে ট্যাক্সন (Taxon), বহুবচনে ট্যাক্সা (Taxa) বলে।
৬৩। অনুজীব কাকে বলে?
উত্তরঃ অণুজীব হল সেই সকল ক্ষুদ্র এককোষী জীব যাদের খালি চোখে দেখা যায় না। এরা প্রাককেন্দ্রিক, সুকেন্দ্রিক উভয় প্রকার হতে পারে।
৬৪। ভাইরাসকে কেন অকোষীয় বলা হয়?
উত্তরঃ ভাইরাসের দেহ কোষ প্রাচীর ,প্লাজমালেমা, সুগঠিত নিউক্লিয়াস ,সাইটোপ্লাজম ইত্যাদি কিছুই না থাকার জন্য ভাইরাসকে অকোষীয় জীব বলা হয়। এটি শুধু প্রোটিন আবরণ ও নিউক্লিক এসিড নিয়ে গঠিত। অকোষীয় জীবের ভেতর প্রাথমিক সদস্য হল ভাইরাস।
৬৫। ভাইরাসজনিত কিছু রোগের নাম ও পোষকদেহ ও জীবাণুর নাম লিখুন৷
উত্তরঃ
ক) তামাকের মোজাইক রোগ – তামাক – Tobacco Mosaic virus
খ) ধানের টুংরো রোগ – ধান – Tungro virus
গ) AIDS – মানুষ – HIV ভাইরাস
ঘ) ডেঙ্গু/ ডেঙ্গী জ্বর – মানুষ – ফ্ল্যাভি ভাইরাস (Flavi virus)
ঙ) SARS – মানুষ – Nipah virus
চ) জলাতঙ্ক – মানুষ – র্যাবিস ভাইরাস (Rabis virus)
৬৬। গ্রাম পজেটিভ ও গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া কাকে বলে ?
উত্তরঃ
ক) গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়াঃ যে সব ব্যাকটেরিয়াকে ক্রিস্টাল ভায়োলেট রঞ্জকে রঞ্জিত করার পর ধৌত করলে রঞ্জক ধরে রাখে (ব্লু, পার্পল) তাকে গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া বলে। এদের কোষপ্রাচীর পুরু। এর কোষপ্রাচীরে পেপটাইডোগ্লাইকন, টিকোয়িক এসিড ও পাতলা লাইপোপলিস্যাকারাইড থাকে। যেমন– Clostridium, Staphylococcus, Streptococcus, Bacillus, Actinobacteria.
খ) গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়াঃ যে সব ব্যাকটেরিয়াকে ক্রিস্টাল ভায়োলেট রঞ্জকে রঞ্জিত করার পর ধৌত করলে রঞ্জক ধরে রাখতে পারে না তাকে গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া বলে। এদের কোষপ্রাচীর পাতলা। এর কোষপ্রাচীরে পেপটাইডোগ্লাইকন ও পুরু লাইপোপলিস্যাকারাইড থাকে। E. coli, Salmonella typhi, Shigella, Proteus, Rhizobium, Vibrio cholerae, Neisseria meningitidis, Cyanobacteria.
৬৭। খাদ্য কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে পদার্থ খেলে আমাদের শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ থাকে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সকল ধরনের কার্যপ্রক্রিয়া সঠিকভাবে চলমান থাকে মূলত সেটাই হচ্ছে খাদ্য।
৬৮। ভিটামিন কাকে বলে ?
উত্তরঃ ভিটামিন বলতে আমরা খাদ্যের ঐ সব জৈব রাসায়নিক পদার্থকে বুঝি যা খাদ্যে সামান্য পরিমাণে উপস্থিত থাকে। ভিটামিনসমূহ প্রত্যক্ষভাবে দেহ গঠনে অংশগ্রহণ না করলেও এদের অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধিসাধন বা তাপশক্তি উৎপাদন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রিয়াগুলো সুসম্পন্ন হতে পারে না।
ভিটামিনের প্রকারভেদ : দ্রবণীয়তার গুণ অনুসারে ভিটামিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. স্নেহ জাতীয় পদার্থে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন- এ, ডি, ই, এবং কে।
২. পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন- ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং সি।
ভিটামিনের উৎস : গাছের সবুজ পাতা, কচি ডগা, হলুদ ও সবুজ বর্ণের সবজি, ফল ও বীজ ইত্যাদি অংশে ভিটামিন থাকে।
৬৯। ভিটামিনের অভাবজনিত কিছু রোগের নাম লিখুন।
উত্তরঃ ভিটামিন – এ
রোগের নাম – রাতকানা, জেরোফথালমিয়া ।
ভিটামিন-বি
রোগের নাম – ভিটামিন বি – এর অভাবে বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে । যেমন – বেরিবেরি, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া ইত্যাদি ।
ভিটামিন – সি
রোগের নাম – ভিটামিন সি (অ্যাসকরবিক এসিড) – এর অভাবে স্কার্ভি রােগ হয়। তাছাড়া এর অভাবে শিশুদের মাড়ি ফুলে যায়, দেহের ওজন হ্রাস পায়, রক্তশূন্যতা হয়, দুর্বল লাগে এবং ক্ষত সারতে ভাঙা হাড় জোড়া লাগতে দেরি হয়।
ভিটামিন – ডি
রোগের নাম – রিকেটস রোগ হয় ।
ভিটামিন – কে
রোগের নাম – ভিটামিন – কে এর। অভাব হলে নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি, হাড়ের দুর্বলতা, হাড়ে খনিজের স্বল্পতা, হৃদরোগ, অস্টিয়োপোরোসিস, দাঁতের ক্ষয়, রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা ইত্যাদি দেখা দেয়।
৭০। ভিটামিন – বি কমপ্লেক্স কী ?
উত্তরঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স হল পুষ্টি উপাদানগুলির একটি গ্রুপ যা কোষের বিপাক এবং লোহিত রক্তকণিকা সংশ্লেষণের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে আটটি বি ভিটামিন রয়েছে:থায়ামিন (B1)
রিবোফ্লাভিন (বিএক্সএনইউএমএক্স)
নিয়াসিন (বিএক্সএনইউএমএক্স)
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বিএক্সএনইউএমএক্স)
পাইরিডক্সিন (বি 6)
বায়োটিন (বি 7)
ফলিক অ্যাসিড (B9)
কোবালামিন (B12)
৭১। মাইক্রো ও ম্যাক্রো উপাদান সম্পর্কে লিখুন।
উত্তরঃ ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা ম্যাক্রো উপাদান (macro-nutrient বা macro-element): উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান বেশি পরিমাণে দরকার হয়, সেগুলোকে ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা ম্যাক্রো উপাদান বলা হয়। ম্যাক্রো উপাদান 10 টি, যথা: নাইট্রোজেন (N), পটাশিয়াম (K), ফসফরাস (P), ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (O), সালফার (S) এবং লৌহ (Fe)।(মনে রাখার উপায়: MgK CaFe for Nice CHOPS)
মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা মাইক্রো উপাদান (micro-nutrient বা micro-element): উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান অত্যন্ত সামান্য পরিমাণে প্রয়োজন হয় তাদেরকে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা মাইক্রো উপাদান বলে। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট 6 টি, যথা: দস্তা বা জিংক (Zn), ম্যাংগানিজ (Mn), মোলিবডেনাম (Mo), বোরন (B), তামা বা কপার (Cu) এবং ক্লোরিন (Cl)।
৭২। BMI ও BMR সম্পর্কে লিখুন।
উত্তরঃ বিএমআর (BMR) এবং বিএমআই (BMI) (BMR and BMI)বিএমআর (Basal Metabolic Rate) পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় মানবশরীরে ব্যবহৃত শক্তির পরিমাণ নির্দেশ করে।
বিএমআই (Body Mass Index) মানবদেহের গড়ন ও চর্বির একটি সূচক নির্দেশ করে।
বিএমআর মান নির্ণয় (Calculating BMR)
মেয়েদের বিএমআর = 655 + (9.6× ওজন কেজি) + (1.8 × উচ্চতা সে.মি.) – (4.7 × বয়স বছর)
ছেলেদের বিএমআর =( 66 + (13.7 ওজন কেজি) +(5× উচ্চতা সে.মি.) – (6.8 × বয়স বছর))
ধরা যাক একজন নারীর বয়স 33 বছর, উচ্চতা 165 সে.মি. এবং ওজন 94 কেজি।
সুতরাং তার বিএমআর = 655+ (9.6 × 94)+ (1.8 x 165) (4.7 × 33)
= 655+ 902.4 +297 – 155.1
= 1699.3 ক্যালরি
বিএমআই মান নির্ণয় (Calculating BMI)
বিএমআই (BMI) = দেহের ওজন (কেজি)/ দেহের উচ্চতা (মিটার)2
উদাহরণ হিসেবে 125 সেমি (1.25 মিটার) উচ্চতা এবং 50 কেজি ওজনের একজন ব্যক্তির বিএমআই হচ্ছে 32।
৭৩। ১ ক্যালরি = কত জুল ?
উত্তরঃ 4.2 জুল ।
৭৪। হরমোন কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে জৈব রাসায়নিক পদার্থ উদ্ভিদদেহে উৎপন্ন হয়ে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশ, বিভিন্ন অঙ্গ সৃষ্টি ইত্যাদি কাজ নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে হরমোন বা প্রাণরস বলে।
৭৫। এনজাইম কাকে বলে ?
উত্তরঃ এনজাইম এক প্রকার প্রোটিন, যা জীবদেহে বিভিন্ন বিক্রিয়ার হারকে তরান্বিত করে কিন্তু বিক্রিয়ার পর নিজেরা অপরিবর্তিত থাকে। একে জৈব অনুঘটক/ জৈব প্রভাবকও বলা হয়।
৭৬। ভার্নালাইজেশন কাকে বলে ?
উত্তরঃ শৈত্য প্রদানের মাধ্যমে উদ্ভিদের ফুল ধারণকে ত্বরান্বিত করার প্রক্রিয়াকে ভার্নালাইজেশন বলে।
৭৭। বায়োলজিক্যাল ক্লক কী?
উত্তরঃ উদ্ভিদে আলো-অন্ধকারের ছন্দকে বায়োলজিক্যাল ক্লক বলে।
৭৮। ফেরোমন কী?
উত্তরঃ কোনো পিঁপড়া খাদ্যের খোঁজ পেলে খাদ্য উৎস থেকে বাসায় আসার পথে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত করে। যাকে ফেরোমন বলে।
৭৯। প্রতিবর্তী ক্রিয়া কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রতিবর্তী ক্রিয়া (Reflex Action) বলতে উদ্দীপনার আকস্মিকতা এবং তার কারণে স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়াকে বোঝায়। হঠাৎ করে আঙ্গুলে সুচ ফুটলে অথবা হাতে গরম কিছু পড়লে আমরা দ্রুত হাতটি উদ্দীপনার স্থান থেকে সরিয়ে নিই, এটি প্রতিবর্তী ক্রিয়ার ফল।
৮০। করোটিক স্নায়ু কাকে বলে ?
উত্তরঃ যেসব স্নায়ু মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ থেকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি হয়ে করোটিকার বিভিন্ন ছিদ্রপথে বেরিয়ে দেহের সেগুলোকে করোটিক স্নায়ু ( Cranial Nerves ) বলে। মানুষের মস্তিষ্কে বারো জোড়া করোটিক স্নায়ু আছে।
৮১। কিছু ফাইটোহরমোনের নাম ও বৈশিষ্ট্য লিখুন ।
উত্তরঃ ফাইটোহরমোনগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
অক্সিন (Auxin)
আবিষ্কারক (Discoverer) : চার্লস ডারউইন
বৈশিষ্ট্য (Characteristic) :
i) শাখা কলমে মূল গজায়।
ii) ফলের অকালে ঝরে পড়া রোধ করে।
iii) অভিস্রবন ও শ্বসন ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি ঘটায়।
জিবরেলিন (Gibberelin)
i) কান্ডের অতি বৃদ্ধি ঘটায়।
ii) বীজের সুপ্তাবস্থা, দৈর্ঘ্য কমায়।
iii) অঙ্কুরোদগমে কার্যকারিতা রয়েছে।
iv) পর্ব মধ্য গুলো দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়।
সাইটোকাইনিন (Cytokinin)
i) কোষের বৃদ্ধি ঘটায়।
ii) অঙ্গের বিকাশ সাধন করে।
iii) বীজ ও অঙ্গের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে।
iv) বার্ধক্য বিলম্বিত করতে সাহায্য করে ।
ইথিলিন (Ethylene)
এ হরমোনটি একটি গ্যাসীয় পদার্থ ।
i) বীজ ও মুকুলের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে।
ii) চারা গাছের কান্ডের বৃদ্ধি ঘটিয়ে চারা গাছকে লম্বা হতে সাহায্য করে।
iii) ফুল ও ফল সৃষ্টির সূচনা করে।
৮৩। নিউরন কাকে বলে ?
উত্তরঃ মানুষের স্নায়বিক সমন্বয়ের প্রধান সমন্বয়কারী স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও কার্যকর একককে নিউরন বলে । নিউরনের দুটি প্রধান অংশ হচ্ছে কোষদেহ (cell body) এবং প্রলম্বিত অংশ বা নিউরাইট (neurite)। নিউরাইট দুধরনের অংশ নিয়ে গঠিত : বহু শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট ছোট ছোট প্রলম্বিত অংশ বা ডেনড্রাইট (dendrite) এবং শাখা-প্রশাখাবিহীন দীর্ঘ প্রলম্বিত অংশ বা অ্যাক্সন (axon)।
৮৪। যে প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ এক বা একাধিক উদ্ভিদ তৈরি করে, তাকে উদ্ভিদ প্রজনন (Plant Reproduction) বলে।
প্রজননের প্রকারভেদ :-
জীবের প্রজনন দু’প্রকার। যথা-
(ক) অযৌন প্রজনন এবং
(খ) যৌন প্রজনন ।
৮৫। নিষেক ও দ্বি – নিষেক কাকে বলে ?
উত্তরঃ
নিষেকঃ স্ত্রী গ্যামিট ও পুরুষ গ্যামিটের যৌন মিলন প্রক্রিয়া হল নিষেক। পরাগধাণী থেকে পরাগরেণুর মাধ্যমে পুং গ্যামিট সচল হয়ে নিশ্চল স্ত্রী গ্যামিটের কাছে গমন করে এবং নিষেক ঘটায়।
দ্বিনিষেকক্রিয়া বা দ্বি-নিষেক (Double fertilization) : একই সময়ে ডিম্বাণুর সাথে একটি পুংগ্যামিটের মিলন ও সেকেন্ডারি নিউক্লিয়াসের সাথে অপর পুংগ্যামিটের মিলন প্রক্রিয়াকে দ্বিনিষেকক্রিয়া (double fertilization) বা দ্বিগর্ভাধান প্রক্রিয়া বলে। দ্বিনিষেক আবৃতবীজী উদ্ভিদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য (নগ্নবীজী উদ্ভিদের Ephedra-তে দ্বিনিষেক আবিস্কৃত হয় ১৯৯০ সালে- এটি ব্যতিক্রম)।
৮৬। পরাগায়ন কাকে বলে ? কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ ফুলের পরাগ সংযোগকে পরাগায়ন(Pollination) বলে।
পরাগায়ন(Pollination) দুই প্রকার :
i)স্ব-পরাগায়নi i)পর পরাগায়ন
৮৭। গ্যামেটোজেনেসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় জনন অঙ্গের (শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয়) প্রাইমর্ডিয়াল জননকোষ (জনন মাতৃকোষ) থেকে গ্যামেট (শুক্রাণু ও ডিম্বাণু) উৎপন্ন হয়ে নিষেকে সক্ষম হয়ে উঠে তাকে গ্যামেটোজেনেসিস (গ্রিক gamos = জননকোষ এবং genesis = উৎপত্তি হওয়া) বলে।
৮৮। স্পার্মাটোজেনেসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ পূর্ণাঙ্গ শুক্রাণু সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে স্পার্মাটোজেনেসিস (spermatogenesis: গ্রিক sperma = শুক্রাণু + genesis = জনন বা সৃষ্টি) বলে।
৮৯। উওজেনেসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ ডিম্বাশয়ের অভ্যন্তরে ডিম্বাণু সৃষ্টির পদ্ধতিকে উওজেনেসিস (oogonesis; গ্রিক oon = ডিম্বাণু + genesis = সৃষ্টি বা জনন) বলে।
৯০। ফুল কাকে বলে ? এর বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তরঃ প্রজননের জন্য রূপান্তরিত বিশেষ বিটপকে ফুল(Flower) বলে।
ক) একটি আদর্শ ফুলের পাঁচটি স্তবকের মধ্যে দুটি স্তবক- পুং স্তবক ও স্ত্রী স্তবক সরাসরি প্রজননে অংশ নেয়। অন্য স্তবক গুলো সরাসরি অংশ নেয় না। কিন্তু প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খ) যে ফুলে পাঁচটি স্তবকই উপস্থিত থাকে তাকে সম্পূর্ণ ফুল বলে। যেমন: ধুতুরা, জবা।
পাঁচটি স্তবকের যেকোন একটি না থাকলে তাকে অসম্পূর্ণ ফুল বলে। যেমন: লাউ, কুমড়া।
গ) বৃন্তযুক্ত ফুলকে সবৃন্তক ফুল বলে। যেমন: জবা, কুমড়া।
ঘ) বৃন্তহীন ফুলকে অবৃন্তক ফুল বলে। যেমন: হাতিশূঁড়।
৯১। অমরা কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে বিশেষ অঙ্গের মাধ্যমে মাতৃ জরায়ুতে ক্রমবর্ধমান ভ্রূণ ও মাতৃ জরায়ু টিস্যুর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হয় তাকে অমরা বা গর্ভফুল বলে।
৯২। ফিটাস কাকে বলে ?
উত্তরঃ জাইগোট সৃষ্টির ৭ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভস্থ ভ্রুনকে মনুষ্যরুপে সনাক্ত করা হয়। ভ্রুনের এ অবস্থাকে ফিটাস (fetus) বলে।
৯৩। জীববৈচিত্র্য কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রকৃতির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন অঞ্চলে বংশবিস্তার করে টিকে থাকার উদ্দেশ্যে জীবের বিভিন্ন প্রজাতির বহিঃঅঙ্গসংস্থান ও অন্তঃঅঙ্গসংস্থান, আকার, আকৃতি, প্রকৃতি ইত্যাদির প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করে অভিযোজিত হওয়ার ফলে জীবদের মধ্যে যে বৈচিত্র্যময়তার উদ্ভব ঘটে তাকে জীব বৈচিত্র্য বলে।
৯৪। এক্স – সিটু ও ইন – সিটু সংরক্ষণ কাকে বলে ?
উত্তরঃ
জীববৈচিত্র্যকে পরিবেশের সংরক্ষণকে নিজস্ব বাইরে এক্স – সিটু সংরক্ষণ বলে।
কোনো জীব প্রাকৃতিকভাবে যেখানে জন্মায় তাকে ঠিক সেখানে রেখে সংরক্ষণ করাকে ইন-সিটু সংরক্ষণ বলে।
৯৫। ইকোপার্ক কী ?
উত্তরঃ একটি প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত এলাকা যেখানে পর্যটকরা প্রকৃতিবান্ধব পরিবেশে নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে এবং একই সাথে উক্ত এলাকার জীববৈচিত্র্যও সংরক্ষিত হবে তা ইকোপার্ক নামে পরিচিত। যেমন- সীতাকুন্ড ইকোপার্ক (চট্টগ্রাম), মাধবকুন্ড ইকোপার্ক (মৌলবীবাজার), বঙ্গবন্ধু যমুনা ইকোপার্ক প্রভৃতি।
৯৬। কয়েকটি অভয়ারণ্যের নাম বলুন।
উত্তরঃ ক) হাজারিখিল বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য – (চট্টগ্রাম)।
খ) চর কুকড়ি-মুকড়ি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য- (ভোলা)।
গ) সুন্দরবন বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য (পূর্ব) – (বাগেরহাট)
ঘ) সুন্দরবন বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য (পশ্চিম) – (সাতক্ষীরা)
ঙ) সুন্দরবন বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য (দক্ষিণ) – (খুলনা)।
৯৭। বাংলাদেশের ৪ টি বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম লিখুন।
উত্তরঃ বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদের নাম :
১. টালিপাম (Corypha taliera Roxb.),
২. মল্লিকা ঝাঁজি (Aldrovanda vesiculosa L.),
৩. ক্ষুদে বড়লা (Knema bengalensis),
৪. রোটেলা (Rotala simpliciuscula),
৫. কোরুদ (Licuala peltata)
৯৮। সীড ব্যাংক কাকে বলে ?
উত্তরঃ বীজের সংরক্ষণাগারকে সীড ব্যাংক বা লক্ষণ বীজ ব্যাংক বলে। পষ্পক উদ্ভিদের প্রায় ৭০% বীজ শুকিয়ে ২০০ এবং সে. তাপমাত্রায় শতাব্দীর পর শতাব্দী অঙ্কুরোদগম ক্ষমতাসমূহ সংরক্ষণ করা যায়। যেমন- ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি।
৯৯। বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় ৪ টি প্রাণীর নাম লিখুন ।
উত্তরঃ
১. ঘড়িয়াল (Gavialis gangeticus)
২. মিঠাপানির কুমির (Crocodylus palustris)
৩. রাজশকুন (Torgos calvus)
৪. নীল গা (Boselaphus tragocamelus)
৫. শুশুক (Platanista gangetica)
১০০। সুন্দরবনের ৪ টি উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম লিখুন।
উত্তরঃ
১. সুন্দরী- Heritiera fomes
২. গোলপাতা- Nipa fruticans
৩. গরান- Ceriops roxburghii
৪. আমুর- Amoora cucuilara
১০১। সুন্দরবনের ৫ টি প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম লিখুন।
উত্তরঃ
১. Panthera tigris (রয়েল বেঙ্গল টাইগার)
২. Cervus axis (চিত্রা হরিণ)
৩. Mantiacus mentjak (মায়া হরিণ)
8. Scotophilus kohli (হলদে বাদুড়)
৫. Naja naja (গোখরা)
১০২। বংশগতি কাকে বলে ?
উত্তরঃ পিতামাতার বৈশিষ্ট্যগুলো বংশানুক্রমে সন্তান সন্ততির দেহে সঞ্চারিত হওয়ার প্রক্রিয়াই হলো বংশগতি।
১০৩। জিন কাকে বলে ?
উত্তরঃ ডিএনএ এর খন্ডিত অংশকেই জিন বলে।
১০৪। জিনোটাইপ কাকে বলে ?
উত্তরঃ কোনো জীবের লক্ষণ নিয়ন্ত্রণকারী জিন যুগলের গঠনকে জিনোটাইপ বলে।
১০৫। ফিনোটাইপ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বাহ্যিক প্রকাশকে বলে ফিনোটাইপ ।
১০৬। প্রকট ও প্রচ্ছন্ন জিন কাকে বলে ?
উত্তরঃ হেটারোজাইগাস জীবে বা সঙ্করে যে লক্ষণ প্রকাশ পায় তাকে প্রকট লক্ষণ এবং এই লক্ষণের জন্য জিনকে বলা হয় প্রকট জিন। আবার যখন এই জীবে বা সঙ্করে যে লক্ষণ প্রকাশ পায় না সেই লক্ষণকে প্রচ্ছন্ন লক্ষণ এবং এই লক্ষণের জন্য দায়ী জিনকে প্রচ্ছন্ন জিন বলে।
১০৭। লিথাল জিন কাকে বলে ?
উত্তরঃ হোমোজাইগাস অবস্থার কোনো জিন জীবের মৃত্যুর কারণ হলে সে জিনকে লিথাল জিন বলা হয়।
১০৮। মনোহাইব্রিড ও ডাইহাইব্রিড ক্রস কাকে বলে ?
উত্তরঃ এক জোড়া বিপরীত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন চরিত্রের ভিত্তিতে দুটি জীবের মধ্যে জনন সম্পাদিত হলে, তাকে মনোহাইব্রিড ক্রস বলে।
একই প্রজাতিভুক্ত দুজোড়া বিকল্প চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন দুটি জীবের সংকরায়ণ কে দ্বিসংকর জনন বা ডাই-হাইব্রিড ক্রস বলে ।
১০৯। মেন্ডেলের সুত্র দুটি লিখুন।
উত্তরঃ
১. প্রথম সূত্র (Mendel’s First Law):
সংকর জীবে বিপরীত বৈশিষ্টের ফ্যাক্টরগুলো (জিনগুলো) মিশ্রিত বা পরিবর্তিত না হয়ে পাশাপাশি অবস্থান করে এবং জননকোষ (গ্যামেট) সৃষ্টির সময় পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে ভিন্ন ভিন্ন জননকোষে প্রবেশ করে।
এ সূত্রকে মনোহাইব্রিড ক্রস সূত্র (Law of Monohybrid cross) বা জননকোষ শুদ্ধতার সূত্র (Law of Purity of gametes) বা পৃথকীকরণ সূত্র (Law of Segregation)-ও বলা হয়।
২. দ্বিতীয় সূত্র (Mendel’s Second Law):
দুই বা ততোধিক জোড়া বিপরীত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জীবের মধ্যে ক্রস ঘটালে প্রথম সংকর পুরুষে (F1) কেবলমাত্র প্রকট বৈশিষ্ট্যগুলোই প্রকাশিত হবে, কিন্তু জননকোষ (গ্যামেট) উৎপাদনকালে বৈশিষ্ট্যগুলো জোড়া ভেঙ্গে পরস্পর থেকে স্বতন্ত্র বা স্বাধীনভাবে বিন্যস্ত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন জননকোষে প্রবেশ করবে।
এ সূত্রকে স্বাধীনভাবে মিলনের বা বন্টনের সূত্র (Law of Independent Assortment)-ও বলা হয়। এ ধরনের ক্রসে নতুন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জীবের উৎপত্তি হয়।
১১০। বিবর্তন কাকে বলে? কয়েকজন বিজ্ঞানীর নাম বলুন।
উত্তরঃ বিবর্তন বা অভিব্যক্তি (Evolution)
কোনো জীবের জনগোষ্ঠীর উত্তরাধিকারযোগ্য বৈশিষ্ট্যে (জিনগত বৈশিষ্ট্য) বংশপরম্পরায় পরিবর্তন, সঞ্চারণ ও অভিযোজনের প্রক্রিয়াকে বিবর্তন বলে।
ডারউইনিজম বা প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ (Darwinism or Theory of Natural Selection)
চার্লস রবার্ট ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) একজন ব্রিটিশ প্রকৃতিবিজ্ঞানী (naralist) ছিলেন। ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত “Origin of Species By Means of Natural Selection” নামক গ্রন্থে তিনি অভিব্যক্তি সম্পর্কে তাঁর সুচিন্তিত ও জোরালো মতবাদ প্রকাশ করেন। এ মতবাদ প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ বা ডারউইনিজম নামে পরিচিত।
ল্যামাকিজম বা ল্যামাকবাদ বা অজিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার মতবাদ (Lamarckism or Theory of Inheritance of Acquired Characters)
ল্যামার্ক একজন ফরাসী দার্শনিক ও প্রকৃতিবিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি ১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম জা বাপ্টিস্ট পিয়েরে এন্টোইনে দ্য মনেট শেফালিয়ের দ্য ল্যামার্ক (Jean Baptiste Pierre Antoine de Monet Chevalier de Lamarck. 1744-1829)। প্রথমে তিনি ফরাসী সেনাবাহিনীতে যোগ দেন, তারপর উদ্ভিদবিজ্ঞানী হিসেবে জীবন শুরু করেন। কিন্তু পরবর্তী জীবনে প্রাণীর উপর গবেষণা করেই বেশি সময় ব্যয় করেছেন। তিনি বায়োলজি (Biology) শব্দের প্রবর্তক এবং প্রাণিজগতকে মেরুদন্ডী ও অমেরুদভী এ দুভাগে বিভক্ত করেন। একটি সুসংগঠিত জৈব বিবর্তনবাদের প্রথম প্রবক্তা হিসেবে ল্যামাক সুপরিচিত। তাঁর মতবাদটি, অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার মতবাদ নামে অভিহিত।
১১১। জৈব প্রযুক্তি বা Biotechnology কী ?
উত্তরঃ যে প্রযুক্তির সাহায্যে কোনো জীবকোষ, অণুজীব বা তার অংশবিশেষ ব্যবহার করে নতুন কোনো বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জীব এর উদ্ভাবন বা উক্ত জীব থেকে প্রক্রিয়াজাত বা উপজাত দ্রব্য প্রস্তুত করা যায়, সে প্রযুক্তিকে জৈব প্রযুক্তি বলে।
১১২। প্লাজমিড কাকে বলে ?
উত্তরঃ ক্রোমোসোম বহির্ভূত বৃত্তাকার দ্বিসুত্রক DNA অনুকে প্লাসমিড বলা হয়। বিজ্ঞানী laderberg(1952) E. Coli ব্যাকটেরিয়ার কোষে সর্বপ্রথম প্লাসমিড এর সন্ধান পান।
১১৩। Recombinant DNA কাকে বলে ?
একটি জীবের কোষ থেকে কোনো কাঙ্খিত DNA-অংশ রেস্ট্রিকশন এনজাইমের সাহায্যে কেটে নিয়ে অন্য জীবের কোষের DNA এর সাথে সংযুক্ত করার ফলে যে নতুন (মিশ্রিত) DNA উৎপন্ন হয় তাকে Recombinant DNA বলে।
রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রয়োগ (Use and application of recombinant DNA technology):
কৃষিক্ষেত্রে (In agriculture) –
(ক) ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ
(খ) গুণগত মান উন্নয়নে
(গ) সুপার রাইস (Super rice) বা গোল্ডেন রাইস (Golden rice)
(ঘ) রোগ প্রতিরোধক্ষম জাত উদ্ভাবনে
(ঙ) নাইট্রোজেন সংবন্ধনে
১১৪। টিস্যুকালচার কী ?
উত্তরঃ উদ্ভিদের যেকোনো বিভাজনক্ষম অঙ্গ থেকে (যেমন-শীর্ষমুকুল, কক্ষমুকুল, কচি পাতা বা পাপড়ি ইত্যাদি) বিচ্ছিন্ন করা কোনো টিস্যু সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত (sterile) অবস্থায় উপযুক্ত পুষ্টি মাধ্যমে বৃদ্ধিকরণ (এবং পূর্ণাঙ্গ চারাউদ্ভিদ সৃষ্টি) করাকে টিস্যু কালচার বলে। অর্থাৎ গবেষণাগারে কোনো টিস্যুকে পুষ্টি মাধ্যমে কালচার করাই হলো টিস্যু কালচার।
১১৫। সাইটোকাইনেসিস ও ক্যারিওকাইনেসিস কাকে বলে ?
উত্তরঃ মাইটোসিস কোষ বিভাজনকালে নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস বলে।
যে প্রক্রিয়ায় বিভাজনরত কোষের সাইটোপ্লাজম দুই ভাগে বিভক্ত হয়, তাকে সাইটোকাইনেসিস বলে।
১১৬। ফ্লুইড মোজাইক মডেল কী ?
উত্তরঃ প্লাজমামেমব্রেনের গঠন বর্ণনায়
১৯৭২ সালে এস. জে. সিঙ্গার এবং জি. এল. নিকলসন কর্তৃক প্রবর্তিত মডেলটিকে বলা হয় ফ্লুইড মোজাইক মডেল।
১১৭। কোষচক্র কাকে বলে ?
উত্তরঃ একটি কোষের সৃষ্টি থেকে শুরু করে এর বৃদ্ধি, বিভাজন সহ সমগ্র জীবনকে কোষচক্র বলে (cell cycle)। সর্বপ্রথম এটি প্রত্যক্ষ করে হাওয়ার্ড ও পেল্ক।
১১৮। ব্রায়োফাইটা ও টেরিডোফাইটা কাকে বলে ?
উত্তরঃ ব্রায়োফাইটা হলো অপুষ্পক উদ্ভিদ, এদের কোন পুষ্প বা ফুল তৈরি হয় না। এদের পাতা,মূল, কান্ড, শাখায় বিভক্ত করা যায় না। যেমন – Riccia
বৈশিষ্ট্য (Characteristics) :
ক) এরা বহুকোষী উদ্ভিদ। এরা অপুষ্পক ও অবীজী অর্থাৎ এদের ফুল, ফল ও বীজ হয় না।
খ) এদের দেহ গ্যামিটোফাইট (gametophyte) তথা হ্যাপ্লয়েড। গ্যামিটোফাইট সর্বদাই স্বতন্ত্র ও স্বভোজী উদ্ভিদ।
গ) দেহ থ্যালয়েড অর্থাৎ দেহকে সত্যিকার মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায় না, তবে মস জাতীয় উদ্ভিদকে
‘নরম কান্ড ও পাতার’ মতো অংশে চিহ্নিত করা যায়।
ঘ) এদের মূল নেই, তবে মূলের পরিবর্তিত এককোষী রাইয়জেড (rhizoid) এবং কোনো কোনো প্রজাতিতে
বহুকোষী স্কেলে (scale) থাকে।
Hepaticae শ্রেণির ব্রায়োফাইটস সদস্যদেরকে লিভারওয়ার্ট (Liverwort) বলে।
টেরিডোফাইটা হল একটি ভাস্কুলার উদ্ভিদ ( জাইলেম এবং ফ্লোয়েম সহ) যা স্পোরের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে।
যেমন – Pteris
টেরিডোফাইটার বৈশিষ্ট্যঃ
ক) এরা অপুষ্পক, অবীজী উদ্ভিদ।
খ) এদের প্রধান দেহটি স্পোরোফাইট বা রেণুধর অথ্যাৎ ডিপ্লয়েড(2n)।
গ) এদের দেহ মূল,কান্ড ও পাতায় বিভক্ত।
ঘ) এরা স্বাধীন এবং বীরুৎ প্রকৃতির(ট্রি ফার্ন ছাড়া)।
ঙ) দেহ জাইলেম ও ফ্লোয়েম দিয়ে গঠিত ভাস্কুলার বান্ডল দিয়ে গঠিত।
চ) এদের জননাঙ্গ বন্ধ্যাকোষের আবরণ দিয়ে আবৃত
ছ) এদের স্ত্রী গ্যামেট নিশ্চল বা আর্কিগোনিয়াম উৎপন্ন হয় এবং সচল পুং গ্যামেট বা অ্যান্থেরিডিয়াম উৎপন্ন হয়।
১১৯। মনোকটিলিডনিস ও ডাইকটিলিডনিস এর বৈশিষ্ট্য লিখুন ।
উত্তরঃ মনোকটিলিডনিস (Monocotyledones)
১। এদের বীজে একটি বীজপত্র থাকে
২। পাতার শিরাবিন্যাস সমান্তরাল
৩। এদের গুচ্ছ মূল থাকে
৪। পুষ্প ট্রাইমেরাস
ডাইকটিলিডনিস
১। এদের বীজে দুইটি বীজপত্র থাকে
২। পাতার শিরাবিন্যাস জালিকাকার
৩। এদের প্রধান মূল থাকে
৪। পুষ্প টেট্রামেরাস বা পেন্টামেরাস
১২০। সালোকসংশ্লেষণ কাকে বলে?
উত্তরঃ সবুজ উদ্ভিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো যে এরা সূর্যালোকের উপস্থিতিতে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) এবং পানি থেকে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাজাতীয় খাদ্য তৈরি করে। সবুজ উদ্ভিদে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য তৈরি হওয়ার এ প্রক্রিয়াকে সালোকসংশ্লেষণ (Photosynthesis) বলা হয়।
১২১। শ্বসন কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জীবকোষস্থ জটিল জৈবযৌগ (খাদ্যবস্তু) জারিত হয়, ফলে জৈবযৌগে সঞ্চিত স্থিতিশক্তি রূপান্তরিত হয়ে গতিশক্তি বা রাসায়নিক শক্তিতে পরিণত হয়, তাকে শ্বসন (Respiration)বলে।
১২২। চক্রীয় ও অচক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন কাকে বলে ?
উত্তরঃ চক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন (Cyclic Photophosphorylation) যে ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় আলোকশক্তি শোষণের ফলে উদ্দীপ্ত ক্লোরোফিল অণু থেকে নির্গত উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ইলেকট্রন বিভিন্ন বাহকের মাধ্যমে নিস্তেজ অবস্থায় পুনরায় ঐ ক্লোরোফিল অণুতে ফিরে আসে এবং একবার পরিভ্রমণ শেষে একটি ATP অণু তৈরি করে, তাকে চক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন বলে।
অচক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন (Noncyclic Photophosphorylation)
যে ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিল অণু থেকে উৎক্ষিপ্ত উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ইলেকট্রন বিভিন্ন বাহকের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করার পর NADP-এর সাথে যুক্ত হয়, কিন্তু ইলেকট্রন যে ক্লোরোফিল থেকে নির্গত হয়েছিল সেই ক্লোরোফিলে পুনরায় ফিরে যায় না তাকে অচক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন বলা হয়।
১২৩।
১২৪। DNA ও RNA এর মধ্যে পার্থক্য লিখুন।
উত্তরঃ DNA ও RNA এর পার্থক্য
১। DNA হল ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড (Deoxy Ribonuclic Acid)। অপরদিকে, RNA হল রাইবো নিউক্লিক এসিড (Ribonucleic acid)।
২। DNA তে ডিঅক্সি রাইবোজ সুগার থাকে। পেন্টোজ সুগারের সাথে ক্ষারক থাকে এডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থায়ামিন ।
অপরদিকে, RNA তে রাইবোজ সুগার থাকে। পেন্টোজ সুগার এর সাথে ক্ষারক থাকে এডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও ইউরাসিল।
৩। DNA এর ক্ষারকগুলো সর্বদাই হাইড্রোজেন বন্ধনী দ্বারা যুক্ত থাকে। অপরদিকে, RNA এর লুপ বা ভাঁজযুক্ত স্থানে ক্ষারকগুলো বন্ধনী দ্বারা যুক্ত; কিন্তু অন্যত্র বন্ধনীহীন।
৪। DNA নিউক্লিয়াসে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে থাকে। এটি ক্রোমোজোমের মূল উপাদান। তবে মাইটোকন্ড্রিয়া ও ক্লোরোপ্লাস্টেও পাওয়া যায়। অপরদিকে, RNA সাইটোপ্লাজমে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে থাকে। এটি রাইবোজোমের মূল উপাদান। তবে ক্রোমোজোমেও পাওয়া যায়।
১২৫। নিউক্লিওটাইড ও নিউক্লিওসাইড এর পার্থক্য লিখুন ।
উত্তরঃ
১. নিউক্লিওটাইড হলো নিউক্লিওসাইড এবং ফসফেট সমন্বয়ে গঠিত এক ধরনের জৈব যৌগ যা নিউক্লিক এসিড পলিমার ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (DNA) ও রাইবোনিউক্লিক এসিড (RNA)-এর মনোমার হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে, নিউক্লিওসাইড হল কিছু গ্লাইকোসিল্যামাইন যা ফসফেট গ্রুপ ছাড়া নিউক্লিওটাইড হিসাবে ভাবা যেতে পারে। একটি নিউক্লিওসাইড কেবল একটি নিউক্লিওবেস এবং একটি পাঁচ-কার্বনযুক্ত শর্করা (রাইবোজ বা ২’-ডিঅক্সিরাইবোজ) নিয়ে গঠিত
২. নিউক্লিওটাইডের রাসায়নিক সংমিশ্রণে একটি ফসফেট গ্রুপ, একটি চিনি এবং একটি নাইট্রোজেনাস বেস থাকে। অন্যদিকে, একটি নিউক্লিওসাইডের একটি রাসায়নিক গঠন রয়েছে যা ফসফেট গ্রুপ ছাড়াই একটি চিনি এবং একটি বেস নিয়ে গঠিত।
৩. নিউক্লিওটাইড আজও ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এজেন্টদের অন্যতম প্রধান কারণ। অন্যদিকে, নিউক্লিওসাইড গুলি ওষুধে এজেন্ট হিসাবে ব্যবহৃত হয় যা প্রাথমিকভাবে ভাইরাস এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়।
৪. নিউক্লিওটাইড ফস্ফেট গ্রুপ একটি অস্থায়ী ফস্ফেট ইয়োন যা অ্যাডেনোসিন ট্রাইফস্ফেট, সাধারণত অস্থায়ী হাইড্রোজেনফস্ফেট (HPO4) বা ফস্ফরিক অ্যাসিড (H3PO4) সংযুক্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে, নিউক্লিওসাইডে কোনো ফস্ফেট গ্রুপ নেই।
৫. নিউক্লিওটাইডের কিছু প্রধান উদাহরণ হল অ্যাডেনোসিন, গুয়ানোসিন ইত্যাদি। অন্যদিকে, নিউক্লিওসাইডের কিছু মূল উদাহরণ শুধুমাত্র ফসফেট গ্রুপের যোগে নিউক্লিওটাইডের মতোই।
১২৬। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
উত্তরঃ ভাইরাস হলো এক প্রকার অতিক্ষুদ্র জৈব কণা বা অণুজীব যারা জীবিত কোষের ভিতরেই মাত্র বংশবৃদ্ধি করতে পারেভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে তা নিচে আলোচনা করা হলো-
১। ভাইরাস হলো এক প্রকার অতিক্ষুদ্র জৈব কণা বা অণুজীব যারা জীবিত কোষের ভিতরেই মাত্র বংশবৃদ্ধি করতে পারে। অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়া (Bacteria) হলো এক প্রকারের আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত, অসবুজ, এককোষী অণুজীব।
২। ভাইরাসে DNA অথবা RNA যেকোনো একটি থাকে।ক্যাপসিডের মধ্যে অবস্থান করে। অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়ার DNA ও RNA উভয়ই থাকে।ক্যাপসিডের মধ্যে অবস্থান করে না।
৩। ব্যাকটেরিয়া জীবন্ত জিনিস। অন্যদিকে ভাইরাস তাদের নিজের উপর নির্ভর করতে পারে না।
৪। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়ার সহজেই মারা যায়। অন্যদিকে এন্টি ভাইরাসজনিত অ্যান্টিভাইরাস কেবল ভাইরাসগুলির প্রজনন হ্রাস করতে পারে এবং তাদের ধ্বংস করতে পারে না।
৫। রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া কোষকে ধ্বংস করে এমন টক্সিন উৎপন্ন করে। তারা খাবার বিষক্রিয়া এবং মেনিনজাইটিস , নিউমোনিয়া এবং যক্ষ্মা সহ অন্যান্য গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে ভাইরাসগুলি হলো রোগাক্রান্ত যা মুরগী, ফ্লু, রেবিজি , ইবোলা ভাইরাসের রোগ , জিকা রোগ এবং এইচআইভি / এইডস সহ বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে থাকে।
৬। ব্যাকটিরিয়া আন্তঃকোষীয় জীব। অন্যদিকে ভাইরাসগুলি অন্তঃকোষীয় জীব, যার অর্থ তারা হোস্ট কোষে প্রবেশ করে এবং বাস করে।
১২৭। সবাত ও অবাত শ্বসনের মধ্যে পার্থক্য লিখুন ।
সবাত শ্বসন ও অবাত শ্বসনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। সবাত শ্বসনে মুক্ত অক্সিজেনের (O2) উপস্থিতিতে ঘটে। অন্যদিকে অবাত শ্বসনে মুক্ত অক্সিজেনের অনপস্থিতিতে ঘটে।
২। সবাত শ্বসন বস্তু সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়। অন্যদিকে অবাত শ্বসন বস্তু আংশিক জারিত হয় ।
৩। সবাত শ্বসন বায়ুজীবি জীবে ঘটে । অন্যদিকে অবাদ শ্বসন অবায়ুজীবি জীবে ঘটে ।
৪। সবাত শ্বসন প্রান্তীয় হাইড্রোজেন গ্রাহক হল আণবিক অক্সিজেন । অন্যদিকে অবাত শ্বসন প্রান্তীয় হাইড্রোজেন গ্রাহক অক্সিজেনযুক্ত যৌগের অক্সিজেন।
৫। সবাত শ্বসনের উপজাত বস্তু CO2 ও H2O । অন্যদিকে উপজাত বস্তু CO2, H2O এবং অন্যান্য বস্তু।
৬। সবাত শ্বসন সম্পূর্ণ শক্তি অর্থাৎ 686 Kcal শক্তি উৎপন্ন হয় । অন্যদিকে অবাত শ্বসন আংশিক শক্তি অর্থাৎ 50 Kcal শক্তি উৎপন্ন হয়।
ভাইভার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পূর্ণরূপ
ICBN = International Code of Botanical Nomenclature.
ICZN = International Code of Zoological Nomenclature.
DNA = Deoxyribo Nucleic Acid.
RNA = Ribo Nucleic Acid.
ATP = Adenosine Triphosphate.
ADP = Adenosine Diphosphate.
NADPH = Nicotinamide Adenine Dinucleotide Phosphate.
GMO = Genetically Modified Organism.
GM = Genetically Modified.
PCR = Polymerase Chain Reaction.
HDL = High-density Lipoproteins.
LDL = Low-density Lipoproteins.
IRRI = International Rice Research Institute.
BRRI = Bangladesh Rice Research Institute.
FAD = Flavin Adenine Dinucleotide.
AIDS = Acquired Immune Deficiency Syndrome.
TO = Transgenic Organism.
ভাইভার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক নাম
১। মানুষ — Homo sapiens (হোমো স্যাপিয়েন্স)
২। সিংহ — Panthera leo (প্যান্থেরা লিও)
৩। রয়েল বেঙ্গল টাইগার — Panthera tigris (প্যান্থেরা টাইগ্রিস)
৪। মশা — Culex pipiens (কুলেক্স পিপিয়েন্স)
৫। আরশোলা — Periplaneta americana (পেরিপ্ল্যানেটা আমেরিকানা)
৬। মৌমাছি — Apis indica (এপিস ইন্ডিকা)
৭। প্রজাপতি — Pieris brassicae (পিরিস ব্রাসিকি)
৮। কুনোব্যাঙ — Bufo/Duttaphrynus melanostictus (বুফো/ডুট্টাফ্রিনাস মেলানোস্টিকটাস)
৯। গোখরা সাপ — Naja naja (নাজা নাজা)
১০। কুমির — Crocodylus niloticus (ক্রোকোডাইলাস নিলোটিকাস)
১১। কলেরা জীবাণু — Vibrio cholera (ভিব্রিও কোলেরা)
১২। ম্যালেরিয়া জীবাণু — Plasmodium vivax (প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স)
১৩। ইলিশ — Tenualosa ilisha (টেনুয়ালোসা ইলিশা)
১৪। রুই — Labeo rohita (লাবেও রোহিটা)
১৫। কাতলা — Catla catla (ক্যাটলা ক্যাটলা)
১৬। কই — Anabas testudineus (অ্যানাবাস টেস্টুডিনিয়াস)
১৭। টাকি — Channa punctatus (চান্না পাংকটাটাস)
১৮। বাগদা চিংড়ি — Penaeus monodon (পেনায়ুস মোনোডন)
১৯। গলদা চিংড়ি — Macrobrachium rosenbergii (ম্যাক্রোব্রাকিয়াম রোজেনবার্গি)
২০। চিংড়ি — Macrobrachium malcolmsonii (ম্যাক্রোব্রাকিয়াম ম্যালকমসনি)
২১। দোয়েল — Copsychus saularis (কপসাইকাস সাওলারিস)
২২। কবুতর — Columba livia (কোলুম্বা লিভিয়া)
২৩। ময়ূর — Pavo cristatus (প্যাভো ক্রিস্টাটাস)
২৪। শামুক — Pila globosa (পিলা গ্লোবোসা)
২৫। কেঁচো — Metaphira posthuma (মেটাফিরা পোস্টহুমা)
২৬। ফিতাকৃমি — Taenia solium (টেনিয়া সোলিয়াম)
২৭। গোলকৃমি — Ascaris lumbricoides (আসকারিস লুমব্রিকোইডিস)
২৮। কাঁকড়া — Carcinus maenas (কারসিনাস মেনাস)
২৯। হাঙর — Scoliodon laticaudus (স্কোলিওডন ল্যাটিকাউডাস)
৩০। ধান — Oryza sativa (ওরাইজা স্যাটিভা)
৩১। গম — Triticum aestivum (ট্রিটিকাম অ্যাসটিভাম)
৩২। ভুট্টা — Zea mays (জিয়া ম্যাইস)
৩৩। গোল আলু — Solanum tuberosum (সোলানাম টিউবেরোসাম)
৩৪। পিঁয়াজ — Allium cepa (অ্যালিয়াম সেপা)
৩৫। আদা — Zingiber officinale (জিঙ্গিবার অফিসিনালে)
৩৬। রসুন — Allium sativum (অ্যালিয়াম স্যাটিভাম)
৩৭। হলুদ — Curcuma domestica (কারকুমা ডমেস্টিকা)
৩৮। মসুর — Lens culinaris (লেন্স কুলিনারিস)
৩৯। সরিষা — Brassica napus (ব্রাসিকা ন্যাপাস)
৪০। ছোলা — Cicer arietinum (সিসার অ্যারিয়েটিনাম)
৪১। মটর — Pisum sativum (পিসাম স্যাটিভাম)
৪২। শিম — Lablab purpurius (লাবলাব পুরপুরিয়াস)
৪৩। খেসারী — Lathyrus sativus (ল্যাথাইরাস স্যাটিভাস)
৪৪। মুলা — Raphanus sativus (রাফানাস স্যাটিভাস)
৪৫। পুঁইশাক — Basella alba (বাসেলা অ্যালবা)
৪৬। শসা — Cucumis sativus (কিউকুমিস স্যাটিভাস)
৪৭। লাউ — Lagenaria vulgaris (লাজেনারিয়া ভলগারিস)
৪৮। বেগুন — Solanum melongena (সোলানাম মেলংগেনা)
৪৯। বাঁধাকপি — Brassica oleracea (ব্রাসিকা ওলিরাশিয়া)
৫০। টমেটো — Lycopersicon esculentum (লাইকোপার্সিকন এসকুলেন্টাম)
৫১। আম — Mangifera indica (ম্যানগিফেরা ইন্ডিকা)
৫২। কাঁঠাল — Artocarpus heterophyllus (আর্টোকার্পাস হেটেরোফিলাস)
৫৩। কলা — Musa sapientum (মুসা স্যাপিয়েন্টাম)
৫৪। লিচু — Litchi chinensis (লিচি চিনেনসিস)
৫৫। নারকেল — Cocos nucifera (কোকোস নুসিফেরা)
৫৬। আনারস — Ananas comosus (আনানাস কোমোসাস)
৫৭। পেয়ারা — Psidium guajava (পসিডিয়াম গুয়াজাভা)
৫৮। কুল/বরই — Zizyphus mauritiana (জিজাইফাস মৌরিশিয়ানা)
৫৯। পেঁপে — Carica papaya (কারিকা পাপাইয়া)
৬০। কফি — Coffea arabica (কফিয়া অ্যারাবিকা)
৬১। চা — Camellia sinensis (ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস)
৬২। তামাক — Nicotiana tabacum (নিকোটিয়ানা ট্যাবাকাম)
৬৩। পাট — Corchorus capsularis (করকোরাস ক্যাপসুলারিস)
৬৪। সেগুন — Tectona grandis (টেক্টোনা গ্র্যান্ডিস)
৬৫। শাল/গজারি — Shorea robusta (শোরিয়া রোবাস্টা)
৬৬। সুন্দরী — Heritiera fomes (হেরিটিয়েরা ফোমেস)
৬৭। নিম — Melia azadirachta (মেলিয়া আজাদিরাকটা)
৬৮। গাঁদা — Tagetes erecta (ট্যাগেটিস ইরেকটা)
৬৯। জবা — Hibiscus rosa-sinensis (হিবিস্কাস রোসা-সাইনেনসিস)
৭০। শাপলা — Nymphaea nouchali (নিমফিয়া নৌচালি)
৭১। রজনীগন্ধা — Polianthes tuberosa (পোলিয়ানথেস টিউবেরোসা)
৭২। গন্ধরাজ — Gardenia jasminoides (গার্ডেনিয়া জাসমিনোইডস)
রিয়েল ভাইভা – ০১
ভাইভা অভিজ্ঞতা
বিষয় : জীববিজ্ঞান
নিবন্ধন : ১৭ তম
তারিখ : ২৬/১১/২০২৩
বোর্ড : ৩
বোর্ডের সদস্য সংখ্যা : ৩
প্রথমেই নমস্কার দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি চেয়েছিলাম।
বোর্ড প্রধান অনুমতি দেয়ায় প্রবেশ করলাম।
ভিতরে গিয়ে আরেকবার নমস্কার দেয়ায় আমাকে মাঝের চেয়ারে বসতে বললেন বোর্ড প্রধান।
বাম দিকে থাকা একজন স্যার আমার সকল কাগজপত্র চাইলেন।
আমি হালকা ঘুরে তাকে কাগজপত্র জমা দিলাম।
বোর্ড প্রধান : পড়াশোনা কোথায় থেকে করেছেন?
আমি : কারমাইকেল কলেজ, রংপুর।
বোর্ড প্রধান : মাস্টার্স কমপ্লিট করেছেন? কোন সাবজেক্টে?
আমি : মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি স্যার। বোটানিতে অনার্স ও মাস্টার্স দুটোই।
বোর্ড প্রধান বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞ এক্সটার্নাল ম্যামের দিকে ইঙ্গিত করে প্রশ্ন করতে বললেন।
আমি হালকা ডানে ঘুরে ম্যামের দিকে চেয়েছিলাম।
ম্যাম : কোষ কি? কত প্রকার ও কি কি?
আমি : উত্তর করলাম।
ম্যাম : দেহকোষ ও জননকোষে ক্রোমোসোমের সংখ্যা কত?
আমি : উত্তর করলাম।
ম্যাম : আদিকোষ ও প্রকৃতকোষ চিনবেন কিভাবে?
আমি : উত্তর করলাম।
ম্যাম : ডাইকটিলিডনিস ও মনোকটিলিডনিস কি? বৈশিষ্ট্য বলেন।
আমি : উত্তর করলাম।
ম্যাম : জিনতত্ত্বের জনক কে?
আমি : উত্তর করলাম।
ম্যাম বোর্ড প্রধান স্যারের দিকে তাকালেন।
স্যার বললেন ম্যাম আরো প্রশ্ন করবেন এনাকে?
ম্যাম বললেন প্রয়োজন নেই, এনার বেসিক ভালো।
বোর্ড প্রধান স্যার আমাকে শুভকামনা জানালেন এবং আসতে বললেন।
আমি আবারও নমস্কার দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলাম।
সৌমিক দে
সহকারী শিক্ষক (জীববিজ্ঞান)
কিশোরপুর এন ইউ এ উচ্চ বিদ্যালয়,
উলিপুর, কুড়িগ্রাম।
রিয়েল ভাইভা – ০২
১৭ তম নিবন্ধন সহকারী শিক্ষক ( জীব বিজ্ঞান) ভাইবাতে আমাকে যা প্রশ্ন করা হয়েছিলো।
ভাইভা বোর্ডে ৩ জন ছিলেন।
প্রশ্ন১: আপনার নাম কি? নিজ জেলার নামকরণ সমন্ধে বলুন।
প্রশ্ন২: কোথায় পড়ালেখা করেছেন?
প্রশ্ন৩: সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র সমন্ধে বলুন।
প্রশ্ন৪: ভাইরাসকে অকোষীয় বলা হয় কেন?
প্রশ্ন৫: করোটিক স্নায়ু কী? এগুলোর নাম সিরিয়ালি বলুন।
প্রশ্ন৬:সাইটোকাইনেসিস কী? সাইটোপ্লাজম ও প্রোটোপ্লাজম সমন্ধে বলুন।
প্রশ্ন৭: অ্যানিলিডা পর্বের সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য বলুন।
ঠিক আছে আপনি এখন আসুন।
মো: ময়নুল ইসলাম
সহকারী শিক্ষক( জীববিজ্ঞান)